জলপাইগুড়ি, 18 জুন: চিকিৎসকও মানুষ, ভগবান নন ৷ তাঁরাও অসুস্থ হন ৷ সারাদিনের চাপে মেজাজও হারিয়ে ফেলেন ৷ আর তখনই চিকিৎসকের ভালো রূপ ভুলে সাধারণ মানুষ বিচার করতে বসে যান ৷ এমনই অবস্থার শিকার হয়েছেন ধূপগুড়ি মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক সৃজিতা সাহা। নিজেই বিষধর সাপের ছোবলে অসুস্থ। তাও হাসপাতালে কর্তব্য পালনে অবিচল ৷ অন্যদিকে হাসপাতালে পরিষেবা নিয়ে সাধারণ মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করায় বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন চিকিৎসক সৃজিতা ৷
চিকিৎসক সৃজিতার কথায়, "রবিবার ছুটির আবেদন করেছিলাম। কিন্তু হয়ে ওঠেনি। রোগীদের পরিষেবা দিতে নেমেছি। বর্তমানে জ্বর ও নানা সমস্যা নিয়ে রোগীদের ভিড় হচ্ছে । অন্যান্য চিকিৎসকদের মতোই কাজ চালিয়ে যেতে হয়েছে। সেটা কেউ বুঝতে যান না ৷ মানুষ অসহিষ্ণু ব্যবহার করেই যান ৷ একটা সীমার পর আর সহ্য করা যায় না ৷"
স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা অবশ্য প্রকাশ্যে এই বিষয়ে কিছুই বলতে চাননি ৷ তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আধিকারিক জানান, একজন চিকিৎসক হিসেবে সৃজিতা সাহা যা করছেন তা যথেষ্ট প্রশংসনীয়। হাসপাতালে চিকিৎসকের অভাব রয়েছে বলেই সাধারণদের পরিষেবা পেতে একটু সময় লাগছে ৷ ধূপগুড়ি হাসপাতালে বর্তমানে ছয়জন চিকিৎসক রয়েছেন। কখনও 12 ঘণ্টা আবার কখনও ছয়, কখনও চার ঘণ্টা হিসেবে রোটেশনে চিকিৎসকরা ডিউটি করে থাকেন।
এরই মধ্যে হাসপাতালে পরিষেবা নিয়ে রোগীর আত্মীয় ও সৃজিতার মধ্যে বাকবিতণ্ডার মতো ঘটনা ঘটে। অনেকেই চিকিৎসককে দোষারোপ করেন। কিন্তু কেউই সৃজিতার হাতে লাগানো স্যালাইনের চ্যানেলের দিকে নজর দেননি। চিকিৎসকও নিজে থেকে কিছু জানায়নি। কিন্তু এক সময়ে ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙে ৷ তিনি বলেই ফেলেন, তাঁকে সাপে কামড়ে ছিল ৷ অসুস্থ রয়েছেন এখনও ৷ এই অবস্থায় কাজ করে চলেছেন ৷
চিকিৎসক সৃজিতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত শুক্রবার রাতে তাঁকে সাপে কামড়ায়। তারপরই ময়নাগুড়িতে আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে চিকিৎসাও করান। ঠিক হাসপাতালে চিকিৎসকের সংখ্যা কম হওয়ায় বিশ্রাম না-নিয়েই কাজে যোগ দেন চিকিৎসক সৃজিতা সাহা ৷