কলকাতা, 18 সেপ্টেম্বর: ডিওয়াইএফআই নেতা কলতান দাশগুপ্তকে কেন গ্রেফতার করা হল, তা রাজ্যের কাছে জানতে চাইলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ । তাঁর প্রশ্ন, একজনের বক্তব্যের ভিত্তিতে আর একজনকে কি গ্রেফতার করা যায় ? এর কোনও আইনগত ভিত্তি আছে, নাকি এটা ঔপনিবেশিক বদভ্যেস ? আগামিকাল ফের এই মামলার শুনানি হবে ।
কলতান দাশগুপ্তের পক্ষের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এদিন বলেন, "একটি অডিয়ো রেকর্ড নিয়ে মূল সমস্যা । দাবি করা হয়েছে, এই অডিয়ো রেকর্ডে ডাক্তারদের আন্দোলনে হামলা করা হবে বলে বলতে শোনা গিয়েছে ।" অভিযোগ, ওই টেলিফোন রেকর্ডে শোনা গিয়েছে সঞ্জীব দাস নামে এক ব্যক্তি ও কলতান দাশগুপ্তের কথোপকথন ।
কিন্তু আইনজীবী বিকাশরঞ্জনের দাবি, "এই ধরনের কোনও কথোপকথন হয়নি । এর সঙ্গে কলতানের কোনও যোগ নেই । সঞ্জীব দাসের সঙ্গে তাঁর কোনও কথাই হয়নি । অথচ সেই ভিত্তিতে ইলেকট্রনিক কমল্পেক্স থানায় এফআইআর দায়ের হয় এবং বিএনএস 173 ধারায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয় । এফআইআরে যে পেনড্রাইড দেওয়া হয়েছিল, সেটা কোথা থেকে এল ?"
একথা শুনে বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ রাজ্যের আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, "আমরা তাহলে কি এবার থেকে অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন এলে ধরব না ? কারণ এটা তো ভয়ের ব্যাপার ? এভাবে তো যে কাউকে ফাঁসিয়ে দেওয়া হতে পারে ?" যদিও রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত বলেন, "ঘটনাটি কী ঘটেছিল, এবং কখন ঘটেছিল সেটা দেখুক আদালত ।"
বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য তখন বলেন, "আমরা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ভয়েস টেস্টের আবেদন জানাব এবার ।" তখনই বিচারপতির প্রশ্ন, "টেলিফোনিক কথোপকথনের ভিত্তিতে কাউকে কি গ্রেফতার করা যায় ?" বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের কথায়, "এই ধরনের গ্রেফতার সংবিধান প্রদত্ত মৌলিক অধিকার বিরোধী । ম্যাজিস্ট্রেটও চাইলে পদক্ষেপ করতে পারেন ।"
বিচারপতি তখন জানতে চান যে, "কলতান তাহলে সঞ্জীব দাসকে চেনেনই না ?" জবাব দিতে গিয়ে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, "আমি যদি অপরিচিত কারও ফোন ধরি এবং কথা বলি, তার জন্য কি আমাকে গ্রেফতার করা যায় ? অপর প্রান্তের বক্তার বক্তব্যের দায় কি আমার ?"