ETV Bharat / state

ভোটের দিন পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ! এর পরই 'পুরুষ-শূন্য' উত্তরবঙ্গের তিন গ্রাম - Lok Sabha Election 2024

Malda Vote: তৃতীয় দফার নির্বাচনে ভোট বয়কট করেছিলেন রাধাকান্তপুর, রামকৃষ্ণপুর ও জগন্নাথপুর গ্রামের বাসিন্দারা ৷ এরপরই পুলিশি ধরপাকড়ের ভয়ে গ্রাম-ছাড়া ওই তিন গ্রামের পুরুষরা ৷

Etv Bharat
পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধের পর থেকেই 'পুরুষ-শূন্য' তিন গ্রাম (Etv Bharat)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : May 11, 2024, 7:03 PM IST

মালদা, 11 মে: ভোট মিটেছে কয়েকদিন আগেই ৷ কিন্তু এখনও পুরুষশূন্য হবিবপুর ব্লকের রাধাকান্তপুর, জগন্নাথপুর ও গ্রাম ৷ দিন-রাত গ্রামে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পুলিশ ৷ চলছে ধরপাকড় ৷ আর সেই ভয়েই 'ঘর-ছাড়া' ওই তিন গ্রামের পুরুষরা ৷ গ্রামবাসীদের দাবি, প্রশাসনকে গ্রামে শান্তি ফিরিয়ে আনতে হবে ৷ এই পরিস্থিতিতে গ্রামে গিয়ে মহিলাদের সাহস জোগাচ্ছেন বিজেপি নেত্রী সম্পাদিকা গঙ্গোপাধ্যায় সরকার ৷

গত মঙ্গলবার তৃতীয় দফার নির্বাচনে ভোট বয়কট করেছিলেন রাধাকান্তপুর, রামকৃষ্ণপুর ও জগন্নাথপুর গ্রামের বাসিন্দারা ৷ রাধাকান্তপুর প্রাথমিক স্কুলের 122 নম্বর বুথের ভোটাররা ভোটের দিন সকাল থেকে কার্যত বুথ পাহারায় ছিলেন ৷ উদ্দেশ্য, যাতে কেউ ভোট না দেয় ৷ বিকেল নাগাদ বুথে আসেন হবিবপুরের বিডিও ৷ গ্রামবাসীদের অভিযোগ, খোদ বিডিও স্থানীয় এক তৃণমূল নেতা রঞ্জিত সরকারকে দিয়ে তিন বহিরাগতকে বুথে নিয়ে আসেন ৷ বিডিও ওই তিন মহিলাকে বুথে ঢুকিয়ে দেন বলেও অভিযোগ ৷ এরপরেই শুরু হয়ে যায় বিক্ষোভ ৷ গ্রামবাসীদের দাবি, বুথের সিসিটিভির ফুটেজ তাঁদের দেখাতে হবে ৷ পরিস্থিতি বেগতিক দেখে রণে ভঙ্গ দেন বিডিও ৷

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বুধবার থেকেই শুরু হয় পুলিশি ধরপাকড় ৷ পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এখনও পর্যন্ত 13 জন গ্রামবাসীকে আটক করা হয়েছে ৷ আপাতত তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে ৷ তবে পুলিশের ভয়ে ওই তিন গ্রাম কার্যত পুরুষ-শূন্য হয়ে পড়েছে ৷ এক গ্রামবাসী সবিতা বর্মন বলেন, “পুলিশের লাঠির ভয়ে শুধু পুরুষ নয়, মহিলারাও বাড়িতে থাকতে পারছে না ৷ এই গণ্ডগোলের জন্য একমাত্র বিডিও দায়ী ৷ তিনি বহিরাগতদের এনে এখানে ছাপ্পা ভোট করিয়েছেন ৷ আমরা এই অবস্থার বদল চাই ৷ আমাদের দাবি, বিডিওকে এখান থেকে অপসারিত করতে হবে আর ব্রিজ ও রাস্তার ব্যবস্থা করতে হবে ৷”

গাজোল পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেত্রী তথা বিজেপির মহিলা মোর্চার জেলা সাধারণ সম্পাদিকা গঙ্গোপাধ্যায় সরকার বলেন, “ভোট বয়কটকে কেন্দ্র করে এখানকার মহিলারা ভীত সন্ত্রস্ত ৷ সেদিন বিডিও ভুয়ো ভোটারদের নিয়ে এসে ভোট করিয়েছেন ৷ আমরা এই বিডিওর অপসারণ চাইছি ৷ রাজ্য সরকার কি এই এলাকাকে দ্বিতীয় সন্দেশখালি করতে চাইছে ? ধরপাকড়ের ভয়ে এলাকা এখন পুরুষ-শূন্য ৷ বাচ্চা নিয়ে অনেক মহিলাও পুলিশের ভয়ে গ্রাম ছেড়েছেন ৷ আমরা চাই, প্রশাসন মহিলাদের সুরক্ষিত রাখুক ৷ আর যে বিডিও, আইসি, এসডিও এই কাজ করেছেন, তাঁদের কঠোর শাস্তি হোক ৷ এই এলাকার মানুষ কি ব্রিজ আর রাস্তা চেয়ে অপরাধ করেছেন ? এই ঘটনায় অভিযুক্তদের শাস্তি না হলে আমরা আন্দোলনে নামব ৷”

এই ঘটনায় গ্রামবাসীরা যাঁকে মূল অভিযুক্ত করেছেন, সেই হবিবপুর ব্লকের বিডিও অংশুমান দত্তকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি ৷ তবে এবারই প্রথম নয়, পঞ্চায়েত ভোটে কারচুপির দায়ে এর আগে অংশুমানবাবুকে খোদ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার কাছে জবাবদিহি করতে হয়েছে বলে জানাচ্ছেন এলাকার মানুষজন ৷ দুর্ব্যবহার নিয়ে এলাকায় তাঁর বদনামও রয়েছে ৷ তবে শুধু অংশুমানবাবুই নন, গ্রামবাসীদের অভিযোগ নিয়ে মুখ খুলতে চাননি মহকুমাশাসক (সদর) পঙ্কজ তামাংও ৷

আরও পড়ুন

হাওড়ায় মেগা-সানডে, রবিবাসরীয় প্রচারে মোদি-মমতা

অধীর বনাম বাকি সবাই- বহরমপুরের লড়াইয়ে অন্যরা কার্যত উহ্য

মালদা, 11 মে: ভোট মিটেছে কয়েকদিন আগেই ৷ কিন্তু এখনও পুরুষশূন্য হবিবপুর ব্লকের রাধাকান্তপুর, জগন্নাথপুর ও গ্রাম ৷ দিন-রাত গ্রামে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পুলিশ ৷ চলছে ধরপাকড় ৷ আর সেই ভয়েই 'ঘর-ছাড়া' ওই তিন গ্রামের পুরুষরা ৷ গ্রামবাসীদের দাবি, প্রশাসনকে গ্রামে শান্তি ফিরিয়ে আনতে হবে ৷ এই পরিস্থিতিতে গ্রামে গিয়ে মহিলাদের সাহস জোগাচ্ছেন বিজেপি নেত্রী সম্পাদিকা গঙ্গোপাধ্যায় সরকার ৷

গত মঙ্গলবার তৃতীয় দফার নির্বাচনে ভোট বয়কট করেছিলেন রাধাকান্তপুর, রামকৃষ্ণপুর ও জগন্নাথপুর গ্রামের বাসিন্দারা ৷ রাধাকান্তপুর প্রাথমিক স্কুলের 122 নম্বর বুথের ভোটাররা ভোটের দিন সকাল থেকে কার্যত বুথ পাহারায় ছিলেন ৷ উদ্দেশ্য, যাতে কেউ ভোট না দেয় ৷ বিকেল নাগাদ বুথে আসেন হবিবপুরের বিডিও ৷ গ্রামবাসীদের অভিযোগ, খোদ বিডিও স্থানীয় এক তৃণমূল নেতা রঞ্জিত সরকারকে দিয়ে তিন বহিরাগতকে বুথে নিয়ে আসেন ৷ বিডিও ওই তিন মহিলাকে বুথে ঢুকিয়ে দেন বলেও অভিযোগ ৷ এরপরেই শুরু হয়ে যায় বিক্ষোভ ৷ গ্রামবাসীদের দাবি, বুথের সিসিটিভির ফুটেজ তাঁদের দেখাতে হবে ৷ পরিস্থিতি বেগতিক দেখে রণে ভঙ্গ দেন বিডিও ৷

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বুধবার থেকেই শুরু হয় পুলিশি ধরপাকড় ৷ পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এখনও পর্যন্ত 13 জন গ্রামবাসীকে আটক করা হয়েছে ৷ আপাতত তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে ৷ তবে পুলিশের ভয়ে ওই তিন গ্রাম কার্যত পুরুষ-শূন্য হয়ে পড়েছে ৷ এক গ্রামবাসী সবিতা বর্মন বলেন, “পুলিশের লাঠির ভয়ে শুধু পুরুষ নয়, মহিলারাও বাড়িতে থাকতে পারছে না ৷ এই গণ্ডগোলের জন্য একমাত্র বিডিও দায়ী ৷ তিনি বহিরাগতদের এনে এখানে ছাপ্পা ভোট করিয়েছেন ৷ আমরা এই অবস্থার বদল চাই ৷ আমাদের দাবি, বিডিওকে এখান থেকে অপসারিত করতে হবে আর ব্রিজ ও রাস্তার ব্যবস্থা করতে হবে ৷”

গাজোল পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেত্রী তথা বিজেপির মহিলা মোর্চার জেলা সাধারণ সম্পাদিকা গঙ্গোপাধ্যায় সরকার বলেন, “ভোট বয়কটকে কেন্দ্র করে এখানকার মহিলারা ভীত সন্ত্রস্ত ৷ সেদিন বিডিও ভুয়ো ভোটারদের নিয়ে এসে ভোট করিয়েছেন ৷ আমরা এই বিডিওর অপসারণ চাইছি ৷ রাজ্য সরকার কি এই এলাকাকে দ্বিতীয় সন্দেশখালি করতে চাইছে ? ধরপাকড়ের ভয়ে এলাকা এখন পুরুষ-শূন্য ৷ বাচ্চা নিয়ে অনেক মহিলাও পুলিশের ভয়ে গ্রাম ছেড়েছেন ৷ আমরা চাই, প্রশাসন মহিলাদের সুরক্ষিত রাখুক ৷ আর যে বিডিও, আইসি, এসডিও এই কাজ করেছেন, তাঁদের কঠোর শাস্তি হোক ৷ এই এলাকার মানুষ কি ব্রিজ আর রাস্তা চেয়ে অপরাধ করেছেন ? এই ঘটনায় অভিযুক্তদের শাস্তি না হলে আমরা আন্দোলনে নামব ৷”

এই ঘটনায় গ্রামবাসীরা যাঁকে মূল অভিযুক্ত করেছেন, সেই হবিবপুর ব্লকের বিডিও অংশুমান দত্তকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি ৷ তবে এবারই প্রথম নয়, পঞ্চায়েত ভোটে কারচুপির দায়ে এর আগে অংশুমানবাবুকে খোদ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার কাছে জবাবদিহি করতে হয়েছে বলে জানাচ্ছেন এলাকার মানুষজন ৷ দুর্ব্যবহার নিয়ে এলাকায় তাঁর বদনামও রয়েছে ৷ তবে শুধু অংশুমানবাবুই নন, গ্রামবাসীদের অভিযোগ নিয়ে মুখ খুলতে চাননি মহকুমাশাসক (সদর) পঙ্কজ তামাংও ৷

আরও পড়ুন

হাওড়ায় মেগা-সানডে, রবিবাসরীয় প্রচারে মোদি-মমতা

অধীর বনাম বাকি সবাই- বহরমপুরের লড়াইয়ে অন্যরা কার্যত উহ্য

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.