কলকাতা, 28 নভেম্বর: আরজি করের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও সরকারি হাসপাতালে ভেঙে পড়ল ফলস সিলিং । শহর কলকাতার অন্যতম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ঘটনা ৷ এসএসকেএম হাসপাতালের ভিতরে বাঙুর নিউরো সায়েন্সের যে বিভাগ রয়েছে, সেখানে এই ঘটনা ঘটেছে ।
বাঙুর নিউরো সায়েন্স বিল্ডিংয়ের একতলায় রয়েছে সিটি স্ক্যান ঘর । সেখানেই গতবছর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিটি স্ক্যান করা হয়েছিল । সেই ঘরেই আচমকা আজ ফলস সিলিং ভেঙে পড়ে । যার ফলে বড় সমস্যায় পড়েছেন ক্যানসার রোগীরাও । ওই ঘরেই তাঁদের যে মেডিক্যাল টেস্ট হয়, তা আপাতত বন্ধ রাখতে হচ্ছে ৷
হাসপাতালের ওই সিটি স্ক্যান ঘরে সিটি স্ক্যান ছাড়াও আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা করা হয় । ক্যানসার রোগীদের জন্য ওই ঘরে হয় সিটি গাইডেড বায়োপসি । যার রিপোর্ট দেখার পরই শুরু হয় ক্যানসারের চিকিৎসা । এই টেস্ট করার জন্য বহু রোগীকে হাসপাতালে ভর্তিও থাকতে হয় । ফলে এই ঘর ভেঙে পড়ায় সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে ক্যানসার আক্রান্ত রোগীদের ।
এই পরীক্ষা সরকারিভাবে একমাত্র বাঙুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরো সায়েন্সেই করানো হয় । প্রতি মঙ্গলবার এবং বৃহস্পতিবার এই পরীক্ষা হয় । এই ঘটনার ফলে আজ, বৃহস্পতিবার প্রায় 15 জনের এই মেডিক্যাল টেস্ট বাতিল হয়েছে । এছাড়াও আগামী মঙ্গলবার প্রায় 12 জনের এই পরীক্ষা বাতিল করতে হয়েছে । তবে সিটি স্ক্যান অন্যত্র করানোর ব্যবস্থা করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ৷
জুনিয়র চিকিৎসকরা তাঁদের 10 দফা দাবির মধ্যে বারবার বলেছেন স্বাস্থ্য ব্যবস্থার পরিকাঠামোর বিষয়টি । এরই মাঝে গত কয়েকদিনে একাধিক অব্যবস্থার ছবি উঠে আসছে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল থেকে । বৃহস্পতিবার আরও একবার সেই একই ছবিই দেখা গেল বাঙুর নিউরো সায়েন্সে ।
হাসপাতালের এক স্বাস্থ্যকর্মী জানান, "আমরা এখানেই কাজ করছিলাম ৷ কিছুক্ষণের জন্য বাইরে যাই । আচমকাই ভয়ানক একটা শব্দ শুনতে পাই । সিটি স্ক্যান ঘরে ঢুকে করে দেখি, ফলস সিলিং ভেঙে পড়ে আছে ।" তবে শুধু ওই ঘর নয়, পাশে তাঁদের রিপোর্ট লেখার যে ঘর রয়েছে, সেখানেও একই অবস্থা বলে জানান তিনি । এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কেউ ফোন তোলেননি ৷
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই একই ঘটনা ঘটেছিল আরজি কর হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে । সার্জারি বিভাগের ল্যাপরোস্কোপির যে ঘর রয়েছে, সেই ঘরের ফলস সিলিং ভেঙে পড়েছিল । যদিও সেই ঘর বহুদিন ধরেই বন্ধ ছিল । সারাইয়ের কথা থাকলেও তা হয়নি বলে জানিয়েছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা । বর্তমানে ফলস সিলিং ভেঙে পড়ায় সেই ঘর এখনও বন্ধই রয়েছে ।