কলকাতা, 9 এপ্রিল: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এবার শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল ৷ সিনিয়র ছাত্রের বিরুদ্ধে মেসে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুললেন তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রী ৷ 2022 সালের নভেম্বর মাসের ঘটনার প্রেক্ষিতে গত 4 এপ্রিল বাংলা বিভাগের প্রধানের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রী।
তিনি অভিযোগ করেন, একদিন রাতে বাড়ি ফিরতে না-পারার ফলে তিনি বাংলা বিভাগের এক সহপাঠীর সঙ্গে এডুকেশন বিভাগের পাঠরত এক সিনিয়র ছাত্রের মেসে গিয়েছিলেন। সেখানেই তিনজনে মিলে মদ্যপান করেন। তারপরেই নেশাগ্রস্ত হয়ে সিনিয়র ছাত্র ওই ছাত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে যুক্ত হতে চায়। এমনকী অভিযোগকারিণীর অভিযোগ, সেই সময় বাংলা বিভাগের ওই সহপাঠী তাঁকে সাহায্য না-করে ওই সিনিয়র ছাত্রকে সাহায্য করেন। ঘরের আলো নিভিয়ে সে বাইরে চলে যায়। এমনকী ওই সময় দর্শন বিভাগের ছাত্রীর পিরিয়ডস চলছিল। কিন্তু তাতেও রেয়াত করা হয়নি বলেই মেয়েটির অভিযোগ ৷ ইটিভি ভারতের তরফে লালবাজারে এনিয়ে যোগাযোগ করা হলে কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি ৷
পরবর্তীতে মেয়েটির আরও অভিযোগ রয়েছে, 2023 সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে সেপ্টেম্বর মাসের 29 তারিখ পর্যন্ত বাংলা বিভাগের স্নাতকোত্তর প্রথম বর্ষের এক ছাত্রের সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক হয়। সেই সম্পর্কের দরুণ ওই ব্যক্তি একাধিকবার তাঁকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন বলেই অভিযোগ। এমনকী তাঁকে গর্ভনিরোধক ওষুধ খেতেও বাধ্য করা হয় বলেই অভিযোগ তোলেন মেয়েটি। এই সম্পূর্ণ বিষয়টি মেয়েটি বাংলা এবং দর্শন বিভাগের প্রধান অধ্যাপককে চিঠি দিয়ে জানান।
তাঁর সঙ্গে সোশাল মিডিয়ায়ও বিষয়টি তুলে ধরে। মেয়েটির অভিযোগ, যাদবপুর থানায় এবিষয়ে একাধিকবার অভিযোগ জানাতে গেলে সেই নিতে অস্বীকার করে পুলিশ বলেই সোশাল মিডিয়ায় দাবি মেয়েটির। এবিষয়ে গতকাল অর্থাৎ সোমবার একটি জিবি ডাকা হয়েছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৷ তবে মেয়েটির ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রের খবর, সেই জিবিতে অভিযোগকারী উপস্থিত থাকতে পারেনি। কারণ তাঁর শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। তবে এই জিবির পর যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাঁদের অধিকাংশই বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএফআই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত বলেই জানা যাচ্ছে।
এমনকী বেশ কিছু সাংগঠনিক পদেও রয়েছেন তাঁরা। অভিযোগটি খতিয়ে দেখে যাবতীয় সাংগঠনিক পদে থাকা অভিযুক্তদের সাসপেন্ড করেছে দল ৷ এমনকী এই বিষয়ে যাতে সঠিক তদন্ত হয় সেই দাবিও তুলেছে এসএফআই। এই ঘটনার প্রেক্ষিতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান জয়দীব ঘোষ জানিয়েছেন, গত শুক্রবার প্রায় 40 মিনিট ধরে ওই ছাত্রীর সঙ্গে কথা হয় তাঁর। তিনি যাবতীয় অভিযোগ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছেন। কর্তৃপক্ষ সমস্ত অভিযোগ পত্র খতিয়ে দেখে তারা অভ্যন্তরীণ অভিযোগ নিরসন কমিটি বা আইসিসির কাছে ফরোয়ার্ড করবে।
আরও পড়ুন: