কলকাতা, 19 মে: প্রদেশ কংগ্রেসে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মোটেই নতুন কোনও বিষয় নয়। সোমেন মিত্র-মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বন্দ্ব কার্যত মিথে পরিণত হয়েছিল একসময়। তার আগে পরেও এমন ঘটনা দেখছে হাজি মহসিন স্কোয়ারের পুরনো বা মৌলালির নতুন রাজ্য দফতর। তবে রবিবার যে ছবি দেখা গেল, তা সাম্প্রতিক অতীতে অতিবিরল বললেও কম বলা হয় ৷ খোদ কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের পোস্টারে পড়ল কালির প্রলেপ ! শুধু তাই নয়, সেখানে লেখা হল, 'তৃণমূলের দালাল।' ঘটনার তীব্র নিন্দায় সরব হয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা। যদিও পরে সেই কালি মুছে দেওয়া হয়। শুধু নিয়ে দুধ দিয়ে ওই ছবি পরিস্কারও করা হয়।
ঘটনার সূত্রপাত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইন্ডিয়া জোট থাকা সংক্রান্ত মন্তব্যকে কেন্দ্র করে। তাঁকে চরম কটাক্ষ করেন প্রদেশ সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। আর সেই বিতর্কের জল গোড়ায় দিল্লি পর্যন্ত। ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকের পর এক সাংবাদিক সম্মেলনে কংগ্রেস সভাপতি মোল্লিকর্জুন খাড়গেকে এ সংক্রান্ত প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, মমতা ইন্ডিয়া জোটে থাকবেন কি না তা ঠিক করার অধীর চৌধুরী কেউ নন। ইন্ডিয়া জোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকবেন কি না বা কংগ্রেসের সঙ্গে হাঁটবেন কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে হাইকমান্ড। রীতিমত অধীরকে সতর্ক করা হয়।
যদিও দলীয় সভাপতির বক্তব্য প্রকাশ্যে আসার পরও নিজের অবস্থান পরিবরর্তন করেননি অধীর। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, "রাজ্যে যিনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) কংগ্রেস শেষ করছে তার সঙ্গে হাঁটার প্রশ্ন নেই। এটা মল্লিকার্জুন খাড়গের মতামত।" এই দুই সভাপতির মতান্তরে মাঝেই কালি লাগানোর ঘটনা ঘিরে তুলকালাম প্রদেশ কংগ্রেস দফতরে।
জানা গিয়েছে, আচমকাই প্রদেশ দফতর বিধান ভবনের বাইরে থাকা একটি ফ্লেক্সে মল্লিকার্জুন খাড়গের মুখে কালো কালি ছিটিয়ে দেওয়া হয়। পাশে লেখা তৃণমূলের দালাল। এই ঘটনা চোখে পড়তেই সেই ভিডিও চলে গিয়েছে দিল্লির নেতাদের কাছে। কংগ্রেসের একাংশের দাবি, অধীর চৌধুরীকে বিপাকে ফেলতেই এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এই প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেতা সৌম্য আইচ রায় বলেন, "যাঁরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তারা কংগ্রেস কর্মী হতে পারেন না। এটা অত্যন্ত নিন্দনীয়। কংগ্রেসের সর্ব ভারতীয় সভাপতি ছবির মুখে কালি দেওয়া মানে গোটা দলের মুখেই কালি দেওয়া। যাঁরা করেছেন তাঁরা চক্রান্ত করেই করেছেন। এভাবে কংগ্রেসের ভিতরে কোনও বিভাজন করা যাবে এটা স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই।"
আরও পড়ুন: