কলকাতা, 13 জুন: লোকসভা ভোটে বাংলায় নজরকাড়া ফল করেছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস ৷ বিরোধী বিজেপি মাত্র 12টি আসন পেয়েছে, যা আগের থেকেও কম ৷ এদিকে প্রতিবেশী রাজ্য ওড়িশায় গেরুয়া ঝড়ে প্রায় ফিকে হয়ে গিয়েছে 24 বছরের বিজু জনতা দল বা বিজেডি জমানা ৷ এই শিক্ষা নিয়ে কাজ করার কথা জানিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় ৷
বুধবার তিনি চিকিৎসার কারণে সাময়িক রাজনীতি থেকে বিরতি নিচ্ছেন বলে ঘোষণা করেছেন ৷ এর মধ্যেই ঘনিষ্ঠ মহলে দলীয় নেতা-মন্ত্রী, জনপ্রতিনিধিদের জন্য কড়া বার্তা দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় ৷ এক্ষেত্রে তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, 'কাজ করো, নয়তো পদ ছাড়ো ৷'
ঘনিষ্ঠ মহলে অভিষেক জানিয়েছেন, পঞ্চায়েত, পৌরসভা থেকে মন্ত্রী- সব ক্ষেত্রেই এই নীতি গৃহীত হওয়া উচিত ৷ এক্ষেত্রে তাঁর সাফ বলেছেন, "নাম যত বড়ই হোক না কেন, পারফরম্যান্সই শেষ কথা বলবে ৷ কার্যক্ষেত্রে পারফর্ম করতে না পারলে সরে যেতে হবে ৷"
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ধরনের ভাবনা থেকে স্পষ্ট, সরকার এবং স্থানীয় প্রশাসনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দলের বিভিন্ন পদে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের কাজে তিনি খুশি নন ৷ আর এক্ষেত্রে আগামী দিনে তাঁদের সেই পদে থাকতে গেলে পারফরম্যান্সই যে শেষ অস্ত্র, তাও জানাতে ভোলেননি দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ৷ এক্ষেত্রে উদাহরণ হিসেবে সাম্প্রতিক ওড়িশা নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে এনেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার পর ওড়িশায় যেভাবে নবীন পট্টনায়ক সরকারের পতন হয়েছে, সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে এখানেও না ঘটে তার জন্য এখন থেকে সতর্কতা প্রয়োজন মনে করছেন তিনি ৷
2011 সাল থেকে তৃণমূল সরকার বাংলায় রয়েছে ৷ তাই সরকার বিরোধী একটা জায়গা তৈরি হওয়াকে খুব স্বাভাবিক প্রবণতা হিসাবে দেখছে তৃণমূলের একাংশ ৷ সেক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধিরা সঠিকভাবে পারফর্ম না করলে সংগঠন দিয়ে হার বাঁচানো যাবে না বলেও মনে করছে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব ৷ যদিও অভিষেকের এই ব্যাখ্যা সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী বা রাজ্যের কোনও মন্ত্রীকে লক্ষ্য করে নয় বলেও জানিয়েছেন তিনি ৷ সামগ্রিকভাবে দলের জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে ঘনিষ্ঠ মহলে এই বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলের সেনাপতি ৷
গত বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে নব জোয়ার যাত্রা করেছেন তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কম্যান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ এরপর লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে দীর্ঘদিন রাস্তায় মানুষের মাঝে থেকেছেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক ৷ তাঁর সেইসব অভিজ্ঞতা থেকে তিনি মনে করছেন, স্বাস্থ্য, জল এবং রাস্তা নিয়ে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কাজ করতে হবে ৷ এবার ভোটে দলীয় স্তরে সাংগঠনিকভাবে সাফল্য পাওয়া গিয়েছে ৷ তবে শুধু সংগঠন দিয়ে আগামীতে নির্বাচন জেতা যাবে না বলেও মনে করছে দলের একাংশ ৷