সিউড়ি, 25 এপ্রিল: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যের পর বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দেবাশিস ধরের মনোনয়ন নিয়ে জটিলতা বেড়েছে ৷ আর তাতেই বিজেপির প্রতীকে আরও এক প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিলেন বীরভূমে ৷ দেবাশিসের পাশাপাশি দেবতনু ভট্টাচার্যও বীরভূম লোকসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপির প্রতীকে মনোনয়ন পত্র দাখিল করলেন ৷ যা নিয়ে জোর চর্চা শুরু জেলার রাজনৈতিক মহলে ৷
গত 23 এপ্রিল তারাপীঠে নির্বাচনী প্রচারে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, "আপনার (দেবাশিস ধর) বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আছে ৷ রাজ্য এখনও আপনাকে ক্লিয়ারেন্স দেয়নি।" এরপরই ওই কেন্দ্র থেকে দেবতনু ভট্টাচার্যকেও প্রতীক দিয়েছে বিজেপি ৷ মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল শুক্রবার 25 এপ্রিল ৷ স্ক্রটিনি হবে আগামিকাল 26 এপ্রিল ৷ পাশাপাশি মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের শেষদিন 29 এপ্রিল ৷ আর মনোনয়ন পত্র দাখিল করার পর এদিন বিজেপি নেতা দেবতনু ভট্টাচার্য বলেন, "বিজেপির তরফে মনোনয়ন জমা দিলাম। এটা পার্টির সিদ্ধান্ত। দল যা নির্দেশ দিয়েছে তাই করলাম ৷ এরচেয়ে বেশি কিছু বলতে পারব না।" অন্যদিকে, এই প্রসঙ্গে দেবাশিস ধর বলেন, "নির্বাচনী কোনও স্ট্যাটেজি হতে পারে ৷ দলের শীর্ষ নেতাদের সিদ্ধান্ত এটা।"
বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায়ের বিরুদ্ধে বিজেপি প্রাক্তন পুলিশ কর্তা আইপিএস দেবাশিস ধরকে প্রার্থী করেছে। 2021 সালে বিধানসভা নির্বাচন চলাকালীন দেবাশিস ধর কোচবিহার জেলার পুলিশ সুপার ছিলেন ৷ নির্বাচনের দিন শীতলকুচিতে বুথে ঝামেলার সময় গুলি চালায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় চার জনের ৷ এই ঘটনায় তৎকালীন পুলিশ সুপার দেবাশিস ধর নির্বাচন কমিশনকে যে রিপোর্ট দেন, তাতে অখুশি ছিল রাজ্য সরকার ৷ অভিযোগ, এরপরেই দেবাশিসকে সাসপেন্ড করা হয় ৷ এমনকী, 2022 সালে দেবাশিস ধরের বিরুদ্ধে আয়বহির্ভূত সম্পত্তির অভিযোগ ওঠে ৷ যার তদন্ত শুরু করে সিআইডি ৷ দেবাশিস ধরের বাড়ি-সহ বিভিন্ন ডেরায় হানা দেয় তদন্তকারী অফিসারেরা। এখনও সেই মর্মে দুটি মামলা চলছে ৷
ইতিমধ্যেই 23 এপ্রিল সিউড়িতে জেলাশাসকের দফতরের বীরভূম লোকসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপির প্রতীকে মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন প্রাক্তন পুলিশ কর্তা দেবাশিস ধর। যদিও, তার বহু আগে থেকে শহর থেকে গ্রামে জোর প্রচার করে চলেছেন তিনি ৷ 23 এপ্রিল নির্বাচনী প্রচারে তারাপীঠে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে নেত্রী বলেন, "শীতলকুচির ঘটনা মনে আছে ? চার জনকে গুলি করে মেরেছে ৷ আমি ছুটে গিয়েছিলাম সেই দিন ৷ তিনি (দেবাশিস ধর) আপনাদের এখানে প্রার্থী হয়েছেন ৷ তিনি নাকি বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী আমায় ফাঁসিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর কাউকে ফাঁসানোর ক্ষমতা নেই, আপনি নিজের জালে নিজে জড়িয়েছেন ৷ আপনার বিরুদ্ধে তো মামলা চলছে, আপনাকে স্টেট গর্ভমেন্ট ক্লিয়ারেন্স দেয়নি।"
আরও পড়ুন