রায়গঞ্জ, 18 সেপ্টেম্বর: জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের জেরে বিনা চিকিৎসায় রাজ্যে 29 জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে ৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এমনটাই দাবি করেছেন ৷ তাঁর এই দাবির বিরোধিতা করে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের কাছে আরটিআই-এর দাবিতে চিঠি পাঠালেন রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক বিদ্যুৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ।
তথ্য জানার অধিকার আইনে তিনি জানতে চেয়েছেন, কী কারণে 29 জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে, তাঁরা চিকিৎসকদের গাফিলতির জন্য মারা গিয়েছেন কি না ৷ যদি তাই হয়, তাহলে ওইসব চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, এই সব যাবতীয় তথ্য জানতে চেয়েছেন তিনি ।
চিকিৎসক তথা অধ্যাপক বিদ্যুৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী কয়েকদিন আগে সরকারিভাবে বলেছেন 29 জন রোগীর বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে ৷ রোগী মৃত্যু নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পূর্ণ মিথ্যাচার করছেন ৷ রাজনৈতিক কারণে এটা করা হচ্ছে ৷ সর্বোচ্চ প্রশাসনিক পদে বসে রাজনৈতিক কারণে চেয়ারটার অপব্যবহার করা হচ্ছে ৷ মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসে এমন মিথ্যাচার করা অনুচিত ।"
তাঁর কথায়, "সমস্ত হাসপাতাল চলছে ৷ সেখানে চিকিৎসাও হচ্ছে ৷ এই পরিস্থিতিতে 29 জন রোগীর বিনা চিকিৎসায় মারা যাওয়ার ঘোষণাকে আমি মেনে নিতে পারছি না ৷ তাই আরটিআই করে আমি জানতে চেয়েছি, এই রোগী মৃত্যু নিয়ে কোনও তদন্ত হয়েছি কি না ৷ তদন্তে হলেও তাঁর সম্পূর্ণ তথ্যটা কী ৷ কারা ঠিক করল রোগীদের বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে ৷ যে হাসপাতালগুলিতে রোগীদের বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে সেখানকার ডাক্তার ও আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছি কি না আমি জানতে চাইছি ৷ আরটিআইয়ের উত্তর এলে এগুলো পরিষ্কার হয়ে যাবে ৷ প্রমাণ হয়ে যাবে কে সত্য ও মিথ্যা বলছে ৷"
আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে কর্মবিরতি পালন করছেন জুনিয়র ডাক্তাররা ৷ অভিযোগ উঠছে, জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের জেরে বিনা চিকিৎসায় সরকারি হাসপাতালে রোগীদের মৃত্যু হচ্ছে ৷ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কয়েকদিন আগেই দাবি করেন, আরজি কর-কাণ্ডে জুনিয়র ডাক্তারদের এই কর্মবিরতির জেরে রাজ্যে এখনও পর্যন্ত মোট 29 জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে ৷ সরকারিভাবে মুখ্যমন্ত্রী এই ঘোষণা করে বলেন, মৃতদের পরিবারপিছু 20 লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেবে সরকার । এর পরেই বিভিন্ন মহলে এই নিয়ে সমালোচনা শুরু হয় ৷ এবার সেই রোগী মৃত্যু সংক্রান্ত সম্পূর্ণ তথ্য জানতে চাইলেন রায়গঞ্জের চিকিৎসক ৷ যদি 30 দিনের মধ্যে তিনি উত্তর না-পান, তবে আদালতে যাওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিদ্যুৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ।