কলকাতা, 3 অক্টোবর: বাংলার ব্রত বা সংস্কৃতির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত আলপনা । বাড়ির মা, ঠাকুমারা একসময় পুজো থেকে ব্রত পালনে আলপনা দিতেন । চল কমে গেলেও এখনও অনেক বাড়িতে প্রতি বৃহস্পতিবার লক্ষ্মীপুজোর সময় আলপনা দেওয়া হয় ৷ বিশ্বভারতীতে নন্দলাল বসু, ক্ষিতিমোহন সেন, সুকুমারী দেবীরা বিভিন্ন দেশের নকশা থেকে প্রকৃতির নানা বিষয়কে আলপনায় তুলে ধরেছিলেন । এবার সেই সব ধরনের ঘরানার আলপনা দিয়েই হচ্ছে আহিরীটোলা যুবকবৃন্দের মণ্ডপ । লোহার তারের মাধ্যমে আলপনা ফুটে উঠবে পুজো প্যান্ডেলে ৷
আহিরীটোলা যুবকবৃন্দের পুজো এবার 54-তম বর্ষে । বিষয় ভাবনা আকারের মহাযাত্রা । মণ্ডপের পরিকল্পনা ও রূপায়ণে বিশ্বভারতীর প্রাক্তন আর্ট টিচার সুধীর রঞ্জন মুখোপাধ্যায়, দেবজ্যোতি জানা । ভাবনার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে প্রতিমার রূপ দিচ্ছেন নব পাল ।
মণ্ডপসজ্জা নিয়ে শিল্পী দেবজ্যোতি জানা জানান, আলপনা নিয়ে মূলত কাজ । যে কোনও শুভ অনুষ্ঠানে আলপনা দেওয়া বাংলায় প্রচলিত । এখন সেই আলপনা হয় চালগুড়ো, নয় খড়িমাটি দিয়ে করা হয় । তবে সেই প্রবণতা কমে এখন স্টিকারে এসে ঠেকেছে । সেই আলপনা যেমন ফিরবে তেমন শান্তিনিকেতনের ভিন্ন ধারার আলপনাও ফুটে উঠবে মণ্ডপজুড়ে । কোথাও লোহার রড, তার আবার কোথাও তা মাটির সরার উপরে চিত্রিত থাকবে ।
মণ্ডপের চমক 40 ফুট লম্বা আলপনা ৷ সঙ্গে 20 ফুটের বিরাট লোহার তার দিয়ে আলপনা দর্শকদের চোখ টানবে । অধ্যাপক সুধীর রঞ্জন মুখোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, এই বাংলায় ব্রত বা পুজোতেই আলপনা আটকে । 1910-1911 সাল নাগাদ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিশ্বভারতী গঠন করলে সেই সময় নন্দলাল বসু, ক্ষিতিমোহন সেন, সুকুমারী দেবীরা আলপনাকে একটা নতুন আঙ্গিক দেন । প্রকৃতি ছিল যার অবলম্বন । সঙ্গে নানা দেশের নক্সার মিশেল । সেইসব উঠে আসবে এবার আহিরীটোলা যুবকবৃন্দের পুজো মণ্ডপে ।
থিম নিয়ে আশাবাদী ক্লাব কর্তারাও ৷ তাঁদের জানান, গতবছর পুরোনো কলকাতার ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়েছিল । এবার হারিয়ে যাওয়া আলপনাকে ফের বড় মঞ্চে ফেরানোর উদ্যোগ ৷