কলকাতা, 26 অগস্ট: আরজিকর কাণ্ডে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পাশাপাশি হাসপাতালে দেদার দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত সমানভাবে করছে সিবিআই। আর সেই তদন্তে এবার আরজিকর হাসপাতালের তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের অ্যাডিশনাল সিকিউরিটি অর্থাৎ বডিগার্ডের খোঁজ পেল সিবিআইয়ের দুর্নীতি দমন শাখার গোয়েন্দারা।
তদন্তে সন্দীপ ঘোষের এই অ্যাডিশনাল সিকিউরিটি গার্ড সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে চোখ কপালে ওঠার যোগার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দাদের। সিবিআইয়ের দুর্নীতি দমন শাখার গোয়েন্দাদের দাবি, এই ভদ্রলোকের নাম আফসার খান। তিনি নাকি আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের অ্যাডিশনাল সিকিউরিটি গার্ড ছিলেন। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে যে, এই আফসার খানের সঙ্গে সন্দীপ ঘোষের সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর পরেই সন্দীপ ঘোষ যখন আরজি কর হাসপাতালের অধ্যক্ষ ছিলেন সেই সময় নাকি আইনের কোনও তোয়াক্কা না করেই সরকারি জমিতে কোনও রকম টেন্ডার পাস না করিয়েই আফসার খানকে এটি ক্যাফে বানিয়ে দিয়েছিলেন । সিবিআইয়ের অভিযোগ, একেবারে বেআইনি ভাবেই গোটা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন সন্দীপ।
এই ঘটনার পারিপার্শ্বিক তথ্য-প্রমাণ এবং আরজিকর হাসপাতালের একাধিক স্বাস্থ্যকর্মী থেকে শুরু করে শিক্ষক ও সঙ্গে কথা বলে করে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, নিজের কাছের লোক আফসার খানকে এই ক্যাফে বানানোর ব্যবস্থা করে দেওয়ার পর থেকে বিভিন্ন মহল থেকে বিভিন্ন অভিযোগ আসতে থাকে। পরে অবশ্য একাধিক দিক থেকে চাপ আসার ফলে আফসার খানকে সরিয়ে দেন সন্দীপ ।
রবিবার সকালবেলা আরজি কর হাসপাতালের এমএসবিপির ঘরে পৌঁছে যায় সিবিআই। সেখানে গত তিন মাসে কোন চিকিৎসক কোন ওয়ার্ডে কখন কত ক্ষণ ছিলেন, তার যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করেন। পাশাপাশি, সন্দীপ ঘোষের ব্যবহার করা কম্পিউটার একাধিক দলিল-দস্তাবেজ, সমস্ত কিছু আরজি কর হাসপাতাল থেকে বার করে সিজিও কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় সিবিআই। বেরোনোর সময় সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে অধিকারিকরা বলে যান, "বহুত কুছ মিলা ।"
এই ঘটনায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দাদের অনুমান, মাথায় বড়সড়ো প্রভাবশালির হাত না থাকলে কোনও ব্যক্তির পক্ষে এত বারবারান্ত সম্ভব নয় । ফলে, আরজি করে নানা অনিয়ম, দুর্নীতিতে সন্দীপের সঙ্গে আর কারা কারা রয়েছেন, তা-ও জানার চেষ্টা করছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা।