বলাগড়, 17 সেপ্টেম্বর: আরজি কর-কাণ্ডের সুবিচার চেয়ে ট্রেনের মধ্যে বিশ্বকর্মা পুজোতে মাতলেন নিত্যযাত্রীরা । মঙ্গলবার হাওড়া-কাটোয়া লাইনের একটি লোকাল ট্রেনে এই দৃশ্য দেখা গেল । রীতিমতো পুরোহিত ডেকে মন্ত্রপাঠ করে পুজোর আয়োজন করা হয় এ দিন । চলন্ত ট্রেনের কামরাতেই ঢাক ঢোল সহযোগে চলে পুজো । ফুল দিয়ে সাজানো হয় ট্রেনের কামরাকে ৷ বিশ্বকর্মা পুজোর পর নিত্যযাত্রীদের মিষ্টিও বিতরণ করা হয় । যাত্রীদের তরফে সুবিচার চেয়ে উঠল স্লোগান ।
বিশ্বকর্মা পুজো দিয়ে বাংলায় উৎসবের মরশুমের সূচনা হয় । কিন্ত এ বছর পুজোর জৌলুস অনেক কম ৷ কারণ আরজি কর হায়পাতালে চিকিৎসক ছাত্রীকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় শোকের পরিবেশ গোটা রাজ্যে । প্রতিবাদে সামিল আট থেকে আশি ৷ প্রতিবাদের মাঝেই একটা দিন উৎসবে মেতে উঠলেন ট্রেনের নিত্যযাত্রীরা ৷
কাটোয়া থেকে একটি লোকাল ট্রেন ভোর 5টা 40 মিনিটে ছেড়ে হাওড়ায় পৌঁছয় 8টা 45 মিনিটে । প্রতিদিন দীর্ঘ 145 কিলোমিটার এই পথ নিত্যযাত্রীরা একসঙ্গে কাটান । তাঁরা কাটোয়া লোকালের চার নম্বর কামরার সকলেই নিত্যযাত্রী । কেউ সরকারি কর্মচারি, তো কেউ আবার কলকাতার বড়বাজারের খুব কম বেতনে দোকানে হেল্পারের কাজ করেন । বছরের পর বছর তাঁরা একসঙ্গে ট্রেনে যাতায়াত করছেন ৷ এরই সঙ্গে প্রায় 31 বছর ধরে পুজো করে আসছেন নিত্যযাত্রীরা ।
রোজকার নানা কাজকর্মে, নানা ভালো মন্দের মধ্যেই তাঁরা সকলে একই কামরায় যাতায়াত করেন । তাই নিত্যযাত্রীরা একটি পরিবারের মতো হয়ে উঠেছেন ৷ এর থেকেই প্রত্যেক বছর বিশ্বকর্মা পুজো করে থাকেন তাঁরা ৷ এবারও তার অন্যথা হল না ৷ এবারও মূর্তি কিনে এনে চলন্ত ট্রেনের কামরায় পুজো করলেন নিত্যযাত্রীরা । এছাড়াও ভেন্ডার কামরায় বিশ্বকর্মার ছবি দিয়েও পুজো সারেন ব্যবসায়ীরা । নিজেরাই চাঁদা তুলে এই পুজোর ব্যবস্থা করেন সকলে ।
তবে পুজোর জন্য ট্রেন থেমে থাকে না ৷ নির্দিষ্ট সময়ে সে তার গন্তব্যে পৌঁছয় । তারই মাঝে চলে মন্ত্রপাঠের সঙ্গে বিশ্বকর্মা পুজো ৷ এক যাত্রী বলেন, "31 বছর ধরে আমরা পুজো করে আসছি । এ বছর আমরা পুজো করছি ৷ তার সঙ্গে আরজি কর-কাণ্ডের সুবিচার চাই আমরা ।"