আসানসোল, 12 এপ্রিল: আসানসোল জুড়ে গুঞ্জন ছিল জিতেন্দ্র তেওয়ারি লোকসভা ভোটের প্রার্থী হতে পারেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁকে প্রার্থী করেনি বিজেপি। আর প্রার্থী না হওয়ায় বিজেপির একাংশের নেতা-কর্মীরা সোশাল মিডিয়ায় জিতেন্দ্র তেওয়ারিকে নিয়ে ট্রোল করতে নেমে পড়েন। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ জিতেন্দ্র অনুগামীরা। তারা সরাসরি এই বিষয়ে দলেরই কোনও নেতার মদত আছে বলে অভিযোগ তুলেছেন। ভোটের আগে ঘরোয়া বিবাদ মেটাতে এখন বিজেপির কপালে ভাঁজ।
পবন সিং প্রার্থী পদ গ্রহণ না-করার পর আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের জন্য বিজেপি প্রার্থী হওয়ার দৌঁড়ে নাম ছিল জিতেন্দ্র তেওয়ারির। জল্পনা এমন জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছিল অনেকেই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলেন আসানসোল থেকে বিজেপির প্রার্থী হচ্ছেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জল্পনায় জল ঢেলে বিজেপি আসানসোল কেন্দ্রের জন্য প্রার্থী হিসেবে সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়ার নাম ঘোষণা করেছেন। আর এই ঘোষণার পরেই বিজেপির একাংশ নেতারা সোশ্যাল মিডিয়ায় জিতেন্দ্রকে ট্রোল করতে শুরু করছেন।
সোশাল মিডিয়ায় একটি পরিচিত গান "হলো না..., হলো না..." বাজিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন বিজেপি নেতা জিতেন চট্টোপাধ্যায়। তাঁর এই উচ্ছ্বাস প্রকাশ যে জিতেন্দ্র তেওয়ারি প্রার্থী হতে পারেননি সেই কারণে, তা নিয়ে ফেসবুকে ফের পোস্ট করে জানিয়েছেন জিতেন্দ্র অনুগামী বিজেপি কাউন্সিলর গৌরব গুপ্ত। অন্যদিকে বিষয়টির নিন্দা করেছেন জিতেন্দ্র ঘনিষ্ঠ কুলটির আরও এক বিজেপি নেতা তথা প্রাক্তন কাউন্সিলর অভিজিৎ আচার্য। তিনি বলেন, "আলুওয়ালিয়াজি প্রার্থী হওয়ায় যতটা উচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছিল, জিতেন্দ্র তেওয়ারি টিকিট না পাওয়াতে মনে হচ্ছে তারা বেশি উচ্ছ্বসিত। অভিযুক্ত ওই বিজেপি নেতা জিতেন চট্টোপাধ্যায় প্রথমে কয়লা মাফিয়া রাজু ঝায়ের ঘনিষ্ঠ ছিল ৷ এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে দল কোন ব্যবস্থা নেয়নি। প্রার্থীও কোনও কিছু বলেননি। জেলা সভাপতিও কোনও ব্যবস্থা নেননি। কেন নেওয়া হলো না সেটা আমরা বুঝতে পারছি না। এটা খুব নিন্দনীয় এবং আমার মনে হচ্ছে কেউ না কেউ এটাতে ইন্ধন যোগাচ্ছে। তাই ওরা এতটা সাহস পাচ্ছে।"
অভিজিৎ আচার্য আরও বলেন, "জিতেন্দ্র তেওয়ারি সময়ে, অসময়ে বিপদে-আপদে সবসময় মানুষের পাশে থাকে বলে আমরা ওনাকে ভালোবাসি। উনি প্রার্থী হননি বলে গোটা আসানসোলের মানুষ আফসোস করছেন। কিন্তু যখন দল প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে তখন আমরা সবাই তার হয়ে লড়াই করতে নেমে পড়েছি। তা স্বত্ত্বেও এই অবস্থায় জিতেন্দ্র তেওয়ারিকে ঘিরে এই কটাক্ষ যারা শুধুমাত্র সোশাল মিডিয়ায় পার্টি করে তারাই করতে পারে। আমি দলকে অনুরোধ করেছি অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে।"
অন্যদিকে, বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় বলছেন, "সোশাল মিডিয়ায় যে পোস্ট হয়েছে সেটা খতিয়ে দেখতে হবে, আদৌ কারও নাম নিয়ে সেটা করা হয়েছে কি না। জিতেন্দ্র তেওয়ারি ভারতীয় জনতা পার্টি নেতা। যখন আমাদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা হয়নি, তখন তিনি বিজেপির ঝান্ডা নিয়ে গোটা এলাকায় দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। জনসংযোগ করেছেন। প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার পর উনি নিজেই দেওয়াল লিখন লিখতে নেমেছেন। যে সমস্ত গ্রুপবাজির কথা উঠছে সেগুলি বিরোধীদেরই চক্রান্ত। তবে যদি সত্যি কাউকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা হয়ে থাকে, তাহলে আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।"
আরও পড়ুন
পাহাড়ে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে মন্তব্যের জের, শুভেন্দুকে আইনি নোটিশ পার্থ ভৌমিকের
'জনতা চিরকালের জন্য খামোশ করে দেবে', শত্রুঘ্নকে বিঁধলেন আলুওয়ালিয়া