সামশেরগঞ্জ, 10 জুলাই: বর্ষা পড়তেই ফের ভাঙন আতঙ্কে কাঁপছে সামশেরগঞ্জ । বৃষ্টির জেরে ধস নামল সামশেরগঞ্জের কাকুরিয়া থেকে প্রতাপগঞ্জের ভেতর দিয়ে ধূলিয়ান যাওয়ার মূল রাস্তায়। এর ফলে যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অটো, টোটো ও বাইক সাইকেল আরোহীদের সাত কিমি ঘুর পথে যেতে হচ্ছে। গঙ্গার আগ্রাসন চিন্তায় ফেলেছে নদী তীরবর্তী স্থানীয় বাসিন্দাদের । যে কোনও মুহূর্তেই গঙ্গা ভাঙনে ফের তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে । ভাঙন আতঙ্কে তাই ঘুম ছুটেছে গ্রামবাসীদের।
গঙ্গাপাড়ের স্থানীয় বাসিন্দা ইয়াসিন মণ্ডল বলেন, "ভীষণ আতঙ্কে রয়েছি আমরা ৷ ভয়ে ঘুম হচ্ছে না ৷ নদীর জল বেড়েই চলেছে ৷ তিন বছর ধরে ধস নামছে ৷ ধস নামলে কেবল বালির বস্তা ফেলা হয় ৷ তারপর যেই কে সেই ৷ কোনও সুরাহা হচ্ছে না ৷ নদীর পারেই আমার বাড়ি ৷ যে কোনও মুহূর্তে বাড়ি নদীর কবলে চলে যেতে পারে ৷ কিন্তু অন্য কোথাও যাওয়ার সামর্থও নেই আমার ৷"
বিগত কয়েক বছর ধরে মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জের বিভিন্ন প্রান্তে ভয়াবহ গঙ্গা ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন প্রতিরোধে সেচ দফতরের একাধিক কর্তা ও বিভাগীয় মন্ত্রী এলাকা পরিদর্শন করে গেলেও কোন স্থায়ী সমাধান হয়নি। উপরন্তু বর্ষার আগে বালির বস্তা দিয়ে পাড় বাঁধানো শুরু হলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় মানুষ।
তাঁদের দাবি, পাথর দিয়ে স্থায়ী এবং শক্তপোক্ত করেই গঙ্গাপাড় বাঁধানো হোক। তারমধ্যেই ফের সামশেরগঞ্জের প্রতাপগঞ্জে মূল রাস্তাটিতে ধস নেমে বিপজ্জনকভাবে ফাটল দেখা দিয়েছে। নদীপাড়ের উপর দিয়ে ব্যস্ততম রাস্তায় ধসের ফলে টোটো থেকে শুরু করে বাইক কিংবা সাইকেল কোন কিছুই যাতায়াত করতে পারছে না । ফলে প্রায় সাত কিলোমিটার ঘুরে প্রতাপগঞ্জ থেকে ধূলিয়ান যেতে হচ্ছে এলাকাবাসীদের ।
অবিলম্বে বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ । ভাঙন রোধে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন আমজনতা। গত তিন বছর সামশেরগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকা ভাঙন কবলিত। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে। কয়েকশো বিঘা চাষের জমি নদী বক্ষে তলিয়ে গিয়েছে। গঙ্গা ভাঙনে দুর্গত বহু মানুষ এখনও বাড়ি করে উঠতে পারেননি। তাঁরা অস্থায়ীভাবে আম বাগান বা অন্য কোথাও রয়েছে ।