কলকাতা, 3 অক্টোবর: কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে কালো পতাকা দেখানো হল রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে ৷ তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের সময়ই তাঁকে কালো পতাকা দেখিয়ে 'গো ব্যাক' স্লোগান দিতে শুরু করেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ছাত্ররা ৷ ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য শান্তা দত্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের সময়ও বিক্ষোভ দেখানো হয় ৷ পুলিশ ছাত্রদের আটকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে দু'পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয় । তখন গেটের সামনেই বসে পড়েন বিক্ষোভরত ছাত্ররা ৷
বৃহস্পতিবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট প্রদান অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসেন । সেই সার্টিফিকেট প্রদান অনুষ্ঠান অবৈধ বলে দাবি করেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমর্থকরা । তাঁদের অভিযোগ, পূর্ণ মেয়াদের উপাচার্য না-থাকায় থাকায় যেহেতু বার্ষিক সমাবর্তন অনুষ্ঠান হতে পারছে না, তাই ঘুরপথে সার্টিফিকেট প্রদান অনুষ্ঠান করা হচ্ছে ৷ সেই কারণে আজ তাঁরা রাজ্যপালকে কালো পতাকা দেখিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন বলে জানিয়েছেন ৷
এই বিক্ষোভ প্রসঙ্গে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বলেন, "যাঁরা কালো পতাকা দেখিয়েছেন তাঁদের স্বাগত ৷ গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে যে কেউ আন্দোলন প্রতিবাদ করতেই পারেন ।"
উল্লেখ্য, 2013 সালের পর থেকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শাখায় গবেষণাকারীদের কোনও প্রকার সার্টিফিকেট দেওয়া হয়নি । এই জটিলতা থেকে মুক্তি পেতেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের বৈঠক দেখে 2013 থেকে 2017 সাল পর্যন্ত যাঁদের সার্টিফিকেট আটকে ছিল, সেই সমস্ত ডিগ্রিধারীদের সার্টিফিকেট প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয় । আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টিনারি অডিটরিয়ামে 253 জনকে সার্টিফিকেট প্রদান করা হয় । রাজ্যপালের উপস্থিতিতে বিভিন্ন বিভাগের ডিনের হাতে আলাদা আলাদা করে সেই সার্টিফিকেট তুলে দেওয়া হয় ৷ পরবর্তীতে ডিনদের থেকেই ডিগ্রিধারীরা সার্টিফিকেট গ্রহণ করবে ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য শান্তা দত্ত বলেন, "যাঁরা কালো পতাকা দেখিয়েছেন, তাঁরা কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া নন । তাঁরা বহিরাগত । নিজেদের অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতেই তাঁরা এ সমস্ত করছেন । কিন্তু, এই পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয়কে কালিমালিপ্ত করা যাবে না । এর আগেও, আমাদেরকে দীর্ঘক্ষণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে আটকে রাখা হয় ৷ আমাকে গাড়িতে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রাখা হয় । পরবর্তীতে আমরা কলকাতা হাইকোর্টের অনুমতি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সমস্ত বহিরাগতদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করি ৷ কিন্তু, দুঃখের বিষয়, আমাদের যখন আটকে রাখা হয়েছিল, তখন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী তাঁদের সমর্থন করেছিলেন ।"