ব্যারাকপুর, 29 জুলাই: আড়িয়াদহের ছায়া এবার বেলঘরিয়ায়। প্রতিবাদী কলেজ ছাত্রকে ক্লাবে ডেকে এনে আটকে রেখে মারধর করার অভিযোগ উঠল । মারধরের পাশাপাশি আক্রান্ত কলেজ ছাত্র এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের শাসানি দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে ক্লাব কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে কামারহাটি পৌরসভার 25 নম্বর ওয়ার্ডের দেশপ্রিয় নগরে ।
আক্রান্ত এবং অভিযুক্তরা সকলেই শাসকদল তৃণমূলের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গিয়েছে। এই ঘটনায় সোমবার পুলিশের দ্বারস্থ হন আক্রান্ত ছাত্রের পরিবার। বেলঘরিয়া থানায় দায়ের হয় অভিযোগও। যদিও এখনও পর্যন্ত অভিযুক্তদের কাউকেই গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। পুরো ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
আড়িয়াদহের জয়ন্ত সিংয়ের তালতলা স্পোটিং ক্লাবের 'তালিবানি' শাসন ঘিরে চর্চা চলছেই। ইতিমধ্যে সেই তালিবানি শাসনের মারকুটে ভিডিয়ো প্রকাশ্যেও এসেছে, যা দেখে শিউরে উঠেছেন সকলেই। আড়িয়াদহকাণ্ডের 'মাস্টারমাইন্ড' দাপুটে তৃণমূল কর্মী জয়ন্ত ও তাঁর দলবলের অনেকেই এখন জেলের গারদে। এ নিয়ে যখন পুলিশের তদন্ত প্রক্রিয়া জোরকদমে চলছে ঠিক তখনই বেলঘরিয়ার আরেক ক্লাবের বিরুদ্ধে উঠল মারধরের অভিযোগ। এর সঙ্গে হুবহু মিল রয়েছে জয়ন্ত'র তালতলা স্পোর্টিং ক্লাবের।
ঘটনার সূত্রপাত রথের দিন বন্ধুকে মারধর করার প্রতিবাদ ঘিরে। অভিযোগ, সেদিন মারধরের প্রতিবাদ করতে গিয়ে সায়ন্তন রায় নামে ওই কলেজ ছাত্র আক্রান্ত হন দেশপ্রিয় নগরের 'আদর্শপল্লী' ক্লাবের কয়েকজন সদস্যের হাতে। এরপরও সায়ন্তন'কে মারধর করা হয় গত 12 জুলাই। সেদিন ওই কলেজ ছাত্রকে ক্লাবে ডেকে এনে জোরজবরদস্তি মাদক খাইয়ে তাঁকে হকিস্টিক দিয়ে ক্লাব সদস্যরা মারধর করেন বলে অভিযোগ। রবিবারও একই কায়দায় অভিযুক্ত ক্লাব সদস্যদের হাতে আক্রান্ত হন কলেজ ছাত্র সায়ন্তন রায়। এরপর আক্রান্ত ছাত্রের পরিবারের লোকজন পুলিশের দ্বারস্থ হলে গোটা ঘটনাটি সামনে আসে।
এই বিষয়ে আক্রান্ত কলেজ ছাত্র সায়ন্তন রায় বলেন, "রথের দিন আমার বন্ধু অর্ণব পালকে মারধর করছিল ক্লাবের কয়েকজন সদস্য। তা দেখে প্রতিবাদ করাতেই যাবতীয় রোষ গিয়ে পড়ে আমার ওপর। ক্লাবে আটকে রেখে হকিস্টিক দিয়ে মারধর করা হয়। ঘটনার পর থেকে আতঙ্কিত পরিবারের লোকজন। আমি চাই, অপরাধীদের শাস্তি হোক।"
এদিকে, যাঁদের বিরুদ্ধে মারধরের এই গুরুতর অভিযোগ, সেই আদর্শপল্লী ক্লাবের সদস্য সৌরভ বিশ্বাস বলেন, "ওই কলেজ ছাত্রের বিরুদ্ধেই একাধিক অভিযোগ রয়েছে এলাকায়। নেশা করা থেকে এলাকায় ঝামেলা সবেতেই রয়েছে ও'র নামে অভিযোগ। আমাদের ক্লাবের মধ্যে কোনও দিনই এই ধরনের ঘটনা ঘটেনি। তাই, এনিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।"
অন্যদিকে, ঘটনার সঙ্গে তৃণমূল যোগের কথা অস্বীকার করেছেন বেলঘরিয়া শহর তৃণমূলের সভাপতি বিশ্বজিৎ সাহা। তাঁর কথায়, "যে কোনও ঘটনার সঙ্গে তৃণমূল দলকে জড়িয়ে দেওয়া ঠিক নয়। ক্লাবে আটকে রেখে মারধরের ঘটনা সম্পর্কে জানা নেই। শুনেছি এলাকার বাচ্চাদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। ওনারা নিজেরাই মিটিয়ে নেবে। তা না-হলে প্রশাসনই যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেবে।"
আড়িয়াদহকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রের খোঁজে 'জায়ান্ট' ও দুই শাগরেদকে জিজ্ঞাসাবাদ