দার্জিলিং, 3 অগস্ট: ফের শৈলরানিতে পর্যটন কর লাগুর সিদ্ধান্ত নিল পুরসভা। এর ফলে দার্জিলিংয়ে ঘুরতে গেলে পর্যটকদের মাথাপিছু 20 টাকা করে দিতে হবে। 8 মাসের মাথায় আরও একবার কর লাগুর সিদ্ধান্তকে ঘিরে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে বিভিন্ন মহলে। এর আগে গত বছর নভেম্বর মাসে কর লাগু করেছিল দার্জিলিং পুরসভা। কিন্তু পর্যটন সংস্থা ও পর্যটন ব্যবসায়ীদের চাপের মুখে মাত্র 24 ঘণ্টার মধ্যে ওই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হয় ৷
এবার বর্ষার মরশুমে ফের একবার কর লাগুর সিদ্ধান্ত হয়েছে ৷ পর্যটন ব্যবসায়ী ও হোটেল মালিকদের সঙ্গে কোনওরকম আলোচনা ছাড়াই ওই কর লাগু করার অভিযোগ উঠেছে পুরসভার বিরুদ্ধে । আর এতে পাহাড়ের পর্যটনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়বে বলে মনে করছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা ৷ মূলত সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের মতো পুর পরিষেবা দেওয়ার জন্য ওই ট্যাক্স নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। তবে এই কর কারা তুলবে, কোথা থেকে এবং কোন জায়গায় এই কর তোলা হবে, তা নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে ৷
হিমালয়ান হসপিটালিটি ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের কার্যকরী কমিটির সদস্য সাধন রায় বলেন, "দার্জিলিং পুরসভার এই সিদ্ধান্তে হোটেল ও পর্যটন ব্যবসায়ীরা অখুশি। কোনও পর্যটক পাহাড়ে গেলে তাঁকে টোল ট্যাক্স থেকে শুরু করে হোটেলে জিএসটি দিতেই হয়। তার উপর আবার এই কর কেন সংগ্রহ করা হবে, তা আমরা বুঝতে পারছি না ৷"
রাজ্যের ইকো ট্যুরিজম কমিটির চেয়ারম্যান রাজ বসু বলেন, "এই নিয়ে চতুর্থবার দার্জিলিং পুরসভা এই সিদ্ধান্ত নিল। এতে ব্যবসায়ীরা চরম সমস্যায় পড়বেন। পুরসভার উচিত ছিল আগে পর্যটন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া।" কর লাগু প্রসঙ্গে দার্জিলিং পুরসভার চেয়ারম্যান দীপেন ঠাকুরি বলেন, "এবার টেন্ডার প্রক্রিয়া হয়ে গিয়েছে ৷ গতবার বিরোধিতার কারণে আমরা সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসি। তবে এবার আমরা কর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রয়োজনে কর কমানো হবে।"
পুরসভার কর লাগুর সিদ্ধান্ত নিয়ে যে শুধু ব্যবসায়ীরাই আপত্তি জানিয়েছেন তা নয়, রাজ্যের পুর আইন অনুযায়ীও কয়েকটি প্রশ্ন উঠেছে ৷ জানা গিয়েছে, আইন অনুযায়ী পুরসভা সর্বাধিক তিন টাকা কর লাগু করতে পারে। সেই জায়গায় কীভাবে 20 টাকা লাগু করা হল তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন । তবে দার্জিলিং পুরসভার এই কর লাগুর ইতিহাস বেশ পুরনো ৷ এর আগে 2006 সালে জিএনএলএফ ক্ষমতায় থাকার সময় 3 টাকা করে কর নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় ৷ পরে তা বাতিল করা হয়। এরপর 2011 ও 2012 সালে একইভাবে 10 টাকা কর লাগু হয়েছিল। সেটিও পরে প্রত্যাহার করা হয়। এবার আবার কর লাগুর সিদ্ধান্ত হল ৷