পেট্রাপোল, 6 অগস্ট: জীবিত পুড়িয়ে মারার ঘটনা সামনে এল উত্তপ্ত বাংলাদেশে ৷ যশোরের একটি হোটেলে অগ্নিসংযোগ করে আন্দোলনকারীরা ৷ আর সেই আগুনেই অনেকে জীবিত দগ্ধ হয়ে মারা গিয়েছেন ৷ সেখান থেকেই বেঁচে ফিরেছেন এক ভারতীয় ৷ প্রাণ বাঁচাতে চারতলা থেকে ঝাঁপ দিয়েছিলেন ৷ দু’পা ভাঙলেও পিতৃদত্ত প্রাণটা রয়েছে ৷ তাতেই খুশি শহিদ আলি ৷
শখের বসে ব্যবসায়ী দাদার সঙ্গে ঘুরতে গেছিলেন বাংলাদেশ । অশান্ত দেশ থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে দেশে ফিরলেন ভারতীয় যুবক । প্রাণ বাঁচাতে হোটেলের চারতলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে পড়ে তাঁর দু’পা ভেঙে গিয়েছে । মঙ্গলবার উত্তর 24 পরগনার পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে ভরতে ফিরে আসেন তাঁরা ৷
অসমের বাসিন্দা রবিউল ইসলাম । বাংলাদেশ রফতানির ব্যবসা করেন তিনি । ব্যবসার কারণে মাঝেমধ্যে বাংলাদেশে যেতে হয় । এবার বাংলাদেশে ভাইকে সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছিলেন । উঠেছিলেন যশোরের একটি বহুতল হোটেলে । বাংলাদেশে গিয়ে এমন অবস্থায় পড়তে হবে ভাবতেও পারেননি তাঁরা । প্রাণ বাঁচাতে চারতলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে দু’পা ভেঙে অ্যাম্বুলেন্সে দেশে ফিরে শোনালেন সেই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা ৷
পেট্রাপোল বন্দরে শহিদ আলি এবং রবিউল ইসলাম জানিয়েছেন, সোমবার দুপুর দু’টোর সময় যশোরে যে হোটেলে তাঁরা ছিলেন, সেই হোটেলের 11 তলা থেকে নেমে তৃতীয় তলায় দুপুরের আহার সেরেছিলেন । খাওয়া সেরে রুমে ফিরে যান । তখনও পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগের পরেই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে বাংলাদেশ । তাঁরা বলেন, ‘‘হঠাৎই বাইরে চিৎকার-চেঁচামেচির আওয়াজ শুনে আমরা জানলা খুলে দেখতে পাই, আন্দোলনকারীরা ঘিরে ফেলেছে পুরো হোটেল । তড়িঘড়ি ব্যাগ গুটিয়ে সিঁড়ি দিয়ে চতুর্থ তলা পর্যন্ত আসতেই বুঝতে পারি, হোটেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে । কোনও উপায় খুঁজে না-পেয়ে প্রাণ বাঁচাতে চারতলা থেকে পাশের একটি বিল্ডিংয়ে ঝাঁপ দিই । সেখান থেকে ফের নীচে ঝাঁপ দিই প্রাণে বাঁচবার জন্য ।’’
প্রাণ বাঁচাতে গিয়ে ঝাঁপ দেওয়ার সময় দু-পা ভেঙ্গে যায় শহীদ আলীর ৷ গুরুতর আঘাত লেগেছে পিঠেও । দাদা রবিউল ইসলালের ঘাড়েও রয়েছে আগুনে পোড়ার ক্ষত । মঙ্গলবার মেডিকেল ইমার্জেন্সিতে অ্যাম্বুলেন্সে করে দেশে ফেরেন শহীদ আলী এবং তাঁর দাদা রবিউল ইসলাম । দেশে ফিরে এই ভয়াবহ ঘটনার কথা বর্ণনা করতে গিয়ে চোখে জল চলে আসে তাঁদের ৷ চোখে, মুখে এখনও আতঙ্কের ছাপ। রবিউল বলেন, "হোটেলে 13 জন মারা গিয়েছেন । কোনও রকমে আমাদের জানটা বেঁচে গিয়েছে ।"