কুলটি, 22 জুন: গত বেশ কয়েকদিন ধরে কুলটির সাঁকতোড়িয়া এলাকায় পানীয় জলের তীব্র সংকট চলছে ৷ অভিযোগ বারবার কাউন্সিলর এবং স্থানীয় প্রশাসনের কাছে দরবার করেও পানীয় জলে সমস্যার সুরাহা হয়নি ৷ আর তার জেরে শনিবার সকাল থেকে বরাকর-পুরুলিয়া রাজ্যসড়ক অবরোধ করে সাঁকতোড়িয়া ও ডিসেরগড় এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ ৷ আর তাদের এই আন্দোলনে অরাজনৈতিক ভাবে সঙ্গ দিতে দেখা গেল স্থানীয় তৃণমূল ও বিজেপি নেতৃত্বকে ৷ অবরোধের সময় ঘটনাস্থলে আসানসোল পৌরনিগমের এক ইঞ্জিনিয়ার পৌঁছলে, তাঁর উপর চড়াও হয় বিক্ষোভকারীদের একাংশ ৷ পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় ৷
গত কয়েকদিন ধরে কুলটি বিধানসভার আসানসোল পৌরনিগমের 104 ও 105 নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত সাঁকতোড়িয়া ও ডিসেরগড় এলাকায় পানীয় জলের সংকট বড় আকার ধারণ করেছে ৷ এলাকায় পাইপ লাইনের ভালভ খারাপ হয়ে যাওয়ায়, পানীয় জল আসছে না ৷ অন্যদিকে বেশ কিছু অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরেই পানীয় জলের অসুবিধা চলছে ৷ বারবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ ৷ আর সেই কারণেই 104 ও 105 নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা শনিবার সকাল থেকে ডিসেরগড়ের হোসিনিয়া মোড়ে বরাকর-পুরুলিয়া রাজ্যসড়ক অবরোধ করে ৷ দীর্ঘক্ষণ ধরে এই পথ অবরোধ চলে ৷
রাজ্যসড়ক অবরোধের ফলে আসানসোলের বরাকর থেকে পুরুলিয়া যাওয়ার গাড়িগুলি আটকে পড়ে ৷ সপ্তাহের শেষে বহু পর্যটক পুরুলিয়ায় বেড়াতে যায় ৷ তারাও দীর্ঘক্ষণ আটকে পড়েন এই অবরোধের কারণে ৷ অবরোধের খবর পেয়ে আসে কুলটি থানার সাঁকতোড়িয়া ও নিয়ামতপুর ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ৷ তারা এসে বিক্ষোভকারী বাসিন্দাদের বোঝানোর চেষ্টা করে ৷ কিন্তু, বাসিন্দারা জানিয়ে দেন, পানীয় জলের সংকটের স্থায়ী সমাধান না হলে, অবরোধ তুলবে না তারা ৷
এই অবস্থায় আসানসোল পৌরনিগমের এক ইঞ্জিনিয়ারকে ডাকা হয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য ৷ কার্তিক গঙ্গোপাধ্যায় নামে ওই ইঞ্জিনিয়ার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হতেই, তাঁর উপরে ক্ষোভে ফেটে পড়ে স্থানীয় বাসিন্দারা ৷ স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ কার্তিক গঙ্গোপাধ্যায় নামে ওই ইঞ্জিনিয়ার টাকা নিয়ে বহু লোককে পানীয় জলের অবৈধ সংযোগ করে দিয়েছে ৷ আর সেই কারণেই এই জল সংকট তৈরি হয়েছে ৷ ক্ষোভ বাড়তেই উত্তেজিত বাসিন্দারা ওই ইঞ্জিনিয়ারের উপর চড়াও হয় ৷ বাসিন্দারা তাঁর দিকে তেড়ে যায় ৷ পুলিশ বাঁচাবার চেষ্টা করলেও, বাসিন্দাদের হাতে চড়-ঘুষি খেতে হয় ওই ইঞ্জিনিয়ারকে ৷
স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা ওই এলাকার বাসিন্দা চন্দন আচার্য জানিয়েছেন "খুব দ্রুত পাইপ লাইনের ভালভ ঠিক করে দেওয়ার জন্য পৌরনিগমের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি পেয়েছি ৷ এছাড়াও পানীয় জল সরবরাহের সময় বাড়ানো হবে বলেও পৌরনিগম থেকে জানানো হয়েছে ৷ পাশাপাশি, যে সমস্ত এলাকায় পানীয় জলের লাইন খারাপ আছে, সেই এলাকায় এখন দু’টি ট্যাঙ্কারে প্রতিদিন জল দেওয়া হবে ৷ আর এই প্রতিশ্রুতি পাওয়ার পরেই আমরা সবাই অবরোধ তুলে নিয়েছি ৷" প্রায় চার ঘণ্টা ধরে অবরোধ চলার পর অবশেষে অবরোধ ওঠে ও যান চলাচল স্বাভাবিক হয় ৷