কলকাতা, 2 এপ্রিল: সাময়িক ঝড়ে বিধ্বস্ত জলপাইগুড়ি ৷ আর এই ঝড়ের কথা কেন আবহাওয়া অফিস আগে জানায়নি তা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন ৷ এই বিষয়ে আলিপুর আবহাওয়া অফিসের বক্তব্য, টর্নেডো ঝড়ের পূর্বাভাস কারও পক্ষেই করা সম্ভব নয় । ভারতে কেন, এর পূর্বাভাস দেওয়ার ব্যবস্থা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও নেই ৷ কারণ বিষয়টি ছোট জায়গার সর্বোচ্চ তাপমাত্রার সাময়িক অতি ঊর্ধ্বগতির জন্য হয়ে থাকে । তাই উত্তরবঙ্গের এই কালান্তক ঝড়ের পূর্বাভাস রবিবার সকালে দেওয়া সম্ভব হয়নি । তবে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝড়ের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন আলিপুর আবহাওয়া অফিসের পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা সোমনাথ দত্ত ।
কিন্তু কিছুটা আগেও কি কোনওভাবে আঁচ করা যায়নি ?
এই বিষয়ে সোমনাথ দত্ত জানিয়েছেন, আলিপুর আবহাওয়া অফিসের জলপাইগুড়ি অফিসের দু'জন কর্মী রবিবার দুপুরে পুরো ঘটনাটি অনুমান করেছিলেন এবং লক্ষ্য রাখছিলেন । পৌনে তিনটে নাগাদ প্রথম তারা 'গুরগুর' আওয়াজ পেয়েছিলেন এবং এই আওয়াজটি ক্রমেই বাড়ছিল । তবে কোনও বিদ্যুৎ চমকানোর ছবি দেখা যায়নি । হাওয়ার গতি বাড়ছিল । প্রথমে ধূসর মেঘ দেখতে পাওয়া গিয়েছিল । তারপর তা ঘন কালো মেঘে পরিণত হয় । হাওয়ার গতি 3টে 15 থেকে 3টে 23-এ সর্বোচ্চ হয় । ওই সময় হাওয়ার গতি ছিল ঘণ্টায় 60 থেকে 75 কিলোমিটার । পরবর্তী সময়ে গ্রামের প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ শুনে আবহবিদদের মনে হয়েছে কালবৈশাখী নয়, ছোটখাটো টর্নেডো আছড়ে পড়েছিল ।
এখন প্রশ্ন হল ফের কি ছোট বা বড় কোনও টর্নেডো আছড়ে পড়তে পারে ? কেন হয় টর্নেডো ?
এই বিষয়ে সোমনাথ দত্তের বক্তব্য, কোনও ছোট একটি জায়গার তাপমাত্রা প্রচণ্ড বৃদ্ধি পেলে বাতাস উপরের দিকে উঠে যায় । তখন শূন্যস্থান পরিবর্তনের জন্য চারিদিক থেকে বাতাস ছুটে আসে । এবং তা নিউটনের সূত্র মেনে সোজা ধেয়ে আসে । এই সময় পারস্পরিক সংঘর্ষে বাতাস কখনও ঘড়ির কাঁটার গতির বিপরীত দিকে আবার কখনও কাঁটার গতির দিকে বইতে থাকে ।
সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস দেওয়া গেলেও টর্নেডোর বিষয়ে আগে থেকে বলা যায় না কেন ?
সোমনাথ দত্তের কথায়, ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস দুই সপ্তাহ আগে থেকে পরিলক্ষিত হয় । সেই অনুসারে সতর্কতা দেওয়া সম্ভব হয় । টর্নেডো খুব ছোট একটি অতি দ্রুতলয়ের ঝড় । যার পূর্বাভাস আগে থেকে দেওয়া সম্ভব নয় ।
আরও পড়ুন :