জলপাইগুড়ি, 29 অক্টোবর: করলা নদীর বোয়াল মাছ ধরেই দেবী চৌধুরানি শ্মশানকালী মাকে ভোগ দেওয়া হয়। পাশাপাশি শোল মাছ, মাংসও দেওয়া হয় মাকে। আজও দেবী চৌধুরানীর স্মৃতি বহন করে আসছে গোশালা মোড়ের শ্মশান কালীমাতা মন্দির।
কথিত আছে, এই মন্দিরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া রুকরুকা নদী দিয়ে তিস্তা নদীতে বজর ভাসাতেন দেবী চৌধুরানী। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তের দেবী চৌধুরানীর ডেরার মধ্যে অন্যতম একটা জলপাইগুড়ি। শুধু তাই নয়, বংশ পরম্পরায় এই মন্দিরের প্রধান সেবায়েতের কাজ করে চলেছেন মমতাজ মহম্মদ। পুজোর ফুল তোলা থেকে সমস্ত জোগাড় তিনিই করেন ৷ জলপাইগুড়ির গোশালা মোড়ের দেবী চৌধুরানী শ্মশানকালী মন্দিরের এমন সম্প্রীতির নজির সাধারণ মানুষের কাছে দৃষ্টান্ত ৷
জলপাইগুড়ির দেবী চৌধুরানী মন্দিরের প্রধান পুরোহিত সুভাষ চৌধুরী বলেন, "এই মন্দির সব ধর্মের মানুষের মিলন স্থলে পরিণত হয়েছে। প্রায় আড়াইশো বছর থেকে এই পুজো হয়ে আসছে। শ্মশানকালী হিসেবে পুজো হয়। দেবী চৌধুরানি শ্মশানকালী মন্দিরে মাকে ভোগ দেওয়া হয় করলা নদীর বোয়াল মাছ দিয়ে। এখানে তন্ত্র মতেই মায়ের পুজো হয়। আমিষ ভোগ দেওয়া হয়। ভোগে বোয়াল মাছ, শোল মাছ, ডাল ভাত, নিরামিষ তরকারি দেওয়া হয়।
দেবী চৌধুরানী শ্মশানকালী মন্দির কমিটির সম্পাদক দেবাশিষ সরকার বলেন, "শোনা যায়, দেবী চৌধুরানী এখানে এসে এই মন্দিরে মা কালীর পুজো দিয়ে গিয়েছেন। এই মন্দিরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া রুকরুকা নদী দিয়ে তিস্তা নদীতে তিনি বজরাও ভাসাতেন। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে দেবী চৌধুরানীর যাতায়াত ছিল। তারমধ্যে অন্যতম জলপাইগুড়ি। এই মন্দির সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির একটা বার্তা বহন করে। এখানে যিনি প্রধান সেবায়েত তিনি মুসলিম। মমতাজই সব কাজ করে আসছেন বংশ পরম্পরায়।"