ETV Bharat / state

ফের সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক নিগ্রহ, হামলার মুখে নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীরাও

ফের সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক নিগ্রহের ঘটনা ঘটল ৷ রোগীর আত্মীয়দের হামলার মুখে পড়েন নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরাও ৷ এই ঘটনায় ফের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ৷

ETV BHARAT
ফের সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক নিগ্রহ (নিজস্ব চিত্র)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Oct 16, 2024, 2:44 PM IST

মালদা, 16 অক্টোবর: আরজি করে নির্যাতিতা চিকিৎসক ছাত্রীর খুনিদের কঠোর শাস্তির দাবিতে উত্তাল রাজ্য ৷ কর্মক্ষেত্রে নিজেদের নিরাপত্তার দাবিতে অব্যাহত চিকিৎসকদের আন্দোলন ৷ এরই মধ্যে ফের চিকিৎসক নিগ্রহের ঘটনা ঘটল মালদায় ৷ সরকারি হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিগ্রহ করার অভিযোগ উঠেছে এক রোগীর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ৷

মঙ্গলবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে পুরাতন মালদার মৌলপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ৷ এই ঘটনায় রাতে মালদা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করছেন নিগৃহীত চিকিৎসক ৷ অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ৷ তবে এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি ৷

ETV BHARAT
উত্তপ্ত মালদার মৌলপুর গ্রামীণ হাসপাতাল (নিজস্ব চিত্র)

মঙ্গলবার সকালে পুরাতন মালদার ভাবুক গ্রাম পঞ্চায়েতের রাঙামাটিয়া গ্রামের এক ব্যক্তি তাঁর চার বছরের সন্তানকে জ্বর গায়ে মৌলপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করেন ৷ ভর্তির পর শিশুটির চিকিৎসাও শুরু হয় ৷ বেশ কয়েক ধরনের রক্ত পরীক্ষা করানো হয় ৷ কিন্তু পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটির শারীরিক পরিস্থিতি দেখে তাকে মালদা মেডিক্যালে রেফার করার সিদ্ধান্ত নেন ৷ এতেই ক্ষেপে ওঠেন অভিভাবকরা ৷

তাঁরা ওই চিকিৎসককে অকথ্য ভাষায় গালাগালি শুরু করেন ৷ তাঁকে শারীরিক নিগ্রহও করা হয় বলে অভিযোগ ৷ আরও অভিযোগ, শুধু ওই চিকিৎসকই নন, সেই সময় সেখানে উপস্থিত নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরাও নিগ্রহের শিকার হন ৷ খবর পেয়ে দ্রুত সেখানে চলে আসে মালদা থানার পুলিশ ৷ পুলিশি হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে ৷ রাতে নিগৃহীত চিকিৎসক গোটা ঘটনা জানিয়ে নিরাপত্তার দাবিতে মালদা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ৷

বুধবার নিগৃহীত চিকিৎসক অরিন্দম চাকি বলেন, "গতকাল সকালে বেবি মণ্ডল নামে চার বছরের একটি শিশুকে এখানে ভর্তি করা হয় ৷ বাচ্চাটি চারদিন ধরে জ্বরে ভুগছিল ৷ গায়ে র‍্যাশ বেরিয়েছিল ৷ আমি রাউন্ড দেওয়ার সময় বাচ্চাটিকে পরীক্ষাও করি ৷ তখন সে স্থিতিশীল ছিল ৷ তবে তখনও তার রক্ত পরীক্ষার রিপোর্টগুলি এসে পৌঁছয়নি ৷ বেলা সাড়ে তিনটে নাগাদ অভিভাবকরা জানান, বাচ্চার মুখে ঘা হয়েছে ৷ কিছু খেতে পারছে না ৷ আমি পরীক্ষা করে দেখি, বাচ্চার জিভ লাল হয়ে গিয়েছে ৷"

চিকিৎসক আরও জানান, "পরিস্থিতি সুবিধের নয় ভেবে আমরা শিশুটিকে মেডিক্যালে রেফার করার সিদ্ধান্ত নিই ৷ অভিভাবকদের সে কথা জানানো হয় ৷ তখনই তাঁরা আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি শুরু করেন ৷ আমার গায়ে হাত দেন ৷ শুধু আমাকে নয়, তখন ওয়ার্ডে উপস্থিত স্বাস্থ্যকর্মীদেরও নিগ্রহ করা হয় ৷ পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে ৷ এই ঘটনায় আমি মালদা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি ৷ আমার মনে হচ্ছে, চিকিৎসক নিগ্রহ এখন সামাজিক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে ৷ মুষ্টিমেয় কয়েকজনের জন্য সবাই বদনামের ভাগীদার হচ্ছেন ৷ এখানে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ না থাকার জন্যই বাচ্চাটিকে মালদা মেডিক্যালে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল ৷"

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সনাতন পাল জানান, "তখন আমি নিজের বাচ্চার চিকিৎসা করাতে এসেছিলাম ৷ আমার বাচ্চাকে যখন চিকিৎসক দেখতে শুরু করেছেন, তখনই ওই বাচ্চার মা বা মাসি ডাক্তারবাবুর উপর চড়াও হন ৷ ডাক্তারবাবুকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি শুরু করেন ৷ ধাক্কাধাক্কিও চলে ৷ তাঁরা চিকিৎসকদের মারধরের হুমকি দিতে থাকেন ৷ খানিক বাদে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে ৷"

মালদা থানার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, "অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে ৷ অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে ৷"

মালদা, 16 অক্টোবর: আরজি করে নির্যাতিতা চিকিৎসক ছাত্রীর খুনিদের কঠোর শাস্তির দাবিতে উত্তাল রাজ্য ৷ কর্মক্ষেত্রে নিজেদের নিরাপত্তার দাবিতে অব্যাহত চিকিৎসকদের আন্দোলন ৷ এরই মধ্যে ফের চিকিৎসক নিগ্রহের ঘটনা ঘটল মালদায় ৷ সরকারি হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিগ্রহ করার অভিযোগ উঠেছে এক রোগীর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ৷

মঙ্গলবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে পুরাতন মালদার মৌলপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ৷ এই ঘটনায় রাতে মালদা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করছেন নিগৃহীত চিকিৎসক ৷ অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ৷ তবে এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি ৷

ETV BHARAT
উত্তপ্ত মালদার মৌলপুর গ্রামীণ হাসপাতাল (নিজস্ব চিত্র)

মঙ্গলবার সকালে পুরাতন মালদার ভাবুক গ্রাম পঞ্চায়েতের রাঙামাটিয়া গ্রামের এক ব্যক্তি তাঁর চার বছরের সন্তানকে জ্বর গায়ে মৌলপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করেন ৷ ভর্তির পর শিশুটির চিকিৎসাও শুরু হয় ৷ বেশ কয়েক ধরনের রক্ত পরীক্ষা করানো হয় ৷ কিন্তু পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটির শারীরিক পরিস্থিতি দেখে তাকে মালদা মেডিক্যালে রেফার করার সিদ্ধান্ত নেন ৷ এতেই ক্ষেপে ওঠেন অভিভাবকরা ৷

তাঁরা ওই চিকিৎসককে অকথ্য ভাষায় গালাগালি শুরু করেন ৷ তাঁকে শারীরিক নিগ্রহও করা হয় বলে অভিযোগ ৷ আরও অভিযোগ, শুধু ওই চিকিৎসকই নন, সেই সময় সেখানে উপস্থিত নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরাও নিগ্রহের শিকার হন ৷ খবর পেয়ে দ্রুত সেখানে চলে আসে মালদা থানার পুলিশ ৷ পুলিশি হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে ৷ রাতে নিগৃহীত চিকিৎসক গোটা ঘটনা জানিয়ে নিরাপত্তার দাবিতে মালদা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ৷

বুধবার নিগৃহীত চিকিৎসক অরিন্দম চাকি বলেন, "গতকাল সকালে বেবি মণ্ডল নামে চার বছরের একটি শিশুকে এখানে ভর্তি করা হয় ৷ বাচ্চাটি চারদিন ধরে জ্বরে ভুগছিল ৷ গায়ে র‍্যাশ বেরিয়েছিল ৷ আমি রাউন্ড দেওয়ার সময় বাচ্চাটিকে পরীক্ষাও করি ৷ তখন সে স্থিতিশীল ছিল ৷ তবে তখনও তার রক্ত পরীক্ষার রিপোর্টগুলি এসে পৌঁছয়নি ৷ বেলা সাড়ে তিনটে নাগাদ অভিভাবকরা জানান, বাচ্চার মুখে ঘা হয়েছে ৷ কিছু খেতে পারছে না ৷ আমি পরীক্ষা করে দেখি, বাচ্চার জিভ লাল হয়ে গিয়েছে ৷"

চিকিৎসক আরও জানান, "পরিস্থিতি সুবিধের নয় ভেবে আমরা শিশুটিকে মেডিক্যালে রেফার করার সিদ্ধান্ত নিই ৷ অভিভাবকদের সে কথা জানানো হয় ৷ তখনই তাঁরা আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি শুরু করেন ৷ আমার গায়ে হাত দেন ৷ শুধু আমাকে নয়, তখন ওয়ার্ডে উপস্থিত স্বাস্থ্যকর্মীদেরও নিগ্রহ করা হয় ৷ পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে ৷ এই ঘটনায় আমি মালদা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি ৷ আমার মনে হচ্ছে, চিকিৎসক নিগ্রহ এখন সামাজিক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে ৷ মুষ্টিমেয় কয়েকজনের জন্য সবাই বদনামের ভাগীদার হচ্ছেন ৷ এখানে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ না থাকার জন্যই বাচ্চাটিকে মালদা মেডিক্যালে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল ৷"

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সনাতন পাল জানান, "তখন আমি নিজের বাচ্চার চিকিৎসা করাতে এসেছিলাম ৷ আমার বাচ্চাকে যখন চিকিৎসক দেখতে শুরু করেছেন, তখনই ওই বাচ্চার মা বা মাসি ডাক্তারবাবুর উপর চড়াও হন ৷ ডাক্তারবাবুকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি শুরু করেন ৷ ধাক্কাধাক্কিও চলে ৷ তাঁরা চিকিৎসকদের মারধরের হুমকি দিতে থাকেন ৷ খানিক বাদে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে ৷"

মালদা থানার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, "অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে ৷ অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে ৷"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.