কলকাতা, 21 অগস্ট: আনন্দপুরের মৃত মহিলার সঙ্গে ছিল এক শিশু ৷ ঘটনার পর থেকে ওই শিশু নিখোঁজ বলে অভিযোগ । ঘটনাস্থলে এসেছেন কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড বিভাগের গোয়েন্দারা । ওই মহিলার পরিবারের সদস্যরা লালবাজারে আসেন । লালবাজারের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন । তাঁদের দাবি, ওই মহিলাকে খুন করা হয়েছে । পাশাপাশি ওই মহিলা যখন বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন সেই সময় তাঁর সঙ্গে একটি শিশু ছিল বলে জানা গিয়েছে ।
মৃত মহিলার নাম রেহানা খাতুন । তিনি নারকেলডাঙা থানা এলাকার বাসিন্দা ৷ তাঁর খুনের ঘটনায় গাড়িচালক ভিকি সাউকে গ্রেফতার করেছে লালবাজার । ভাড়া নিয়ে গণ্ডগোলের জেরেই খুন বলে মনে করা হচ্ছে । তবে ঘটনার পর থেকে এক শিশুকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এই বিষয় নিয়ে ভিকিকে লাগাতার জেরা করছে কলকাতা পুলিশ । ভিকির বাড়ি তপসিয়া থানা এলাকায় । আজ সন্ধ্যায় ভিকিকে গ্রেফতার করেন লালবাজারের হোমিসাইড বিভাগের গোয়েন্দারা ।
আরজি কর-কাণ্ডের মাঝে কলকাতায় ফের মহিলার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয় বুধবার ৷ এ দিন সাতসকালে রাস্তার ধারে একটি ঝোপ থেকে উদ্ধার হয় ওই মহিলার রক্তাক্ত দেহটি । ঘটনাটি ঘটেছে আনন্দপুর থানা এলাকায় । এই ঘটনার তদন্ত নেমেছেন কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড বিভাগের গোয়েন্দারা । এলাকাটি নির্জন হওয়ায় সেখানে ওই মহিলাকে কেউ ফেলে গিয়েছে বলে পুলিশের প্রাথমিকভাবে অনুমান । মহিলার পরিচয় জানতে মৃতের ছবি কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে পার্শ্ববর্তী থানা ও বিভিন্ন পুলিশ কমিশনারেট এবং জেলা পুলিশে ইমেইল করে পাঠানো হয় ।
জানা গিয়েছে, এ দিন সকালবেলা আনন্দপুর এলাকায় বাইপাসের ধারে একটি জঙ্গলে ওই মহিলাকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন প্রাতঃভ্রমণকারীরা । তাঁরাই সঙ্গে সঙ্গে খবর দেন স্থানীয় আনন্দপুর থানায় । পুলিশ এরপর এসে ওই মহিলাকে রক্তাক্ত অবস্থায় সেখান থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায় । কিন্তু সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয় ।
পুলিশ সূত্রে খবর, মহিলার দেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে । বিশেষত তাঁর বুক, পিঠ, হাত, কোমর এবং পা ও মাথায় গভীর আঘাতের চিহ্ন মিলেছে । পুলিশের প্রাথমিকভাবে অনুমান, মহিলাকে হত্যা করা হয়েছে । ইতিমধ্যেই মহিলার দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ । ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পরেই সঠিকভাবে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে জানা যাবে ।
জানা গিয়েছে, যেখান থেকে দেহটি উদ্ধার হয়েছে সেখানে কোনও রকমের সিসিটিভি ক্যামেরা নেই ৷ যার ফলে তদন্তে নেমে বিপাকে পড়েছে কলকাতা পুলিশ । ইতিমধ্যেই আনন্দপুর থানায় আসেন কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড বিভাগের গোয়েন্দারা ।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি উত্তর কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ ওঠে ৷ সেই ঘটনার তদন্তে নেমেছিল লালবাজার ৷ পরে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের হাতে ৷ ফলে ওই ঘটনায় অনেকটাই ব্যাকফুটে কলকাতা পুলিশ । তাদের সুপ্রিম কোর্টেরও রোষের মুখে পড়তে হয়েছে ৷ সেই রেশ কাটতে না-কাটতেই শহরে ফের মহিলার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হল ৷ জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় অতি তৎপরতার সঙ্গে তদন্ত করতে চাইছে লালবাজার । দেহ উদ্ধারের ঘটনায় ইতিমধ্যেই স্থানীয় থানা থেকে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে ।