বংশীহারী, 18 জুন: আছে থানা ৷ থানার ভিতরে চেয়ার আছে, টেবিল আছে আর আছে সুন্দর রঙের আলমারি ৷ আছে দুই সিভিক ভলান্টিয়ারও ৷ যা নেই তা হল থানার পুলিশ অফিসার ৷ দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুর পুলিশ ফাঁড়ির ছবিটা এই রকমই ৷ শহরে পুলিশ ফাঁড়ি থাকা সত্ত্বেও এলাকাবাসীদের যে কোনও সমস্যায় পাড়ি দিতে হয় তিন কিলোমিটার পথ ৷ এলাকার থানার এমন অব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভ বাসিন্দাদের ৷
নারায়ণপুর এলাকার বাসিন্দা নয়ন সরকার বলেন, "এখানে অনেকদিন ধরেই এমন অবস্থা ৷ থানায় কোনও পুলিশ অফিসার নেই ৷ সমস্যা হলে অভিযোগ শোনার দুই সিভিক ভলান্টিয়ার ছাড়া আর কেউ নেই ৷ তিন কিলোমিটার দূরে বংশীহারী থানা ৷ এলাকায় যদি বড় কোনও চুরি বা অন্য কিছু হয়, তাহলে পুলিশ আসতে আসতে অভিযুক্ত পালিয়ে যাবে ৷ এমন অবস্থা কত দিন চলবে? আমরা এলাকার সুরক্ষার কথা ভেবে থানায় একজন পুলিশ অফিসার চাই ৷" গঙ্গারামপুর মহকুমার পুলিশ আধিকারিক দীপাঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, "নির্বাচনের কারণে পুলিশ ফাঁড়ি থেকে ফোর্স উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে । সাময়িক সমস্যা হয়েছিল । নির্বাচন শেষ হয়েছে, খুব শীঘ্রই পুলিশ ফাঁড়িতে আগের মতো কাজ চালু হবে ।"
স্টেশনে হারাল জীবনের সঞ্চয়, বৃদ্ধাকে টাকা সমেত ব্য়াগ ফিরিয়ে দিল রেল পুলিশ
মূলত, এলাকাবাসীদের দাবি মেনে শহরে 4 নম্বর ওয়ার্ডের সেলিমাবাদ রাজ্য সড়কের ধারে সরকারি জায়গায় আনুমানিক 10 লক্ষ টাকা ব্যয়ে তৈরি হয় ঝা চকচকে পুলিশ ফাঁড়ি। গত 7 অগস্ট এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে ফিতে কেটে ফলক উন্মোচনের মধ্যে দিয়ে পুলিশ ফাঁড়ি চালুও হয়। সেই সময় উপস্থিত ছিলেন ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র। এছাড়াও, উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণা ও পুলিশ সুপার রাহুল দে ৷ উদ্বোধনের পর থেকে সেখানে পুলিশ অফিসার বসতেন। কিন্তু কিছুদিন পর থেকে সেখানে আর কোনও পুলিশ অফিসারকে দেখা না গেলেও দু’জন সিভিক ভলান্টিয়ারই সর্বক্ষণ থাকছেন। তবে মাঝেমধ্যে বংশীহারী-সহ বুনিয়াদপুর পুরসভা এলাকায় ডিউটি করার সময় কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেওয়ার জন্য পুলিশ ফাঁড়িতে আসেন ডিউটিরত অফিসার-সহ বেশ কিছু সিভিক পুলিশ।
আসলে শহরে চুরি, ছিনতাই ও দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব রুখতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়াও আশেপাশের দুটি পঞ্চায়েত এলাকা থেকে কম সময়ে অভিযোগ জানানোর জন্য তৈরি হয়েছিল পুলিশ ফাঁড়ি। উদ্দেশ্য মহৎ হলেও কার্যক্ষেত্রে ঠিক তার উলটো হয়েছে। দিনের বেলা ফাঁড়ির বাইরে থেকে মেইন গেট থাকে বন্ধ । ভিতরের অফিসার রুম, অফিস রুম ও স্টাফ রুম, এই তিনটি ঘরে দরজা ভেজানো। ভেতরে দুই সিভিক ভলান্টিয়ার বসে থাকেন। বাইরে থেকে মনে হবে, পুলিশ ফাঁড়ি বন্ধ। কোনও পুলিশ আধিকারিক নেই, যাঁকে অভিযোগ জমা দেওয়া যাবে। তিনটি শিফটে দুইজন সিভিক আসছেন, সময় শেষ হলে বাড়ি ফিরছেন। এলাকার থানার এমন অবস্থা দেখেই ক্ষোভ বাড়ছে এলাকার মানুষদের মধ্যে ৷