মালদা, 1 ফেব্রুয়ারি: নিখোঁজ নাবালিকার গলা কাটা দেহ উদ্ধারে চাঞ্চল্য ছড়াল মালদায় ৷ দেহ থেকে প্রায় 50 মিটার দূরে পুরনো বিল্ডিংয়ের ছাদ থেকে উদ্ধার হল মাথা । গভীর রাতে উদ্ধার হওয়া দেহ ও মাথা ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিক্যালে পাঠায় ইংরেজবাজার থানার পুলিশ । ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে ইংরেজবাজার থানার সামনে। পরিস্থিতি সামাল দিতে গভীর রাতে থানায় আসেন ডেপুটি পুলিশ সুপার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।
ধৃত যুবকের বয়ান অনুযায়ী ইংরেজবাজারের শহরের শেষপ্রান্ত আমবাজার থেকে উদ্ধার হয় মুণ্ডহীন দেহ । তাকে জেরা করে প্রায় 50 মিটার দূরে পুরনো বিল্ডিংয়ের ছাদ থেকে উদ্ধার হয় মাথা । ঘটনায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ৷ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন ডেপুটি পুলিশ সুপার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার । পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে রাতেই মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও মৃত নাবালিকার বাড়ি সংলগ্ন এলাকায় মোতায়েন করা হয় পুলিশ।
জেলা পুলিশের এক শীর্ষ আধিকারিক জানান, পরিস্থিতির নিরিখে বুধবার রাত থেকেই বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছিল। তারপরেও কীভাবে অভিযুক্তর বাড়িতে জনতার রোষ আছড়ে পড়ল সেই তদন্ত করা হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে ।পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত যুবক মৃত নাবালিকার জ্য়াঠতুতো দাদা ৷ বৃহস্পতিবার ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়তেই ক্ষিপ্ত জনতা অভিযুক্ত যুবকের বাড়ি ভাঙচুর করেছে বলে জানা গিয়েছে ৷ বাড়ির সমস্ত আসবাবপত্র বাইরে ফেলে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা ৷ খবর সংগ্রহ করতে নিয়ে নিগৃহীত হতে হয় সংবাদমাধ্যমকেও ৷ গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রবল উত্তেজনা রয়েছে মালদা শহর জুড়ে ৷ সাদা পোশাকের পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালাচ্ছে ৷
পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, গত 29 তারিখ সন্ধ্যায় মালদা শহরের বালুচর এলাকা 11 বছরের সৃষ্টি কেশরী নামে এক নাবালিকার নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ ওঠে। পরিবারের তরফে অপহরণের অভিযোগ করা হলেও পুলিশে নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ দায়ের করা হয়। নিখোঁজ নাবালিকার বাবা রামপ্রকাশ কেশরীর অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্তে নেমে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে ।
সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, ওই নাবালিকা এক যুবকের মোটরবাইকে উঠে চলে যায়। সেই ক্যামেরার ফুটেজ দেখে রাতেই এক যুবককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ। অভিযোগ, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে ওই যুবক। যুবকের বয়ান যাচাই করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে সমস্ত ঘটনা সাজানো।
বুধবার মালদা শহরে দুই ভিভিআইপির যাত্রার কারণে পুলিশের হাতে তেমন কোনও তথ্য আসেনি। তবে দুই ভিভিআইপি শহর ছাড়তেই ফের পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের প্রক্রিয়া শুরু হয়। অবশেষে ধৃত যুবক ওই নাবালিকাকে খুন করে দেহ লুকিয়ে রাখার বিষয়টি স্বীকার করে। তারপরেই অভিযুক্ত যুবককে নিয়ে দেহ উদ্ধারের জন্য ঘটনাস্থলে যায় ইংরেজবাজার থানার পুলিশ।
আরও পড়ুন:
1. নিয়মের ব্যতিক্রম, লোকসভা নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নজরদারিতে সিআরপিএফ
2. সার্ভিস রিভলভার থেকে গুলি চালিয়ে ফের আত্মঘাতী কলকাতা পুলিশের কনস্টেবল