কলকাতা, 23 সেপ্টেম্বর: নাইট ডিউটি করতে গিয়েই আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক পড়ুয়াকে ধর্ষণের শিকার হতে হয় এবং খুন হতে হয় বলে অভিযোগ ৷ তার পর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে সরব হয়ে আন্দোলনে নেমেছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা ৷ সেই আন্দোলন শেষে গত শনিবার থেকে ফের কাজে যোগ দিয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা ৷ তার পরও আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে রাতে কাজ করতে ভয় পাচ্ছেন মহিলা চিকিৎসকরা ৷ তাই অনেক বিভাগেই রাতে কাজ করছেন না মহিলা চিকিৎসকরা ৷
সেই বিভাগগুলির মধ্যে অন্যতম ইএনটি৷ ওই বিভাগের জুনিয়র চিকিৎসক শ্রেয়া সাউ বলেন, "আমরা জরুরি পরিষেবা চালু করেছি । কিন্তু রাতে ডিউটি করব, সেই বিশ্বাস এখনও আসছে না । কারণ, আসল অপরাধীরা খোলা আকাশের তলায় ঘুরে বেড়াচ্ছে । তাই আমরা কিছু বিভাগে রাতে ডিউটি মেয়েদের ডিউটি রাখা হচ্ছে না । লোকবল দেখে সেই রোস্টার তৈরি করা হয়েছে ।"
উল্লেখ্য, পাঁচদফা দাবি নিয়ে আন্দোলনে নেমেছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা ৷ সেই দাবিগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল নিরাপত্তার বিষয়টি ৷ সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে এই বিষয়টি নিয়ে টানাপোড়েন হয়েছে ৷ শীর্ষ আদালত চিকিৎসকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার বিষয় নিয়ে রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছে ৷ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে রাজ্য সরকারের বৈঠকেও এই বিষয়টি বারবার উঠেছে ৷
পরে রাজ্যের তরফে নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে এই নিয়ে ৷ নিরাপত্তা জোরদার করতে কী কী করা হবে, সেই বিষয়টিও জানানো হয়েছে ৷ তাছাড়া সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে আরজি করের নিরাপত্তার দায়িত্বে এখন সিআইএসএফ ৷ এই পরিস্থিতিতে 42 দিনের আন্দোলনে ইতি টেনে ডাক্তাররা কাজে যোগ দিয়েছেন ৷ কিন্তু পুরোপুরি দায়িত্ব নিয়ে কাজ করার আগে তাঁরা নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে চাইছেন ৷ ওই চিকিৎসক বলেন, "যতক্ষণ পর্যন্ত না আমরা নিরাপত্তার দিকে সুনিশ্চিত হতে পারছি রাতে কীভাবে কাজ করব ?"
তিনি আরও বলেন, "বারবার ফোন করছে বাড়ি থেকে । এমনকি আমাদের সঙ্গে একজন থাকবেন বলেও মাঝে মধ্যে বলছেন । আসলে আমরা কাউকে ভরসা করতে পারছি না এখন । কর্তৃপক্ষকে তো একদমই ভরসা করা যাচ্ছে না ।"
তবে অন্য কিছু বিভাগে মহিলারা ডিউটি করছেন । যেমন সার্জারি ও প্রসূতি বিভাগে ইতিমধ্যেই রাতে ডিউটি করেছেন মহিলা চিকিৎসকেরা । তবে ডিউটি করলেও তাঁদের মুখেও শোনা যাচ্ছে আতঙ্কের সুর ।