কলকাতা, 30 জুলাই: চলতি বিধানসভার অধিবেশনেই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে চলেছে বিধানসভার প্রধান বিরোধীদল বিজেপি । মঙ্গলবার বিজেপির তরফ থেকে 50 জন বিধায়কের স্বাক্ষর করা একটি অনাস্থা প্রস্তাব বিধানসভার সচিবের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে । বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘আমরা অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিয়েছি । আমরা চাই বিধানসভায় আর যে কয়দিন আছে, তার মধ্যেই এই অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হোক ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা আগে একবার এই অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিলাম, অধ্যক্ষ মহোদয় বিষয়টি বিবেচনার জন্য উপাধ্যক্ষের কাছে দিয়েছিলেন । তিনি এই প্রস্তাব বাতিল করেন । তবে আমরা দেখেছি এরপরেও অধ্যক্ষের মনোভাবের কোনও বদল ঘটেনি । তিনি যে কাজগুলি এই অধিবেশনেও করছেন, তা শুধু একটি দলকে সমর্থন করা নয়, তিনি সংবিধানকেও মানছেন না । আর সেই জায়গা থেকেই আমরা এই অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আসছি ।’’
এদিকে বিজেপির আনা এই অনাস্থা প্রস্তাব আদৌ গৃহীত হবে কি না, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে । সাধারণত পরিষদীয় রীতি হল, অনাস্থা প্রস্তাব আনতে গেলে অন্তত 30 জন বিধায়কের স্বাক্ষর থাকতে হবে ৷ দ্বিতীয়ত, আবেদন জমা পড়ার পর থেকে টানা 14 দিন অধিবেশন চলতে হবে । যেহেতু এই অধিবেশন আগামী 5 অগস্ট শেষ হয়ে যাচ্ছে । সেক্ষেত্রে 14 দিন টানা অধিবেশনের সময় থাকছে না । আর সেই জায়গা থেকেই এই অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা খারিজ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই সবচেয়ে বেশি ।
এই নিয়ে রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘অনাস্থা যে কেউ আনতেই পারেন । কিন্তু তার একাধিক নিয়ম আছে । আর বিধানসভার অধিবেশন আগামী 5 অগস্ট অবধি চলবে । তাই বিরোধীরা আদৌ অনাস্থা পেশের সুযোগ পাবেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে ।’’ যদিও এই অনাস্থা নিয়ে কিছু প্রতিক্রিয়া দেননি বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় ।
প্রসঙ্গত, অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এই নিয়ে চতুর্থবার অনাস্থা প্রস্তাব জমা পড়ল বিধানসভায় । অতীতে আব্দুল মান্নান যখন বিরোধী দলনেতা ছিলেন, সেই সময় দু’বার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা পড়েছিল । কিন্তু একটানা 14 দিন অধিবেশন না চলার কারণে টেকনিক্যাল গ্রাউন্ডে সেই প্রস্তাব খারিজ হয়ে যায় । একইভাবে আগে একবার বিজেপির তরফ থেকেও অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছিল, সেক্ষেত্রেও এই অনাস্থা প্রস্তাব টেকনিক্যাল গ্রাউন্ডেই খারিজ করে দেন উপাধ্যক্ষ । এবার এই অনাস্থা প্রস্তাবে পরিণতি শেষ পর্যন্ত কি হয় সেটাই এখন দেখার !