বারাসত, 8 নভেম্বর: রাতারাতি দখল হয়ে গিয়েছিল সরকারি অর্থে তৈরি যাত্রী প্রতীক্ষালয় ! অভিযোগ, সেখানে গড়ে উঠেছিল তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যালয় ৷ যে ঘটনায় ক্ষোভ বাড়ছিল সাধারণ মানুষের মধ্যে ৷ তার আঁচ পেয়েই এবার নড়েচড়ে বসল ব্লক প্রশাসন ৷ দখল হয়ে যাওয়া যাত্রী প্রতীক্ষালয়টি পুনরায় জনসাধারণের স্বার্থে খুলে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে ৷
ঘটনাটি উত্তর 24 পরগনার বারাসত 2 নম্বর ব্লকের শাসন এলাকার ৷ খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে যাত্রী প্রতীক্ষালয়টি পরিদর্শনে যায় ব্লক প্রশাসন ৷ জানা গিয়েছে, বছর খানেক আগে শাসন-দাদপুর এলাকায় রাস্তার পাশে তৈরি করা হয়েছিল যাত্রী প্রতীক্ষালয়টি ৷ পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকায় এই যাত্রী প্রতীক্ষালয়টি যাত্রীদের সুবিধার কথা ভেবে তৈরি হয় ৷ অভিযোগ, সেসবের তোয়াক্কা না-করেই, রাতারাতি সেটি স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের দখলে চলে যায় ৷ তৈরি হয় শাসকদলের কার্যালয় ৷
এই ঘটনায় চরম ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল এলাকাবাসীর মধ্যে ৷ বারাসত 2 ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ ও তৃণমূল নেতা আসের আলি মল্লিক ও তাঁর দলবল যাত্রী প্রতীক্ষালয়টি দখল করেছিল বলে অভিযোগ ৷ তাঁদের আরও দাবি, পার্টি অফিস বোঝাতে, সেখানে তৃণমূলের পতাকাও টাঙিয়ে দেওয়া হয় ৷ ভিতরে চেয়ার, টেবিল, এমনকি দলীয় কর্মীদের মনোরঞ্জনের জন্য টিভির ব্যবস্থাও ছিল ৷ সেখানে শীতাতপ যন্ত্রও লাগানো হয় ৷ জবরদখল তুলতে গিয়ে, সেই দৃশ্য় দেখে অবাক ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরাও ৷
এই ঘটনা ঘিরে বেশ কিছুদিন ধরেই চাপা ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল স্থানীয়দের মধ্যে ৷ সেই খবর কানে যেতেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন ৷ বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে দখল হয়ে যাওয়া যাত্রী প্রতীক্ষালয়টি পরিদর্শনে যান ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা ৷ স্থানীয় বিডিও শেখর সাঁই সাধারণ মানুষের জন্য যাত্রী প্রতিক্ষালয়টি খুলে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন ৷ প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, যাত্রী প্রতীক্ষালয়টি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে কাজও শুরু হয়েছে ৷
কিন্তু, প্রশাসন উদ্যোগ নেওয়ার পরেও বেশকিছু প্রশ্ন উঠছে ৷ প্রথমত, সরকারি অর্থে তৈরি একটি যাত্রী প্রতীক্ষালয় কীভাবে রাতারাতি দখল হয়ে গেল ? কার মদতেই বা সেখানে গড়ে উঠল শাসকদলের কার্যালয় ? দ্বিতীয়ত, যাত্রী প্রতীক্ষালয় দখল করে তৃণমূলের পার্টি অফিস গড়ে ওঠার পরেও, কেন তা নজর এড়িয়ে গেল প্রশাসনের ? এমনই নানা প্রশ্নের জবাব মেলেনি স্থানীয় প্রশাসনের তরফে ৷
অন্যদিকে, এই বিষয়ে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা আসের আলি মল্লিকের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ৷ যদিও, বারাসত 2 নম্বর ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি শম্ভুনাথ ঘোষ, ঘটনাটি দলীয় স্তরে খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন ৷