কলকাতা, 21 অক্টোবর: তৃণমূল নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে মাওবাদীদের তুলনা করায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানাল আইএমএ বেঙ্গল ৷ তাদের দাবি, ওই মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে দেবাংশুকে ৷ অপরদিকে, কুণাল ঘোষ ফের জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের বিরুদ্ধে যে মন্তব্য করেছেন, তার কড়া জবাব দিয়েছেন আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসক কিঞ্জল নন্দ ৷
জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনকে লাগাতার নিশানা করতে দেখা গিয়েছে কুণাল ঘোষ-সহ শাসকদলের একাধিক নেতাকে ৷ সেই ধারা বজায় রেখে রবিবার আরও এক ধাপ এগিয়ে তৃণমূলের আইটি সেলের প্রধান দেবাংশু ভট্টাচার্য জুনিয়র চিকিৎসকদের মাওবাদীদের সঙ্গে তুলনা করেন ৷
তিনি বলেন, "জুনিয়র ডাক্তাররা যে হুমকি দিয়েছেন তার অর্থ কী ? এর অর্থ এই যে, আমাদের আবদার না-মানা হলে আমরা মানুষ মারা শুরু করব । কারণ চিকিৎসা বন্ধ রাখা মানে তো মানুষ মারা । তাহলে মানুষ মারাকে তাঁরা প্রতিবাদের অস্ত্র হিসেবে গ্রহণ করেন, সেক্ষেত্রে জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে তো মাওবাদীদের আমি কোনও তফাৎ দেখতে পাই না । মাওবাদীরাও বলে আমরা মানুষ মারি প্রতিবাদের জন্য । এঁরাও বলছেন, আমরা মঙ্গলবার থেকে চিকিৎসা বন্ধ করে মানুষ মারা শুরু করব । আমার কথা হচ্ছে চিকিৎসা একটা মহান পেশা । তাহলে ডাক্তারদের বুঝতে হবে তাঁরা মানুষের প্রাণের বিনিময়ে কাউকে হুমকি দিতে পারেন না ।"
দেবাংশুর এই মন্তব্যের পর থেকেই বিভিন্ন মহলে উঠেছে নিন্দার ঝড় ৷ দেবাংশুর মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের বাংলা শাখা ৷ আইএমএ বেঙ্গলের প্রেস বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনকে মাওবাদীর সঙ্গে তুলনা করেছেন দেবাংশু ভট্টাচার্য । এর জন্য তাঁকে ক্ষমা চাইতে হবে । সমাজকে যে চিকিৎসকরা রক্ষা করেন, যাঁরা মানুষের প্রাণ বাঁচান, তাঁদের সঙ্গে হত্যাকারীদের তুলনা করার তীব্র নিন্দা করেছে আইএমএ বেঙ্গল ।
শুধুমাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্যই নন, আবারও জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনকে সমাজমাধ্যমে কটাক্ষ করেছেন কুণাল ঘোষ । আজ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসবেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা । তবে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী যদি আজকের মধ্যে কোনও সদর্থক প্রতিক্রিয়া না-আসে প্রশাসনের তরফে, তাহলে মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন চিকিৎসকরা । এই কর্মসূচিকে ঘিরে ডাক্তারদের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে কুণাল তাঁর সোশাল মিডিয়ার পাতায় লেখেন, "যদি এই স্বাস্থ্য ধর্মঘটের জন্য একজন রোগীরও মৃত্যু হয়, তাহলে থানায় এফআইআর করা হবে চিকিৎসক দেবাশিস হালদার এবং চিকিৎসক অনিকেত মাহাতোর নামে ।"
যদিও তাঁর এই মন্তব্যের পালটা জবাব দিয়ে জুনিয়র চিকিৎসক কিঞ্জল নন্দ সোশাল মিডিয়া পোস্টে লিখেছেন, "আন্দোলন কেউ যেচে পড়ে করতে আসেনি । বরং দু'বার মেল করা সত্ত্বেও সরকার দেখেনি । ডাক্তারদের অনেক কাজ থাকে । এটা ডাক্তার না-হলে বোঝা সম্ভব নয় । ব্যক্তি আক্রমণ স্বভাব হয়ে গিয়েছে ।"