কলকাতা, 25 অক্টোবর: ঘূর্ণিঝড় দানার কারণে সারারাত জেগে নবান্ন থেকে পরিস্থিতির উপর নজরদারি চালিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাাধ্যায় ৷ সকালেও সমানভাবে সক্রিয় ভূমিকায় তিনি ৷ নবান্নে বসেই দুই মেদিনীপুর, দুই 24 পরগনা, হুগলি, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া-সহ 7টি জেলার জেলাশাসকদের সঙ্গে ফোনে কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ নিলেন সেখানকার পরিস্থিতির খোঁজ ৷ দুপুরে জেলাশাসকদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি বৈঠকে বসবেন মমতা ৷
এখনও পর্যন্ত যা খবর পাওয়া যাচ্ছে, তাতে ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে সবচেয়ে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় । ঘূর্ণিঝড়ের ল্যান্ডফলের সময় দিঘাতেও রীতিমতো তাণ্ডব চলেছে । ওই জেলায় ঘূর্ণিঝড়ের বেশি প্রভাব পড়েছে মন্দারমণি এবং তাজপুরে । মন্দারমণিতে নিচু এলাকায় প্রচুর পরিমাণে নোনো জল ঢুকে গিয়েছে । ঝড়ের দাপটে প্রচুর গাছপালা ভেঙে পড়েছে । কলকাতায় ঘূর্ণিঝড়ের সেরকম প্রভাব না পড়লেও শুক্রবার সকাল থেকেই বৃষ্টি হচ্ছে । তবে উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে বৃষ্টি ও ঝড়ের প্রভাব পড়েছে সবচেয়ে বেশি ।
অন্যদিকে, দক্ষিণ 24 পরগনার বিভিন্ন জায়গা থেকে ক্ষয়ক্ষতির খবর এসেছে নবান্নে । বকখালিতেও প্রবল জলোচ্ছ্বাস, বৃষ্টির খবর এসেছে । কোনও কোনও জায়গায় নদী বাঁধ ভেঙে জল ঢুকে গিয়েছে । গোসাবা, সাগর, নামখানা সর্বত্রই কমবেশি ক্ষয়ক্ষতির খবর আসছে । উত্তর 24 পরগনার হিঙ্গলগঞ্জ থেকেও প্রবল বৃষ্টিপাতের খবর এসেছে । বেশকিছু এলাকা প্লাবিতও হয়েছে । এ দিন সকালে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, কত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা এই মুহূর্তে পরিষ্কার করে বলা সম্ভব নয় । যত বেলা বাড়বে অ্য়াসেসমেন্ট হবে । তারপরে সরকারের তরফে আনুষ্ঠানিকভাবে সেই খবর জানিয়ে দেওয়া হবে ।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এও জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়ের বিপদের কথা আগে থেকে আন্দাজ করেই প্রশাসনের তরফে 2 লক্ষ 11 হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসা হয়েছিল । এই মুহূর্তে প্রায় দেড় লক্ষ মানুষ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের ত্রাণ শিবিরে রয়েছেন । 1 হাজার 227টি ত্রাণ শিবির চলছে । সরকার সক্রিয় রয়েছে । বৃহস্পতিবার রাতে ঝড়ের জন্য যেখানে যেখানে গাছ ভেঙে পড়েছে সেগুলোর দ্রুত সরিয়ে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে । যেসব এলাকায় বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে, সেখানে অস্থায়ীভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।
ঘূর্ণিঝড় দানার কারণে সারারাত নবান্নেই ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । দফায় দফায় তিনি বিভিন্ন জেলায় ফোন করে ঝড়ের গতিপ্রকৃতি এবং ক্ষয়ক্ষতির খোঁজ নিয়েছেন । কখনও কন্ট্রোল রুমে, কখনও নিজের ঘরে বসেই প্রশাসনিক সব ব্যবস্থার তদারকি করেছেন তিনি । রাতভর মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেই নবান্নে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তীও ৷ ছিলেন বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের সচিব দুষ্মন্ত নারিওয়াল ।
শুক্রবার সকাল আটটা নাগাদ নবান্নে চলে এসেছেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ । যতদূর খবর পাওয়া যাচ্ছে, এই মুহূর্তে মুখ্যসচিব, মুখ্যমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রসচিব সকলে মিলে বিভিন্ন জেলা থেকে ক্ষয়ক্ষতির খবরাখবর নিচ্ছেন । বৃহস্পতিবারের পর এ দিনও নবান্নেই রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।