বারাসত, 17 ডিসেম্বর: এসএফআই ও টিএমসিপি-র মধ্যে সংঘর্ষের অভিযোগ উঠল বারাসত কলেজের গেটের বাইরে ৷ দু’পক্ষের মারামরিতে আহত হলেন দু’তরফের বেশ কয়েকজন ৷ রক্তাক্ত হলেন দুই পুলিশ কর্মীও ৷ মঙ্গলবার দুপুরের ঘটনায় পরিস্থিতি সামাল দিতে নামানো হয় পুলিশ বাহিনী ৷
উল্লেখ্য, আরজি কর-কাণ্ডের বিচারের দাবিতে সোমবার ও মঙ্গলবার সোদপুর ট্রাফিক মোড় থেকে মধ্যমগ্রাম চৌমাথা হয়ে বারাসত পর্যন্ত এসএফআই 'জাস্টিস মার্চে'র ডাক দেয় ৷ এদিন ছিল দ্বিতীয় পর্যায়ের সেই মিছিল ৷ মধ্যমগ্রাম চৌমাথা থেকে শুরু হয়ে বারাসতের দিকে এগোতে থাকে মিছিলটি ৷
দুপুর দু'টো নাগাদ এসএফআইয়ের মিছিল 12 নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে পৌঁছে যায় বারাসত কলেজের সামনে ৷ এরপর কলেজর গেটের সামনে নির্যাতিতা পড়ুয়ার বিচার চেয়ে স্লোগান দিতে থাকেন এসএফআই সমর্থকরা ৷ কলেজের ভিতর থেকে পাল্টা স্লোগান তোলে টিএমসিপি ৷
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে কয়েকজন পুলিশ কর্মী পৌঁছান ৷ তাঁরা কলেজের গেট আগলে দু’পক্ষের মাঝে দাঁড়িয়ে পড়েন ৷ সাহায্যে এগিয়ে আসে কলেজের নিরাপত্তারক্ষীরাও ৷ কিন্তু, তারই মধ্যে দু’তরফে বচসা ও স্লোগান জারি থাকে ৷ অভিযোগ, এসবের মাঝেই এসএফআইয়ের কয়েকজন সমর্থক জোর করে কলেজের ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করেন ৷ তখনই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন দুই ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা ৷
পুলিশ দু’পক্ষকেই নিরস্ত্র করার চেষ্টা শুরু করে ৷ এসএফআইয়ের সদস্যদের সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় ৷ এরপর সেই মিছিল 12 নম্বর জাতীয় সড়কের পরিবর্তে ঘুরিয়ে দেওয়া হয় অন্য একটি রাস্তা দিয়ে ৷ সেই রাস্তা ধরে সিপিএমের ছাত্র সংগঠনের মিছিল এগিয়ে যায় বারাসত সরকারি কলেজের দিকে ৷
সেখানে মিছিল পৌঁছতেই ফের ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় ৷ নিরাপত্তারক্ষীরা কলেজ গেটের দরজা বন্ধ করে দেন ৷ বাইরে থেকে তখন স্লোগান দিতে থাকেন এসএফআই সদস্যরা ৷ পাল্টা কলেজের ভিতর থেকেও স্লোগান দেয় শাসকদলের ছাত্র সংগঠন ৷ কিন্তু, এখানেও বন্ধ গেটের দরজা খুলে জোর করে এসএফআই সমর্থকরা ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ ৷ যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় কলেজ চত্বরে ৷
দু’তরফেই মারপিটের অভিযোগ উঠেছে ৷ ঘটনায় একজন এসএফআই কর্মী আহত হন ৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে আহত হন দুই পুলিশ কর্মী ৷ তাঁদের মুখ থেকে অনবরত রক্ত ঝরতে থাকে বলে অভিযোগ ৷ শেষমেশ পরিস্থিতি সামাল দিতে ব়্যাফ-সহ পুলিশবাহিনী নামানো হয় ৷
এই বিষয়ে রাজ্য তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কার্যকরী কমিটির সদস্য লিংকন মল্লিক বলেন, "কলেজের ভিতরে পরীক্ষা চলছে ৷ ঠিক সেই সময় সিপিএমের ছাত্র সংগঠনের সমর্থকরা গোলমাল শুরু করে ৷ আমরা তাদের বোঝানোরা চেষ্টা করেছিলাম ৷ ওঁরা যদি রাজনৈতিকভাবে কিছু করতে চায়, তাহলে স্বাগত ৷ কিন্তু, এভাবে গা-জোয়ারি করে কলেজের পরিবেশ খারাপ করার চেষ্টা মানব না ৷
যদিও, পাল্টা হামলার অভিযোগ এনেছেন এসএফআইয়ের উত্তর 24 পরগনা জেলা সম্পাদক আকাশ কর ৷ টিএমসিপি-কে পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, "আমাদের কর্মীর রক্ত ঝরেছে ৷ যেদিন এই কলেজে ভোট হবে, সেদিন টিএমসিপিকে বুঝিয়ে দেব, কীভাবে ডান্ডা দিয়ে ঠান্ডা করতে হয় ৷ ওদের এই গুন্ডামি বরদাস্ত করব না আমরা ৷"
