ক্যানিং, 12 নভেম্বর: হাসপাতালে ঢুকে তৃণমূলের নেতার দাদাগিরি। প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হল অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারকে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ক্যানিং মহকুমার হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার সৌরভ কুমার। তাঁর অভিযোগ, তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্য বহিরাগতদের নিয়ে হাসপাতালে এসে তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন ৷
তাঁর পাশাপাশি হাসপাতালের চুক্তিভিত্তিক সাফাইকর্মী এবং নিরাপত্তা রক্ষীদের একাংশকেও হুমকি দেওয়া হয়েছে অভিযোগ ৷ অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারের আরও অভিযোগ, ডিউটি রস্টারে রদবদল হলেও চুপ করে থাকা, কাউকে না-জানিয়ে একজনের ডিউটি অপরজন করা, কাজে না-এলেও বেতনের বিলে সই করা, ওয়ার্ডে আয়াকে ঢুকতে দেওয়ার মতো একাধিক ক্ষেত্রে চাপ সৃষ্টি করা হয় তাঁর ওপরে। কিন্তু চাপের কাছে মাথানত না-করায় এদিন তাঁকে হুমকি দেওয়া হয় ৷
সৌরভ দাস বলেন, "7-8 মাস ধরে সিকিউরিটি স্টাফের রস্টারটা আমি চাইছিলাম। পাচ্ছিলাম না। কারণ সেটা দেখে বিল সই করতে হয়। ওদের দাবি ওরা ডিউটি না-করলেও বকেয়া স্লিপে আমাকে সই করে দিতে হবে। একজনের ডিউটি আরেকজন করবে, সেসব মেনে নিতে হবে। আমাকে বলেছে, আপনার অত রস্টার দেখার দরকার নেই। আয়াদের হাসপাতালের ভিতরে ঢুকতে দিতে হবে বলেও দাবি করতে থাকেন তাঁরা। বেশি নিয়ম দেখালে কী করে ক্যানিং থেকে বেরোন দেখে নেব। আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে।"
তিনি আরও বলেন, "স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে আমাকে হুমকির মুখে পড়তে হল। অভিযুক্ত দিঘিরপারা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য ও ক্যানিং পশ্চিম বিধানসভার তৃণমূলের বিধায়ক পরেশরাম দাসের ঘনিষ্ঠ তন্ময় দাস।" পুরো ঘটনার কথা দক্ষিণ 24 পরগনার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন ওই চিকিৎসক। ঘটনা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন সিএমওএইচ (CMOH)।"
যদিও এই বিষয়ে ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক ও তৃণমূলের রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক শওকত মোল্লা জানিয়েছেন, তৃণমূল এমন হুমকি সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করে না। দুর্নীতিকে কোনওদিন আপস করে না। যদি এমন হুমকি দেওয়ার ঘটনা ঘটে থাকে তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। চিকিৎসক মানে ভগবানের সমতুল্য ৷ প্রশাসন সঠিক তদন্ত করুক এবং এই ঘটনার সঙ্গে যারা যুক্ত রয়েছে তাদেরকে দলমত নির্বিশেষে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক ৷