বেলঘরিয়া, 11 জুলাই: কয়েকদিন ধরেই আড়িয়াদহের 'ত্রাস' জয়ন্ত সিং ও তাঁর গ্যাংয়ের একের পর এক নারকীয় অত্যাচারের ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। এবার আরও এক ভাইরাল ভিডিয়োর সুত্র ধরে জয়ন্তর আরও এক সঙ্গী প্রসেন দাস ওরফে লাল্টুকে গ্রেফতার করল পুলিশ ৷ ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, চোর সন্দেহে এক কিশোরকে নগ্ন করে গোপনাঙ্গে সাঁড়াশি চেপে ধরার মতো নৃশংস ঘটনা ৷ (ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি ইটিভি ভারত)। গ্রেফতার করে ব্যারাকপুর মহকুমা আদালতে পেশ করা হলে বিচারক তাকে ৫ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।
প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, বেলঘরিয়ার বাসিন্দা এই লাল্টুর উপস্থিতি দেখা গিয়েছে ঘটনার সময়। তিনিই কিশোরের গোপনাঙ্গ সাঁড়াশি দিয়ে চেপে ধরে নৃশংস অত্যাচার চালিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। কিশোরের কাতর আবেদনেও সে কোনও কথাই শোনেনি৷ ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োয় তেমনটাই দেখা যাচ্ছে। এই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসে পুলিশ। ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলাও রুজু হয়। যদিও, তার পর থেকেই বেপাত্তা হয়ে যায় লাল্টু। অবশেষে বৃহস্পতিবার তাকে গ্রেফতার করে বেলঘরিয়া থানার পুলিশ। প্রসেন দাস ওরফে লাল্টুর গ্রেফতারির পর দুই ভিডিয়োকাণ্ডে জয়ন্ত ছাড়াও তার মোট সাত সঙ্গী গ্রেফতার হয়েছে।
এর আগে বুধবার ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার অলোক রাজোরিয়া সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, আড়িয়াদহ ভিডিয়োকাণ্ডে এখনও পর্যন্ত জয়ন্তর ছয় সঙ্গী গ্রেফতার হয়েছে। বাকিদের খোঁজেও তল্লাশি চলছে বলেও জানান তিনি। এছাড়াও ভিডিয়োকাণ্ডে নির্যাতিতদের খোঁজ চলছে বলে জানানো হয় পুলিশের তরফে ৷ ভিডিয়োগুলি পুরোনো হলেও ঘটনার তদন্ত করে অভিযুক্তদের শাস্তি দেওয়া হবে বলেও আশ্বস্ত করেন ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার।
যে ভিডিয়োর ভিত্তিতে জয়ন্তের ছয় সঙ্গীকে গ্রেফতার করা হয়, তাতে দেখা যায়, এক ব্যক্তিকে হাত-পা ধরে ঝুলিয়ে রেখে বেধড়ক মারধর করছে কয়েকজন। আর যন্ত্রণায় আর্তনাদ করছেন ওই ব্যক্তি। সোমবার রাতে ভিডিয়োটি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তা পোস্ট করে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, "কামারহাটির আড়িয়াদহ তালতলা ক্লাবে মদন-ঘনিষ্ঠ জয়ন্ত সিংহ কীভাবে নিরস্ত্র মহিলাকে মারছেন, দেখা যাচ্ছে ৷ যে রাজ্যের সরকার নারীদের সুরক্ষা নিয়ে গর্ব করে, সেখানে এই বর্বরতা মানবতার কলঙ্ক। এর দ্রুত তদন্ত এবং বিচার চাই।" ভিডিয়ো প্রসঙ্গে বিজেপির পালটা পোস্ট করে তৃণমূল।
পুলিশও জানায়, অত্যাচারের ওই ভিডিয়োটি 2021 সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চের। চোরসন্দেহে এক দম্পতিকে তুলে আনা হয় তালতলা স্পোর্টিং ক্লাবে ৷ এরপর ক্লাবেই চলে নারকীয় অত্যাচার। জয়ন্তর শাগরেদের পিস্তল চালানোর প্রশিক্ষণের যে দ্বিতীয় ভিডিয়োটি ভাইরাল হয়েছে, সেই ঘটনায় অভিযুক্ত তন্ময় ধর ওরফে বাপ্পার অবশ্য এখনও হদিশ পাওয়া যায়নি। তার খোঁজ চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে, ভাইরাল হওয়া তৃতীয় ভিডিয়োর অভিযুক্ত প্রসেন দাস ওরফে লাল্টুকে চিহ্নিত করার পর তাঁকে গ্রেফতার করেছে বেলঘরিয়া থানার পুলিশ। কিশোরকে যৌন নির্যাতনের তৃতীয় ভিডিয়োটি কবেকার, সেবিষয়ে এখনও স্পষ্টভাবে কিছু জানা যায়নি।