তারাপীঠ, 16 মার্চ: বীরভূমে নির্বাচন মানেই একটা নাম সবার আগে উঠে আসবে ৷ সেটি হল অনুব্রত মণ্ডল ৷ বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি ৷ প্রায় দেড়বছর আগে যিনি গরুপাচার মামলায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে গ্রেফতার হয়েছেন এবং বর্তমানে তিহাড় জেলে বন্দি ৷ সেই অনুব্রত মণ্ডলকে ছাড়া প্রথমবার বীরভূমে কোনও লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে তৃণমূল ৷ তাই বীরভূম লোকসভার প্রচারে নেমে প্রার্থী শতাব্দী রায়ের অকপট স্বীকারক্তি, তিনি এই নির্বাচনে অনুব্রতর 'অভাববোধ' করবেন ৷
রাজ্যে যে কোনও নির্বাচনের আগে নকুলদানা, চড়াম-চড়াম, গুড়-বাতাসার মতো শব্দবন্ধনী শোনা যেত ৷ ভোটের কয়েকমাস আগে থেকেই এক সরগরম পরিবেশ তৈরি করে দিতেন অনুব্রত ৷ কিন্তু, 2024 লোকসভা নির্বাচনে অনুব্রত মণ্ডল নেই ৷ নেই তাঁর গরমাগরম বক্তব্যও ৷ এই আবহে তৃণমূলের অভেদ্য দুর্গ বীরভূম এখন তাদের হাতের নাগালে বলে মনে করছে রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপি ৷
তবে, নির্বাচনী প্রচারে নেমে বিরোধীদের সেই সব আশাআকাঙ্খাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ বীরভূম লোকসভার তিনবারের সাংসদ তথা তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায় ৷ তিনি স্বীকার করে নিলেন, অনুব্রত মণ্ডলের অভাববোধ অবশ্যই করবেন ৷ কিন্তু, অনুব্রতর দীর্ঘদিনের তৈরি করা সংগঠনের লোকজন রয়েছে ৷ তাঁরা নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থীর হয়ে কাজ করবেন ৷ অনুব্রতর নেতৃত্বে তৃণমূলের ভোট 'যেভাবে' হত, তাঁর নেতা-কর্মীরাও তা অনুসরণ করবেন ৷
শতাব্দীর কথায়, "তিনি নেই ঠিকই ৷ কিন্তু, তাঁর তৈরি সংগঠনের মানুষগুলো আছেন ৷ একটা মানুষ দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, আমাদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ৷ নিশ্চই তাঁকে মিস করব ৷" তবে, এবার শতাব্দী রায়ের বিপরীতে বিজেপির প্রার্থী হতে পারেন দুধকুমার মণ্ডল ৷ যাঁর যোগ আবার সরাসরি আরএসএসের সঙ্গে ৷ অর্থাৎ, সংগঠন ও প্রচারের বিষয়ে শতাব্দী রায়ের থেকে কয়েক ধাপ এগিয়ে বিজেপির সম্ভাব্য প্রার্থী ৷ তাই এবার অনুব্রতহীন বীরভূমে তৃণমূলের লড়াইটা বেশ কঠিন বলেই মনে করছে রাজনৈতিকমহল ৷
তবে শতাব্দীর দাবি, 2009, 2014 ও 2019-এর থেকে এবারের জয়ের ব্যবধান তাঁর আরও বাড়বে ৷ প্রতিবছরই জয়ের ব্যবধান বেড়েছে ৷ আর 2024-এ তার অন্যথা হবে না ৷ কিন্তু, গত তিনবার শতাব্দীর সহায় ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল ৷ সেক্ষেত্রে 2024-এর লড়াইয়ে সেই অনুব্রতই শতাব্দীর সঙ্গে নেই যে ! উলটে শহরাঞ্চলে প্রতি ভোটে শতাব্দীক ভোট কমেছে ও হেরেছেন ৷ এবার অনুব্রতহীন বীরভূম লোকসভার গ্রামীণে তৃণমূলের ভোট ধরে রাখা সহজ হবে না বলে মত রাজনৈতিক মহলের ৷
আরও পড়ুন: