কলকাতা, 15 মার্চ: নীল রঙের আলো ছুটতে না ছুটতে মেট্রোয় শোরগোল ৷ উচ্ছ্বসিত যাত্রীরা সমস্বরে চেঁচিয়ে উঠল ৷ এই সেই পথ, যার উপর দিয়ে বইছে হুগলি তথা গঙ্গা নদী, নীচে দৌড়চ্ছে মেট্রো ৷ শুক্রবার সকাল 7টায় এসপ্ল্যানেড-হাওড়া ময়দান রুটে মেট্রো পরিষেবা শুরু হয় ৷
দেশের মধ্যে কলকাতায় নদীর নীচে মেট্রো রুট এই প্রথম ৷ যাত্রাপথে নদীর সুড়ঙ্গের অংশটি নীল আলো দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে ৷ মাত্র 45-46 সেকেন্ডের পথ, কিন্তু তার অনুভূতি চূড়ান্ত রোমহর্ষক ৷ আর তাই ভোরের আলো ফোটার আগে থাকতে লাইন পড়েছিল এসপ্ল্যানেড আর হাওড়া ময়দান স্টেশনে ৷ কে হবেন প্রথম যাত্রী ?
এই এসপ্ল্যানেড-হাওড়া ময়দান রুটে মেট্রো যাত্রার প্রথম যাত্রী রাজীব রায় ৷ এর আগে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো অংশে সল্টলেক সেক্টর V থেকে সল্টলেক স্টেডিয়াম পর্যন্ত বাণিজ্যিক পরিষেবা চালুর দিনেও প্রথম যাত্রী ছিলেন রাজীব ৷
এবার জ্বর গায়ে রাত আড়াইটে নাগাদ চলে এসেছেন তিনি ৷ এদিন মেট্রোয় সফররত রাজীব বলেন, "গঙ্গার তলা দিয়ে যাচ্ছি ৷ ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো আমি প্রথম যাত্রী ছিলাম ৷ তাই পরে যখন শিয়ালদা পর্যন্ত পরিষেবা চালু হয়, তখন আমাকে দিয়েই উদ্বোধন করানো হয়েছিল ৷" এদিন আমজনতার সঙ্গে মেট্রো সফরে হাজির ছিলেন কলকাতা মেট্রোর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র ৷ তিনি বলেন, "আমারও খুব ভালো লাগছে ৷ সারা দেশের মানুষ এখন শুধু কলকাতার রসগোল্লার জন্য আসবে না, গঙ্গার নীচে ট্রেনে চাপার জন্যও আসবে ৷"
41 বছর আগে দেশে প্রথম মেট্রো পরিষেবা শুরু হয় কলকাতায় ৷ সেবারও ইতিহাস গড়েছিল তিলোত্তমা ৷ 15 মার্চ, 2024 তারিখটিও কলকাতা তথা কলকাতা মেট্রোর ইতিহাসে আরেকটি স্মরণীয় দিন হয়ে রইল ৷ এদিন কলকাতার তিনটি রুট- গ্রিন লাইনে হাওড়া ময়দান-এসপ্ল্যানেড, পার্পল লাইনে জোকা-মাঝেরহাট, অরেঞ্জ লাইনে কবি সুভাষ-হেমন্ত মুখোপাধ্যায় মেট্রো পরিষেবা শুরু হল ৷ তিনটি রুটের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ এসপ্ল্যানেড-হাওড়া ময়দানের হুগলি নদীর নীচে সুড়ঙ্গের অংশটি ৷ 6 মার্চ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই রুটগুলির উদ্বোধন করেন ৷ এই রুটগুলিতে দিনে ব্যস্ত সময়ে 7 থেকে 12 মিনিট অন্তর মেট্রো পাওয়া যাবে ৷ একটি টিকিটের মাধ্যমে এই তিন লাইনের মধ্যে ইন্টারচেঞ্জ করে সফর করা যাবে ৷ তাই একটি লাইন থেকে অন্য লাইনে সফর করতে হলে আলাদা আলাদা টিকিট কাটার প্রয়োজন নেই ৷
আরও পড়ুন: