কলকাতা, 4 এপ্রিল: নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে মালদার এক শিশুকে বাঁচালেন এসএসেকএমের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। খেলতে গিয়ে আচমকাই মুখ খোলা অবস্থায় সেফটিপিন ঢুকে যায় তার নাকের ভিতর। কিছুক্ষণ পর থেকেই শুরু হয় শ্বাসকষ্ট। পাশাপাশি তীব্র যন্ত্রণায় ছটফট করছিল একরত্তি। দীর্ঘ টালবাহানার পর এসএসকেএমে নিয়ে আসা হয় শিশুটিকে। শুরু হয় তার অস্ত্রোপচার। তাতেই মেলে সাফল্য।
যন্ত্রণা শুরু হতেই আর দেরি করেননি পরিবারের সদস্যরা। মালদার চাঁচলের বাসিন্দা বছর চারেকের রাজকুমার সাহাকে তখন নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় মহকুমা হাসপাতালে। পরবর্তী সময়ে সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় মালদা মেডিক্যাল কলেজে। কিন্তু সেখানেও পর্যাপ্ত চিকিৎসা সম্ভব হয়নি। সেখানকার চিকিৎসকরা রাজকুমারকে এসএসকেএম হাসপাতালে রেফার করে দেন। মালদা থেকে কলকাতার দিকে রওনা দেয় পরিবার। সেই মতো বুধবার ভোর ছ"টায় তাঁকে নিয়ে আসা হয় রাজ্যের পয়লা নম্বর সরকারি হাসপাতালে।
হাসপাতালের ইএনটি বিভাগের ইমার্জেন্সিতে আনা হয় তাকে। এন্ডোস্কপি করে দেখা যায় ডান নাকের ভিতর দিয়ে ঢুকে মাথার খুলির ভিতরে গেঁথে রয়েছে সেফটিপিনটি। অধ্যাপক চিকিৎসক অরুণাভ সেনগুপ্তের নেতৃত্বে হয় তাঁর অস্ত্রপচার । 45 মিনিটের অস্ত্রপচারের সাফল্য আসে। ওই শিশুটির ন্যাজাল এন্ডোস্কপি করা হয়। বর্তমানে একদম সুস্থ একরত্তি।
হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানান, "প্রায় দেড় ইঞ্চির একটি সেফটিপিন গেঁথে ছিল শিশুটির নাকের ভিতরে। খুব সাবধানে ওই সেফটিপিনটা বের করে আনতে হয়। এমনিতেই অনেকটা সময় অতিক্রান্ত হয়ে গিয়েছিল। তাই ওই শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে আমরা অস্ত্রপচার শুরু দিয়েছিলাম। এখন ভালো আছে। দু-একদিন আমরা পর্যবেক্ষণে রেখে তারপর ছেড়ে দেব।"
এসএসকেএম হাসপাতাল নিয়ে সাম্প্রতিক অতীতে বিতর্ক কম হয়নি। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কয়েকদিন আগে তাঁর হাঁটুতে জল জমে। সেই জল বের করতে এই সরকারি হাসপাতালেই এসেছিলেন তিনি। কিন্তু মমতার দাবি, চিকিৎসকের গাফিলতিতেই তাঁর সঠিক চিকিৎসা হয়নি। শুধু তাই নয়, চিকিৎসায় ফাঁক থাকায় তাঁর পায়ে ইনফেকশন পর্যন্ত হয়েছিল বলে দাবি করেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। তবে এই ধরনের যাবতীয় বিতর্ককে সরিয়ে রেখে বারবার চিকিৎসা ক্ষেত্রে নজির স্থাপন করে এসেছে এসএসকেএম। এবারও সেভাবেই একরত্তির জীবন বাঁচিয়ে নয়া নজির গড়ল তিলোত্তমা তথা রাজ্য়ের গর্বের এই হাসপাতাল।
আরও পড়ুন: