সন্দেশখালি, 25 ফেব্রুয়ারি: রবিবার নতুন করে উত্তপ্ত হল সন্দেশখালি ৷ ফের গ্রামবাসীদের রোষের মুখে শাহজাহান-ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা অজিত মাইতি। তাঁকে দেখে রীতিমতো ধাওয়া করলেন ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা। জনরোষ থেকে বাঁচতে স্থানীয় এক সিভিক ভলান্টিয়ারের বাড়িতে আশ্রয় নেন শাসক নেতা। সেখানেও আছড়ে পড়ে গ্রামবাসীদের ক্ষোভ।যার জেরে তপ্ত হয়ে ওঠে সন্দেশখালির বেড়মজুর অঞ্চল। ঘটনাস্থলে পুলিশ এলেও পরিস্থিতি উত্তপ্তই রয়েছে ৷
আন্দোলনকারীদের দাবি, শাহজাহান-ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা অজিত মাইতিকে তাঁদের হাতে তুলে দিতে হবে। তাঁরাই যা শাস্তি দেওয়ার তা দেবেন। যদিও তাতে গুরুত্ব না দিয়ে ক্ষুদ্ধ মহিলাদের বুঝিয়ে সেখান থেকে সরানোর প্রক্রিয়া শুরু করে পুলিশ।তৃণমূল নেতা অজিত মাইতি দাবি করেন, "আমি নির্দোষ। জমি দখলের বিষয় জানতাম না। জ্ঞানত কোনও কেলেঙ্কারিতে যুক্ত নই। কে বা কারা যুক্ত জানি না। ওঁরা আইনের দ্বারস্থ হোক।"
তিনি আরও বলেন, "আইন অনুযায়ী যে সাজা দেওয়া হবে মেনে নেব। আমি কোনও জমি নিইনি। তদন্ত করে দেখুক। যদি জমি নিয়ে থাকি ফেরত দিয়ে দেব। সিরাজ কোথায় জানি না ৷ শুক্রবার যাঁরা আমার বাড়িতে গিয়েছিল সেই 5-6 জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছি।" শুধু তাই নয়, এদিন সুর বদল করে বিজেপি থেকে তাঁকে জোর করে তৃণমূলে আনা হয়েছিল বলেও বিস্ফোরক দাবি করেছেন শাহজাহানের 'দোসর' এই তৃণমূল নেতা।
অন্যদিকে তৃণমূল নেতার পাশে দাঁড়ালেন না সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। কার্যত, অজিত মাইতির দায় ঝেড়ে ফেলে অঞ্চল সভাপতির পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমের সামনে দাবি করেন তিনি। আপাতত এলাকার দুই প্রবীণ নেতাকে বেড়মজুর অঞ্চলে সংগঠন দেখার দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে বলে খবর তৃণমূল সূত্রে।
উল্লেখ্য, এদিন সকাল থেকে ফের প্রমিলা বাহিনীর দফায় দফায় বিক্ষোভে উত্তেজনা ছড়িয়েছে সন্দেশখালির বেড়মজুর 1 নম্বর পঞ্চায়েত এলাকায়। মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক এবং সুজিত বসুর আসার খবর পেয়ে এদিন সকালেই বেড়মজুর বটতলায় রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন গ্রামের মহিলারা। শাহজাহান এবং তাঁর বাহিনীর বিরুদ্ধে ভুড়ি ভুড়ি অভিযোগ তুলে সরবও হয়েছেন তাঁরা। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে এদিন ফের গ্রামবাসীদের রোষের মুখে পড়তে হয় শাহজাহান ঘনিষ্ঠ বেড়মজুরের তৃণমূল নেতা অজিত মাইতিকে।
সূত্রের খবর, এদিন সন্দেশখালিতে রাজ্যের দুই মন্ত্রীর কর্মসূচিতে গিয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকে ফেরার সময় হঠাৎই অজিত মাইতিকে দেখতে পেয়ে লাঠি-ঝাঁটা নিয়ে তাড়া করেন মহিলারা। পালিয়ে অন্যের বাড়িতে ঢুকে পড়েন তৃণমূল নেতা। কোলাপসিবল গেট বন্ধ করে ঘরের ভিতরে পায়চারি করতে থাকেন আতঙ্কিত শাসক নেতা। তখন তাঁর গ্রেফতারির দাবিতে বাড়ির বাইরে জড়ো হওয়া গ্রামের মহিলাদের চলে বিক্ষোভ। সেই বিক্ষোভ কার্যত এদিন জনরোষের চেহারা নেয়। এরপরই বিক্ষোভকারীদের আটকানোয় শুরু হয় পুলিশের সঙ্গে বচসা,ধস্তাধস্তি। তবে আপাতত পরিস্থিতি শান্ত হলেও অজিত মাইতির গ্রেফতারের দাবি থেকে সরছেন না গ্রামবাসীরা।
আরও পড়ুন:
1. সন্দেশখালি-কাণ্ডে গ্রেফতার স্থানীয় আইএসএফ নেত্রী
2. সন্দেশখালির সংকীর্তণে সুজিত-পার্থ, 'ইজ্জত নিয়ে টানাটানির সময় কোথায় ছিলেন ?', প্রশ্ন মহিলাদের