মাজদিয়া(নদিয়া), 18 মার্চ: স্বল্প সময়ে হবে চাষ ৷ ফলন দেবে বেশি ৷ থাইল্যান্ডের পিংক কাঁঠালের চাষ করে বৃহৎ আয়ের দিশা দেখাচ্ছেন নদিয়া জেলার মাজদিয়ার এক চাষি ৷ পিংক শুনে ভাবছেন হয়তো এই কাঁঠালের রঙ হবে গোলাপি ৷ তেমনটা নয়, পিংক কাঁঠালের রং সবুজই ৷ তবে এর গুণমান অন্য জায়গায় ৷ যেখানে একটি সাধারণ কাঁঠাল গাছের বড় হয়ে ফলন দিতে সময় লাগে প্রায় পাঁচ বছর ৷ সেখানে তিন বছরেই পিংক কাঁঠাল গাছে মিলছে ফল ৷ আর এই কাঁঠাল গাছগুলোর উচ্চতাও খুব বেশি নয় ৷ ফলে গাছ থেকে কাঁঠাল পেড়ে নেওয়া যাবে সহজেই ৷
চাষি প্রশান্ত বিশ্বাসের কথায়, "আমি বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় গিয়ে প্রথম এই কাঁঠাল চাষ দেখেছিলাম। তারপর নিজেও এই চাষ করার আগ্রহ প্রকাশ করি । ওই ব্যক্তির কাছ থেকেই কুড়িখানা চারা আমি নিয়ে এসেছিলাম । পনেরোটা চারা থেকে ঠিকঠাক ফলন দেওয়া শুরু হয়েছিল। আমি প্রায় দুই বিঘা জমিতে এই কাঁঠাল গাছ চাষ করি। এক এক বিঘাতে 80 খানা চারা লাগানো যাবে। অন্যান্য চাষের থেকে এই চাষ অনেক লাভজনক ।"
ভারতবর্ষ কৃষি প্রধান দেশ ৷ তবে বর্তমানে সার, কীটনাশক এবং অন্যান্য কৃষিকাজে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশের দাম খুব বেশি উর্দ্ধগামী এবং আবহাওয়া বিরূপ হওয়ায় চাষিরা ফসলের সঠিক ফলন ও পর্যাপ্ত দাম পাচ্ছেন না। এমন অবস্থায় স্বল্প খরচে কম সময়ে থাইল্যান্ডের পিংক কাঁঠাল চাষ করে অধিক ফলন ও অধিক লাভের মুখ দেখছেন চাষিরা ৷
জানা গিয়েছে, প্রশান্ত বিশ্বাস নিজে প্রথমে বাড়ির নিকটস্থ এক বিঘা জমিতে কুড়িটা চারা দিয়ে শুরু করেন পিংক কাঠালের চাষ। দুই বছরের মধ্যেই পেতে শুরু করেন অধিক ফলন। ওই গাছ থেকেই কলমের মাধ্যমে তৈরি করেন চারা এবং খুবই স্বল্প মূল্যে 50 থেকে 60 টাকায় অন্যান্য চাষিদের কাছেও বিক্রি করেন চারাগুলি । তাঁর কাছ থেকে চারা নিয়ে নদিয়ার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এই পিংক কাঁঠালের চাষ শুরু করেছেন ।
প্রশান্ত বিশ্বাসের দাবি, এই চাষে প্রতিবছর গড়ে বিঘা প্রতি তিন থেকে চার লক্ষ টাকা লাভ হয় চাষিদের । কাঁঠালের পাশাপাশি বারোমাসি আম, মৌসুমী লেবু, হাইব্রিড পেঁপে-সহ অন্যান্য ফলের চাষ ও তার চারা তৈরি করছেন প্রশান্ত । প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না-থাকলেও শুধুমাত্র কর্মদক্ষতার মাধ্যমে তিনি নিজে তথা অন্যান্য চাষিদের দেখাচ্ছেন লাভজনক নতুন চাষের দিশা। প্রায় প্রতিদিন দূর দূরান্ত থেকে বিভিন্ন মানুষ আসেন তার এই নতুন ধরনের চাষ দেখতে এবং চারা গাছ সংগ্রহ করতে ।
আরও পড়ুন: