ঝাড়গ্রাম, 24 ফেব্রুয়ারি: চোদ্দ বছরের নাবালিকাকে ধর্ষণের মামলায় প্রতিবেশী এক প্রৌঢ়কে দোষীসাব্যস্ত করল ঝাড়গ্রাম পকসো আদালত। শুক্রবার আসামী বিলাস মাহাতোকে 20 বছর সশ্রম কারাদণ্ড, 20 হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে 2 মাস অতিরিক্ত কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন পকসো আদালতের বিচারক চিন্ময় চট্টোপাধ্যায়। একইসঙ্গে পকসো আইনের 8 ধারা অনুযায়ী 3 বছর সশ্রম কারাদণ্ড, 3 হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে 10 দিন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
পাশাপাশি ভারতীয় দণ্ডবিধি আইনের 506 ধারা অনুযায়ী 500 টাকা জরিমানা করা হয়েছে আসামী বিলাস মাহাতোকে। অপরদিকে, নির্যাতিতাকে 3 লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জামবনী থানা এলাকায় পাঁচ বছর আগে নাবালিকা ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে। অভিযোগ, 2019 সালের 7 ফেব্রুয়ারি নির্যাতিতা নাবালিকার বাড়িতে যায় বিলাস। নাবালিকার বাড়িতে তখন কেউ ছিলেন না ৷ এই সুযোগ নিয়ে নাবালিকাকে ধর্ষণ করে আসামী ৷
আর এই কথা কাউকে না জানানোর হুমকিও দেয় বিলাস। ভয় পেয়ে তেমনটাই করেনি নির্যাতিতা। এরপর ওই বছরই 19 এপ্রিল নাবালিকাকে জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে ফের ধর্ষণ করে দোষীসাব্যস্ত প্রৌঢ়। এরপরই শারীরিক অত্যাচার আর সহ্য করতে না-পেরে সবকথা পরিবারকে জানায় বছর চোদ্দ'র ওই নাবালিকা ৷ পরবর্তীতে 23 এপ্রিল জামবনী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যরা। তদন্তে নেমে পুলিশ দ্রুত বিলাসকে গ্রেফতার করে। একইসঙ্গে 2 মাসের মধ্যে আদালতে চার্জশিট দেয় জামবনি থানার পুলিশ।
2021 সালের জানুয়ারি মাস থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় বলে জানা গিয়েছে, আইনজীবীর তরফে। বৃহস্পতিবার বিলাসকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত ৷ গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার বিলাস মাহাতোর সাজাঘোষণা করেন বিচারপতি ৷ পকসো আদালতের সরকারি আইনজীবী শুভাশিস দ্বিবেদী বলেন, "11 জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। একইসঙ্গে 14টি গুরুত্বপূর্ণ নথি আদালতে পেশ করা হয়। বিচারক উভয়পক্ষের সওয়াল-জবাব শুনে 20 বছর সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন আসামীকে। দোষীসাব্যস্ত প্রৌঢ় 49 দিন জেলে বন্দি ছিল। কারাদণ্ডের সময় 49 দিন বাদ যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷" ঝাড়গ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপারেশন) গুলাম সারওয়ার বলেন, "সাক্ষীরা যাতে নির্ভয়ে সাক্ষ্য দিতে পারেন, সেইদিকে নজর দেওয়া হয়।"
আরও পড়ুন: