ETV Bharat / state

কলকাতার 50 জায়গায় বসছে কূপ, বৃষ্টির জল দিয়ে হবে ভূ-গর্ভস্থ জলের রিচার্জ - Kolkata Municipal Corporation

KMC on Under Ground Water: ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করা হয়েছে জায়গা ৷ 50টি জায়গায় বসানো হবে কূপ ৷ ভূ-গর্ভস্থ জলের রিচার্জ বৃদ্ধিতে নয়া প্রকল্প কলকাতা পুরনিগমের ৷

Kolkata Municipal Corporation
কলকাতা পুরনিগম (Etv Bharat)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Aug 13, 2024, 11:07 PM IST

কলকাতা, 13 অগস্ট: শহরের 50 জায়গায় বসানো হচ্ছে কূপ ৷ বৃষ্টির জল দিয়ে হবে ভূ-গর্ভস্থ জলের রিচার্জ । জমা জলের সমস্যা কমার পাশাপাশি ভূগর্ভস্থ জলতলের মাত্রা বৃদ্ধিতে সার্বিকভাবে বিপর্যয় মুক্তি ঘটবে কলকাতায় । বন্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনার বৈঠকেই তৈরি হয়েছে এই প্রকল্পের নীল নকশা । সম্পূর্ণ টাকা দেবে ন্যাশনাল ডিজাস্টার রিডাকশন ম্যানেজমেন্ট অথরিটি (এনডিআরএমএ)।

কলকাতা কর্পোরেশন সূত্রে খবর, ওয়াটার পকেট হিসেবে পরিচিত এমন 50টি জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে । যেখানে ফাইবারের ইকো ব্লক বসানো হবে । মাটি কেটে এই বক্সটা মাটির নিচে বসানো হবে । বক্সের নিচের অংশে কূপের মতো করে 30 মিটার গভীরে পাইপ ঢোকানো হবে । আমাদের কলকাতায় মাটির নিচে 28-30 মিটার গভীরে একটা বালি স্তর আছে । যেখানে পানীয়জলের স্তর আছে সেখানে সরাসরি নয়, উপরে বালি স্তরে জল ফেলা হবে । যখন বৃষ্টি হবে তখন জিও ব্লকের মাধ্যমে জল যাবে কূপ মারফত । সেই জল শোধন করেই যাবে ।

এক একটি ইকো ব্লক 50 হাজার লিটার জল ধারণের ক্ষমতা রাখে । এই ইকো ব্লক বসাতে 7 মিটার দৈর্ঘ্য, 4 মিটার প্রস্থ জায়গা লাগবে, যার গভীরতা হবে 2 মিটার । এক একটি ইকো ব্লক বসাতে কমপক্ষে 50 লাখ টাকা খরচ । অর্থাৎ, 15 কোটি টাকা ন্যূনতম খরচ হবে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে । সেই টাকা দেবে ন্যাশনাল ডিজস্টার রিডাকশন ম্যানেজমেন্ট অথরিটি ।

এই বিষয়ে কলকাতা কর্পোরেশনের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানান, এটা কলকাতার উত্তর-দক্ষিণ ও পূর্ব-পশ্চিম সব অংশেই করা হবে । মূলত যেখানে বেশি জল জমার প্রবণতা সেখানেই এটা করা হবে । মাটি পরীক্ষার পর ইকো ব্লক বসানো হবে । আসন্ন মেয়র পরিষদ বৈঠক ও মাসিক অধিবেশনেই এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে । তারপরেই টেন্ডার করা প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু হবে । চেন্নাইতে ভূ-গর্ভস্থ জলের পরিমাণ ঠিক রাখতে এই ধরনের প্রকল্প চালু আছে ।

এই প্রকল্পের উপকারিতা হল, বর্ষায় জমা হল নিয়ন্ত্রণ করা । পাশাপাশি ভূ-গর্ভস্থ জলের পরিমাণ বাড়াবে । জল কমায় যে ভূমিধসের আশঙ্কা থাকে সেই আশঙ্কা কমে যাবে । আর্সেনিকের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ হবে । ভূ-গর্ভস্থ যে বাস্তুতন্ত্র সেটার ভারসাম্য বজায় থাকবে । যেখানে বেশি জল জমে যায় সেখানে দ্রুত তা মাটির নিচে চলে যাবে ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, আগে এক সময় জলস্তর ছিল মাটির 10-15 ফুট নিচে । কলকাতায় দ্রুত গতিতে নগরায়ণ ঘটা ও জলাশয় বুজিয়ে দেওয়ার জেরে ভূ-গর্ভে আর জল ঢুকতে পারছে না ৷ ফলে রিচার্জ বন্ধ হয়ে গিয়েছে । তাই জলস্তর দ্রুত নিচে নামছে ৷ গরমকালে 50 ফুট নিচে চলে যাচ্ছে জলতল ।

এই বিষয়ে বিজ্ঞানী সুজিব কর জানান, জলতল নিচে চলে যাওয়াতে তা দূষিত হয়ে যাচ্ছে । বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভূ-গর্ভস্থ জলে আর্সেনিকের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে । শীত-গ্রীষ্ম প্রায় 100 ওয়ার্ডে এর প্রভাব পড়ে কমবেশি । শহরে গভীর নলকূপের মাধ্যমে ব্যপক পরিমাণে জল তোলা হচ্ছে । এক সময় অনেক পুকুর ছিল যার মাধ্যমে ভূ-গর্ভস্থ জল রিচার্জ হত সেটা বন্ধ হয়ে গিয়েছে । মাটির নিচের স্তরগুলিতে জল না থাকায় সেগুলো ফাঁপা হয়ে দুর্বল হয়ে যাচ্ছে । সমুদ্রের জলস্ফীতি ঘটায় দ্রুত মাটি সেই জল টানছে ৷ ফলে পানীয় জলের বদলে লবণাক্ত জল সেখানে জায়গা করে নিচ্ছে । এমন হলে ভবিষ্যতে পানীয় জল সংকট হবে শহরে । কলকাতা কর্পোরেশন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটা বিজ্ঞানভিত্তিক করতে পারলে রক্ষা পাবে শহর । পানীয় জল সংকট মিটবে । ভূমি ধস থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে ।

কলকাতা, 13 অগস্ট: শহরের 50 জায়গায় বসানো হচ্ছে কূপ ৷ বৃষ্টির জল দিয়ে হবে ভূ-গর্ভস্থ জলের রিচার্জ । জমা জলের সমস্যা কমার পাশাপাশি ভূগর্ভস্থ জলতলের মাত্রা বৃদ্ধিতে সার্বিকভাবে বিপর্যয় মুক্তি ঘটবে কলকাতায় । বন্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনার বৈঠকেই তৈরি হয়েছে এই প্রকল্পের নীল নকশা । সম্পূর্ণ টাকা দেবে ন্যাশনাল ডিজাস্টার রিডাকশন ম্যানেজমেন্ট অথরিটি (এনডিআরএমএ)।

কলকাতা কর্পোরেশন সূত্রে খবর, ওয়াটার পকেট হিসেবে পরিচিত এমন 50টি জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে । যেখানে ফাইবারের ইকো ব্লক বসানো হবে । মাটি কেটে এই বক্সটা মাটির নিচে বসানো হবে । বক্সের নিচের অংশে কূপের মতো করে 30 মিটার গভীরে পাইপ ঢোকানো হবে । আমাদের কলকাতায় মাটির নিচে 28-30 মিটার গভীরে একটা বালি স্তর আছে । যেখানে পানীয়জলের স্তর আছে সেখানে সরাসরি নয়, উপরে বালি স্তরে জল ফেলা হবে । যখন বৃষ্টি হবে তখন জিও ব্লকের মাধ্যমে জল যাবে কূপ মারফত । সেই জল শোধন করেই যাবে ।

এক একটি ইকো ব্লক 50 হাজার লিটার জল ধারণের ক্ষমতা রাখে । এই ইকো ব্লক বসাতে 7 মিটার দৈর্ঘ্য, 4 মিটার প্রস্থ জায়গা লাগবে, যার গভীরতা হবে 2 মিটার । এক একটি ইকো ব্লক বসাতে কমপক্ষে 50 লাখ টাকা খরচ । অর্থাৎ, 15 কোটি টাকা ন্যূনতম খরচ হবে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে । সেই টাকা দেবে ন্যাশনাল ডিজস্টার রিডাকশন ম্যানেজমেন্ট অথরিটি ।

এই বিষয়ে কলকাতা কর্পোরেশনের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানান, এটা কলকাতার উত্তর-দক্ষিণ ও পূর্ব-পশ্চিম সব অংশেই করা হবে । মূলত যেখানে বেশি জল জমার প্রবণতা সেখানেই এটা করা হবে । মাটি পরীক্ষার পর ইকো ব্লক বসানো হবে । আসন্ন মেয়র পরিষদ বৈঠক ও মাসিক অধিবেশনেই এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে । তারপরেই টেন্ডার করা প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু হবে । চেন্নাইতে ভূ-গর্ভস্থ জলের পরিমাণ ঠিক রাখতে এই ধরনের প্রকল্প চালু আছে ।

এই প্রকল্পের উপকারিতা হল, বর্ষায় জমা হল নিয়ন্ত্রণ করা । পাশাপাশি ভূ-গর্ভস্থ জলের পরিমাণ বাড়াবে । জল কমায় যে ভূমিধসের আশঙ্কা থাকে সেই আশঙ্কা কমে যাবে । আর্সেনিকের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ হবে । ভূ-গর্ভস্থ যে বাস্তুতন্ত্র সেটার ভারসাম্য বজায় থাকবে । যেখানে বেশি জল জমে যায় সেখানে দ্রুত তা মাটির নিচে চলে যাবে ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, আগে এক সময় জলস্তর ছিল মাটির 10-15 ফুট নিচে । কলকাতায় দ্রুত গতিতে নগরায়ণ ঘটা ও জলাশয় বুজিয়ে দেওয়ার জেরে ভূ-গর্ভে আর জল ঢুকতে পারছে না ৷ ফলে রিচার্জ বন্ধ হয়ে গিয়েছে । তাই জলস্তর দ্রুত নিচে নামছে ৷ গরমকালে 50 ফুট নিচে চলে যাচ্ছে জলতল ।

এই বিষয়ে বিজ্ঞানী সুজিব কর জানান, জলতল নিচে চলে যাওয়াতে তা দূষিত হয়ে যাচ্ছে । বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভূ-গর্ভস্থ জলে আর্সেনিকের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে । শীত-গ্রীষ্ম প্রায় 100 ওয়ার্ডে এর প্রভাব পড়ে কমবেশি । শহরে গভীর নলকূপের মাধ্যমে ব্যপক পরিমাণে জল তোলা হচ্ছে । এক সময় অনেক পুকুর ছিল যার মাধ্যমে ভূ-গর্ভস্থ জল রিচার্জ হত সেটা বন্ধ হয়ে গিয়েছে । মাটির নিচের স্তরগুলিতে জল না থাকায় সেগুলো ফাঁপা হয়ে দুর্বল হয়ে যাচ্ছে । সমুদ্রের জলস্ফীতি ঘটায় দ্রুত মাটি সেই জল টানছে ৷ ফলে পানীয় জলের বদলে লবণাক্ত জল সেখানে জায়গা করে নিচ্ছে । এমন হলে ভবিষ্যতে পানীয় জল সংকট হবে শহরে । কলকাতা কর্পোরেশন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটা বিজ্ঞানভিত্তিক করতে পারলে রক্ষা পাবে শহর । পানীয় জল সংকট মিটবে । ভূমি ধস থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.