কলকাতা, 18 মার্চ: গত শুক্রবার শহর কলকাতার তিনটি মেট্রো রুট চালু হয়েছে । তবে এই তিনটি রুটের মধ্যে নিঃসন্দেহে মেট্রোর যে অংশটি হুগলি নদীর নিচ দিয়ে গিয়েছে, সেই অংশটিকে ঘিরেই যাত্রী থেকে শহরবাসীর উন্মাদনা একেবারে তুঙ্গে । তবে নবনির্মিত এই অংশে কোথাও নেই যাত্রীদের জন্য বসার ব্যবস্থা । যদিও মেট্রোর পক্ষ থেকে বসার নিয়ম নেই বলেই জানানো হয়েছে ।
নবনির্বিত এই অংশে দিনের ব্যস্ত সময়ে প্রতিদিন 12 মিনিট অন্তর মেট্রো পাওয়া যায় এবং যখন যাত্রী ভিড় কম থাকে তখন প্রতি 15 মিনিট অন্তর পাওয়া যায় মেট্রো । এই ক্ষেত্রে কোনও বয়স্ক ছাত্রী কিংবা কোনও অসুস্থ যাত্রী বা কোন অন্তঃসত্ত্বা যদি মেট্রোয় যাতায়াত করেন, তাহলে তাঁকে 12 থেকে 15 মিনিট দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে । যদি কোনও যাত্রী হঠাৎ করে অসুস্থ বোধ করেন সেক্ষেত্রে তিনি যে কোথাও বসে একটু জিরিয়ে নেবেন, সেই সুযোগ পাচ্ছেন না ।
অথচ ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রোর সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত সবকটি মেট্রো স্টেশনেই রয়েছে বসার ব্যবস্থা । স্বাভাবিক ভাবেই নদীর নিচ দিয়ে মেট্রো রেল গেলে অনুভূতিটা ঠিক কেমন হয় তা একবার চাক্ষুস করতে প্রথমদিন থেকেই মানুষের ঢল নেমেছে এসপ্ল্যানেড ও হাওড়া ময়দান মেট্রো স্টেশনে । শুধুমাত্র একবার চোখের দেখা দেখবেন বলে টিকিট কেটে মেট্রোয় চড়তে যাত্রীরা আসছেন শহরের দূরদূরান্ত থেকে ।
গত 15 মার্চ বাণিজ্যিক পরিষেবা চালু হয় গ্রিন লাইনের এসপ্ল্যানেড থেকে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত রুটে, পার্পেল লাইনের জোকা থেকে মাঝেরহাট এবং অরেঞ্জ লাইনে কবি সুভাষ থেকে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় অংশ । এই তিনটি রুটের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চর্চিত এবং আকর্ষণীয় অংশ হল নদীর নিচের অংশ । কারণ দেশের মধ্যে নদীর নিচ দিয়ে মেট্রো পরিষেবা দেশের মধ্যে বাংলাতেই প্রথম ।
মেট্রোরেলের দেওয়া তথ্য অনুসারে, গ্রিন লাইনের হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত দ্বিতীয় দিনে অর্থাৎ 16 মার্চ যাত্রী ভিড় পৌঁছে যায় প্রায় 77 হাজারের কাছাকাছি । এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিড় হয়েছিল হাওড়া মেট্রো স্টেশনে, যাত্রী সংখ্যা পৌঁছয় 24,724-এ । তারপর ভিড় হয় হাওড়া ময়দান মেট্রো স্টেশনে, 24,058 যাত্রী হয় সেখানে । মহাকরণ ও এসপ্ল্যানেড মেট্রো স্টেশনে যথাক্রমে 8,977 ও 9,481 সংখক যাত্রী ভিড় হয় ।যাত্রীদের সুবিধার জন্য পর্যাপ্ত টিকিট কাউন্টার খোলা রাখা হচ্ছে এবং স্মার্ট কার্ড, টোকেন, কাগজ ভিত্তিক কিউআর বসানো টিকিট পাওয়া যাচ্ছে ।
তবে যাত্রীদের মধ্যে একটি অভিযোগ উঠেছে, তা হল ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রোর নবনির্মিত এই চারটি স্টেশনে যাত্রীদের বসার কোনও সুবিধা নেই । কারণ অনেক সময় বেশ কিছুটা হেঁটে এসে যাত্রীদের মেট্রো নিতে হচ্ছে, কিংবা ট্রেনে সফর করে এসেও অনেক যাত্রী মেট্রোর উঠবেন বলে টিকিট কাটছেন । তাই অপেক্ষা করার সময় তাঁদের বসার আসন থাকছে না । এই বিষয়ে যদিও কলকাতা মেট্রোরেল কর্পোরেশন লিমিটের (কেএমআরসিএল) এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ভিকে শ্রীবাস্তব জানান যে, নিয়ম মাফিক কোনও মেট্রো স্টেশনেই যাত্রীদের জন্য বসার জায়গা থাকে না । টিকিট কেটে তাঁরা মেট্রোর জন্য অপেক্ষা করেন, বসার কোনও সুবিধা থাকে না প্ল্যাটফর্মে ।
আরও পড়ুন: