ETV Bharat / state

কাটমানি না-দিতে পারায় রূপশ্রীর আবেদন বাতিলের অভিযোগ, বিডিওর দ্বারস্থ যুবতি - Rupashree Prakalpa Scam

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jun 27, 2024, 5:45 PM IST

Updated : Jun 27, 2024, 7:27 PM IST

Rupashree Prakalpa Controversy: নিয়ম মেনে রূপশ্রী প্রকল্পে আবেদন করেও টাকা পেলেন না যুবতি ৷ কাটমানি দিতে না পারাতেই কি আবেদন বাতিল করা হল ? বিয়ের পর সাতমাস কেটে গেলেও কেন টাকা পেলেন না তা জানতে অভিযোগ জানালেন বিডিও অফিসে ৷

Malda News
আবেদন ও বিয়ের কার্ড হাতে বাবার সঙ্গে আজিমা (নিজস্ব ছবি)

মালদা, 27 জুন: মেয়ের বিয়ের জন্য রূপশ্রী প্রকল্পে আবেদন করেছিলেন ৷ কিন্তু টাকা মেলেনি ৷ উলটে চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন, মালদার শিমুলতলা গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন ৷ তাঁর দাবি, বিয়ের দিন ব্লক ও পঞ্চায়েত অফিসের লোকেরা এসে সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখে 10 হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন ৷ সেই টাকা দিতে পারেননি কনের বাবা ৷ তাই সরকারি ওই প্রকল্প থেকে মেয়েটির নামই বাদ দিয়ে দেওয়া হয় ৷ বিয়ের পর সাত মাস কেটে গিয়েছে ৷ এখনও সেই টাকার আশায় রয়েছেন ওই যুবতি ও তাঁর বাবা ৷ এমনই ঘটনা ঘটেছে চাঁচল 2 নম্বর ব্লকের জালালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের শিমুলতলা গ্রামে ৷

রূপশ্রী প্রকল্প নিয়ে চাঞ্চল্য (ইটিভি ভারত)

শিমুলতলা গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক ৷ দুটি চোখেই ভালো দেখতে পান না ৷ তাই কাজও ঠিকমতো করতে পারেন না ৷ কিন্তু ঘরে তিন মেয়ে, এক ছেলে ৷ গত ডিসেম্বরে বড় মেয়ে আজিমা খাতুনের বিয়ে ঠিক করেন আনোয়ার ৷ রূপশ্রী প্রকল্পের 25 হাজার টাকা পেতে বিয়ের কার্ড-সহ সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন করেছিলেন আজিমা ৷ অভাবের পরিবারে ওই টাকাটা আনোয়ার সাহেবকে অনেকটাই স্বস্তি দিত ৷ বিয়ের দিন ব্লক ও পঞ্চায়েতের কর্মী তাঁদের বাড়িতে আসেন ৷ কিন্তু কাটমানি না দিতে পারায় সেই টাকা আর জোটেনি ৷ শেষ পর্যন্ত গোটা ঘটনা জানিয়ে বুধবার চাঁচল 2 ব্লকের বিডিওর কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন আজিমা ৷

আজিমার কথায়, "বিয়ের দিন ব্লক ও পঞ্চায়েতের কর্মীরা বাড়িতে এসে সব দেখে বলে গিয়েছিলেন, রূপশ্রীর টাকা আমার অ্যাকাউন্টে ঢুকে যাবে ৷ কিন্তু সেই টাকা এখনও অ্যাকাউন্টে ঢোকেনি ৷ বারবার পরীক্ষা করে দেখেছি ৷ তাঁরা টাকা চেয়েছিলেন ৷ সেটা দিতে পারিনি বলেই আমার টাকা ঢোকেনি ৷ আমি চাই, ওই টাকা যেন আমার অ্যাকাউন্টে আসে ৷"

আনোয়ার সাহেবের বক্তব্য, 2023 সালের 11 ডিসেম্বর মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছিল ৷ তার আগেই রূপশ্রী প্রকল্পের টাকার জন্য বিয়ের কার্ড-সহ তাঁর মেয়ে লিখিত আবেদন করেছিল ৷ বিয়ের দিন পঞ্চায়েত ও ব্লকের দুই কর্মী বাড়িতে এসে তদন্ত করেন ৷ তাঁরা 10 হাজার টাকা ঘুষ চান ৷ ওই টাকা দিতে না পারায় আমার মেয়ের আবেদন বাতিল করে দেওয়া হয় ৷ আমি ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাজ করি ৷ কোনওরকমে সংসার চলে ৷ ওই টাকাটা আমাদের চাই ৷ আরও চাই, ওই দুই সরকারি কর্মীর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হোক ৷"

অভিযোগ সম্পর্কে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য মোবারক হোসেন বলেন, "আনোয়ার হোসেন সম্পর্কে আমার দাদা ৷ 2023 সালের ডিসেম্বর মাসে তাঁর মেয়ের বিয়ে হয় ৷ সব নিয়ম মেনে রূপশ্রী প্রকল্পের জন্য আবেদন জানানো হয়েছিল ৷ আমাকেও জানিয়েছিল ৷ আমি বলেছিলাম, নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে আবেদন করলে অবশ্যই প্রকল্পের টাকা পাওয়া যাবে ৷ বিয়ের দিন সন্ধ্যায় জালালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সহায়ক উদয় আর ব্লক অফিসের কর্মী সুমন দাদার বাড়িতে আসে ৷ সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করে ৷ ওরা 10 হাজার টাকা দাবি করে ৷ সেই টাকা দাদা দিতে পারেননি ৷ তারপর আর রূপশ্রীর টাকা পাওয়া যায়নি ৷ চারদিন আগে ব্লকে গিয়ে জানতে পারি, ভাইঝির আবেদন বাতিল করা হয়েছে ৷ আমরা বিডিওর কাছে আবেদন জানাতে চেয়েছি কিন্তু কেউ সেই আবেদন জমা নিতে চাননি ৷ শেষ পর্যন্ত বুধবার ভাইঝি সেই আবেদন জমা দিয়েছে ৷"

এই বিষয়ে জানার জন্য চাঁচল 2 নম্বর ব্লকের বিডিও শান্তনু চক্রবর্তীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও তা হয়ে ওঠেনি ৷ তবে ঘটনাটি জেনে চাঁচলের মহকুমাশাসক সৌভিক মুখোপাধ্যায় আশ্বাস দিয়েছেন, নিয়ম মেনে আবেদন জমা করলে সরকারি প্রকল্প থেকে কেউ বঞ্চিত হবেন না ৷ এক্ষেত্রে কী হয়েছে তা তিনি বিডিওকে তদন্ত করে দেখতে বলবেন ৷ সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে ৷

মালদা, 27 জুন: মেয়ের বিয়ের জন্য রূপশ্রী প্রকল্পে আবেদন করেছিলেন ৷ কিন্তু টাকা মেলেনি ৷ উলটে চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন, মালদার শিমুলতলা গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন ৷ তাঁর দাবি, বিয়ের দিন ব্লক ও পঞ্চায়েত অফিসের লোকেরা এসে সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখে 10 হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন ৷ সেই টাকা দিতে পারেননি কনের বাবা ৷ তাই সরকারি ওই প্রকল্প থেকে মেয়েটির নামই বাদ দিয়ে দেওয়া হয় ৷ বিয়ের পর সাত মাস কেটে গিয়েছে ৷ এখনও সেই টাকার আশায় রয়েছেন ওই যুবতি ও তাঁর বাবা ৷ এমনই ঘটনা ঘটেছে চাঁচল 2 নম্বর ব্লকের জালালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের শিমুলতলা গ্রামে ৷

রূপশ্রী প্রকল্প নিয়ে চাঞ্চল্য (ইটিভি ভারত)

শিমুলতলা গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক ৷ দুটি চোখেই ভালো দেখতে পান না ৷ তাই কাজও ঠিকমতো করতে পারেন না ৷ কিন্তু ঘরে তিন মেয়ে, এক ছেলে ৷ গত ডিসেম্বরে বড় মেয়ে আজিমা খাতুনের বিয়ে ঠিক করেন আনোয়ার ৷ রূপশ্রী প্রকল্পের 25 হাজার টাকা পেতে বিয়ের কার্ড-সহ সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন করেছিলেন আজিমা ৷ অভাবের পরিবারে ওই টাকাটা আনোয়ার সাহেবকে অনেকটাই স্বস্তি দিত ৷ বিয়ের দিন ব্লক ও পঞ্চায়েতের কর্মী তাঁদের বাড়িতে আসেন ৷ কিন্তু কাটমানি না দিতে পারায় সেই টাকা আর জোটেনি ৷ শেষ পর্যন্ত গোটা ঘটনা জানিয়ে বুধবার চাঁচল 2 ব্লকের বিডিওর কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন আজিমা ৷

আজিমার কথায়, "বিয়ের দিন ব্লক ও পঞ্চায়েতের কর্মীরা বাড়িতে এসে সব দেখে বলে গিয়েছিলেন, রূপশ্রীর টাকা আমার অ্যাকাউন্টে ঢুকে যাবে ৷ কিন্তু সেই টাকা এখনও অ্যাকাউন্টে ঢোকেনি ৷ বারবার পরীক্ষা করে দেখেছি ৷ তাঁরা টাকা চেয়েছিলেন ৷ সেটা দিতে পারিনি বলেই আমার টাকা ঢোকেনি ৷ আমি চাই, ওই টাকা যেন আমার অ্যাকাউন্টে আসে ৷"

আনোয়ার সাহেবের বক্তব্য, 2023 সালের 11 ডিসেম্বর মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছিল ৷ তার আগেই রূপশ্রী প্রকল্পের টাকার জন্য বিয়ের কার্ড-সহ তাঁর মেয়ে লিখিত আবেদন করেছিল ৷ বিয়ের দিন পঞ্চায়েত ও ব্লকের দুই কর্মী বাড়িতে এসে তদন্ত করেন ৷ তাঁরা 10 হাজার টাকা ঘুষ চান ৷ ওই টাকা দিতে না পারায় আমার মেয়ের আবেদন বাতিল করে দেওয়া হয় ৷ আমি ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাজ করি ৷ কোনওরকমে সংসার চলে ৷ ওই টাকাটা আমাদের চাই ৷ আরও চাই, ওই দুই সরকারি কর্মীর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হোক ৷"

অভিযোগ সম্পর্কে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য মোবারক হোসেন বলেন, "আনোয়ার হোসেন সম্পর্কে আমার দাদা ৷ 2023 সালের ডিসেম্বর মাসে তাঁর মেয়ের বিয়ে হয় ৷ সব নিয়ম মেনে রূপশ্রী প্রকল্পের জন্য আবেদন জানানো হয়েছিল ৷ আমাকেও জানিয়েছিল ৷ আমি বলেছিলাম, নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে আবেদন করলে অবশ্যই প্রকল্পের টাকা পাওয়া যাবে ৷ বিয়ের দিন সন্ধ্যায় জালালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সহায়ক উদয় আর ব্লক অফিসের কর্মী সুমন দাদার বাড়িতে আসে ৷ সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করে ৷ ওরা 10 হাজার টাকা দাবি করে ৷ সেই টাকা দাদা দিতে পারেননি ৷ তারপর আর রূপশ্রীর টাকা পাওয়া যায়নি ৷ চারদিন আগে ব্লকে গিয়ে জানতে পারি, ভাইঝির আবেদন বাতিল করা হয়েছে ৷ আমরা বিডিওর কাছে আবেদন জানাতে চেয়েছি কিন্তু কেউ সেই আবেদন জমা নিতে চাননি ৷ শেষ পর্যন্ত বুধবার ভাইঝি সেই আবেদন জমা দিয়েছে ৷"

এই বিষয়ে জানার জন্য চাঁচল 2 নম্বর ব্লকের বিডিও শান্তনু চক্রবর্তীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও তা হয়ে ওঠেনি ৷ তবে ঘটনাটি জেনে চাঁচলের মহকুমাশাসক সৌভিক মুখোপাধ্যায় আশ্বাস দিয়েছেন, নিয়ম মেনে আবেদন জমা করলে সরকারি প্রকল্প থেকে কেউ বঞ্চিত হবেন না ৷ এক্ষেত্রে কী হয়েছে তা তিনি বিডিওকে তদন্ত করে দেখতে বলবেন ৷ সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে ৷

Last Updated : Jun 27, 2024, 7:27 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.