বর্ধমান, 14 সেপ্টেম্বর: থ্রেট কালচার নিয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ পড়ুয়াদের অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু, এর মধ্যেই এখান থেকে উধাও হল সিসিটিভি ফুটেজ। সেই ফুটেজেই অভীক দে'কে গভীর রাতে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাসে হাঁটাচলা করতে দেখা গিয়েছে। ফলে বিষয়টি নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ নীরব কেন, সেই প্রশ্ন তুলছেন চিকিৎসক পড়ুয়ারা।
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপালের ঘর থেকে গায়েব হয়েছে 11 অগস্টের গভীর রাতের সিসিটিভি ফুটেজ, যা নিয়ে সরব হয়েছে পড়ুয়ারা। অথচ সিসিটিভি ফুটেজের একটা অংশ ভাইরাল হয়েছে যেখানে দেখা যাচ্ছে (যদিও সেই ফুটেজের সত্যতা যাচাই করেনি ইটিভি ভারত) গভীর রাতে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাসে অভীক দে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তিনি পায়চারি করতে করতে কারও সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলছেন। ওই সময় তার পাশে কাউকে দেখা যায়নি।
জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবি, ওই রাতেই (11 অগস্ট) অভীক দে মেডিক্যাল কলেজের লেকচারার থিয়েটার খুলে বৈঠক করেন। সিসিটিভি ফুটেজে সেই সমস্ত কিছু থাকার কথা। অথচ, দেখা যাচ্ছে মেডিক্যাল কলেজের সিসিটিভি ফুটেজে 11 অগস্টের 'ফুটেজ মিসিং'। 10 অগস্ট কিংবা 12 অগস্টের ফুটেজ আছে। এই ফুটেজ কারা কীভাবে মুছে ফেললো, সেটাও তারা প্রিন্সিপালের কাছে জানতে চায়। আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের দাবি, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ অভীক দে'র মতো দুর্নীতিগ্রস্থদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। তাই 10 অগস্ট ও 12 অগস্টের সিসিটিভি ফুটেজ থাকলেও 11 অগস্ট রাতের ফুটেজ উধাও ! কারা কীভাবে সেই ফুটেজ মুছে ফেললো সেটা জানার জন্য পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাবেন তারা।
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আন্দোলকারী চিকিৎসক গৌরাঙ্গ প্রামাণিক বলেন, "বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের এলটি রুম অর্থাৎ লেকচারার থিয়েটার সন্ধে সাতটা নাগাদ বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা। অথচ 11 অগস্ট রাত এগারোটা নাগাদ সেই লেকচারার থিয়েটার খুলে তার অনুগামী ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে বৈঠক করেন অভীক দে। সেখানে অভীক দে স্বীকার করে নিয়ে বলেন, '9 অগস্ট রাতের বেলা আমি আরজি কর-এ উপস্থিত ছিলাম। তোদের কিছু প্রশ্ন করার থাকলে আমাকে কর ৷' এমনকী সেদিন তিনি দাবি করেন, 'সিসিটিভি ফুটেজ তিনি দেখেছেন ৷ তাই ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না দেখে সেটাকে ধর্ষণ বলা যাবে না।' সবচেয়ে বড় কথা, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে ভয়ের বাতাবরণ সৃষ্টি করে 'থ্রেট কালচার' চালানোর অভিযোগ আছে অভীক দে'র বিরুদ্ধে। তাই সকল ছাত্রছাত্রীরা তার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন।"
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল মৌসুমী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "সিসিটিভি ফুটেজ তো নিশ্চয়ই থাকবে। কিন্তু, স্টোরেজের একটা ক্যাপাসিটি আছে। ওরা যেটা চাইছে সেটা পাব কি না ৷ তবে এটুকু বলতে পারি, সিসিটিভি ফুটেজ আমরা স্টোর করে রেখে দিই। যখন কোনও এনকোয়ারির জন্য বা ইনভেস্টিগেশনের জন্য চাওয়া হবে, তখন অবশ্যই দেওয়া হবে। আমরাও সিসিটিভি ফুটেজ দেখছি না। ফলে কী ফুটেজ আছে বলতে পারছি না। যা আছে সবই রেখে দিয়েছি ।"