জলপাইগুড়ি, 3 জুলাই: জোড়া খুনের মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে রায়দান নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের দুই বিচারপতির মধ্যে মতপার্থক্য চরমে উঠল। মামলা গড়াল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির এজলাসে । মঙ্গলবার হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের বিচারপতি সৌমেন সেন ও পার্থসারথি সেনের ডিভিশন বেঞ্চে এই রায়দানকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ৷
জানা গিয়েছে, জোড়া খুনের ঘটনায় কালিম্পং জেলা আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের আবেদন করা হয়েছিল। হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি করে ৷ রায়দানের করতে গিয়ে দুই বিচারপতির মধ্যে মতপার্থক্য হয় বলে দাবি সরকারি ও অভিযুক্তের পক্ষের আইনজীবীর।
অভিযুক্ত কৃষ্ণা প্রধানের আইনজীবী অর্জুন চৌধুরীর দাবি, শম্ভু ছেত্রী ও বিষ্ণুমায়া ছেত্রী নামে এক দম্পতির খুনের ঘটনা ঘটে ৷ কালিম্পং-এর চার মাইলের বাসিন্দা রোশন নামে এক ব্যক্তি 2021 সালের ডিসেম্বর মাসে অভিযোগ দায়ের করেন কৃষ্ণা প্রধান নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৷ সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্তে নেমে অভিযুক্ত কৃষ্ণা প্রধানকে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷ 2023 সালের 29 সেপ্টেম্বর কালিম্পং জেলা আদালত কৃষ্ণা প্রধানকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের সাজা দেয় ৷
অভিযুক্তের পক্ষের আইনজীবী অর্জুন চৌধুরী বলেন, "জেলা আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে আমরা কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে আবেদন করি। বিচারপতি সৌমেন সেন ও পার্থসারথী সেনের ভিডিশন বেঞ্চে শুনানি হয়। মঙ্গলবার রায় দেওয়ার সময় ডিভিশন বেঞ্চের দুই বিচারপতির মধ্যে মতপার্থক্যের সৃষ্টি হয়। বিচারপতি পার্থসারথি সেন 302 ধারা অনুযায়ী কৃষ্ণা প্রধানের দোষ প্রমানিত না হওয়ায়, তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেন ৷ অন্যদিকে, বিচারপতি সৌমেন সেন জানান মৃত্যুদণ্ড দেবেন না ৷ কিন্তু 30 বছরের সাজা দেবেন। মতপার্থক্যের কারণে দুই বিচারপতি রায়দানের জন্য বিষয়টি প্রধানবিচারপতির এজলাসে মামলাটি পাঠানোর আর্জি জানান। কৃষ্ণা প্রধানের সাজা কী হবে তা প্রধান বিচারপতিই ঠিক করবেন।"
কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের সহকারি সরকারি আইনজীবী অদিতি শঙ্কর চক্রবর্তী জানান, হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি সৌমেন সেন ও পার্থসারথি সেনের রায়দান নিয়ে মতপার্থক্য হয়েছে। ডিভিশন বেঞ্চের এক বিচারপতি সৌমেন সেন অভিযুক্তকে 13 বছরের সাজা দিয়েছেন ৷ কিন্তু বিচারপতি পার্থসারথি সেন বলেছেন, অভিযুক্ত বিরুদ্ধে খুনের প্রমাণ পাওয়া যায়নি । এরপরই রায়দানের বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ।