নবদ্বীপ, 11 জুলাই: নারকোটিক বিভাগ প্রচুর পরিমাণে বেআইনি মাদক বাজেয়াপ্ত করেছে মালয়েশিয়ায়। আর তাতে জড়িয়েছে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকের নাম। সিবিআই পরিচয় দিয়ে ভিডিয়ো কলিং করে চিকিৎসকের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ ৷ অ্যাকাউন্ট থেকে দেড় লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিল প্রতারকরা। এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার নবদ্বীপ মহেশগঞ্জে ৷
প্রতারণার ফাঁদে পড়েছেন মহেশগঞ্জ গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক গোবিন্দ গোপাল বিশ্বাস। চিকিৎসকের অভিযোগ, ঘটনার পর থেকে প্রতিনিয়ত আরও টাকা চেয়ে তাঁর কাছে ফোন আসছে। আর সেই টাকা দিলেই সিবিআইয়ের হাত থেকে এবং নারকোটিক বিভাগের বাজেয়াপ্ত করা জিনিসের মামলা থেকে সুরাহা মিলবে বলে দাবি করা হচ্ছে । ঘটনার পর চিকিৎসক গোবিন্দ গোপাল বিশ্বাস কৃষ্ণনগর সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ৷ পাশাপাশি নবদ্বীপ থানাতে একটি লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে পুলিশের তৎপরতায় তাঁর বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট এবং সমস্তরকম টাকার লেনদেন আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে চিকিৎসক গোবিন্দ গোপাল বিশ্বাস জানাচ্ছেন, সকাল সাড়ে নটা নাগাদ তাঁর কাছে ফোন আসে। তাতে বলা হয়, নারকোটিক বিভাগ প্রচুর পরিমাণ নেশাজাতীয় দ্রব্য বাজেয়াপ্ত করেছে। তাতে যোগসাজস রয়েছে এই চিকিৎসকের। এ কথা শোনার পর চিকিৎসক হতভম্ব হয়ে পড়েন। প্রতারকদের তরফে জানানো হয়, টাকা দিলে তবেই ওইসব অভিযোগ থেকে রেহাই পাবেন চিকিৎসক। শুধু তাই নয়, অসুস্থ বাবা এবং পরিবারের সামনে থেকে তাঁকে গ্রেফতার করার ভয়ও দেখানো হয় বলে দাবি চিকিৎসকের।
গোবিন্দ গোপাল বিশ্বাস বলেন, "আমাকে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে দিল্লিতে গিয়ে সিবিআই দফতরে দেখা করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এইরকমভাবে প্রবল চাপ সৃষ্টি করতে থাকে আমার উপর। আর সেই চাপ সহ্য না-করতে পেরে আমি আধার নাম্বার ও অ্যাকাউন্ট নাম্বার টাকা দিয়ে দিই ৷ আমার অ্যাকাউন্ট থেকে প্রথমে 1 লক্ষ, পরে আরও 50 হাজার টাকা ট্রান্সফার করা হয়। এরপর আরও টাকা দাবি করতে থাকায় আমি ভুল পিন নম্বর দিয়ে দিই। তখনই পেটিএম ব্লক হয়ে যায়।"
গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসকের কথায়, শুধুমাত্র সম্মানহানির কথা ভেবেই তিনি মস্ত বড় একটি ভুল করে ফেলেছেন। যখন তিনি বুঝতে পেরেছেন তাঁর সঙ্গে প্রতারণা হচ্ছে তড়িঘড়ি ছুটে আসেন নবদ্বীপ থানায়। চিকিৎসকের অভিযোগের ভিত্তিতে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে নবদ্বীপ থানার পুলিশ এবং সাইবার ক্রাইম শাখা কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলা। এর সঙ্গে বড় কোন চক্র জড়িয়ে আছে কি না, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ ।