কলকাতা, 6 মার্চ: সুন্দরবন রক্ষায় সাহায্য করল বিশ্ব ব্যাংক। সুন্দরবনকে বাঁচাতে বিশ্ব ব্যাংকের সাহায্য নিয়ে 4 হাজার 100 কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন দিল রাজ্য মন্ত্রিসভা। বুধবার নবান্নে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক ছিল। বৈঠক শেষে রাজ্যের তিন মন্ত্রী শশী পাঁজা, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং বঙ্কিম হাজরা সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। সেখানেই রাজ্য সরকারের তরফ থেকে এই নয়া প্রকল্প অনুমোদনের কথা ঘোষণা করা হয়।
রাজ্যের মন্ত্রী পাঁজা জানান, সুন্দরবনের বাসিন্দাদের জীবন ও জীবিকা রক্ষার জন্য রাজ্যের সেচ ও জলপথ দফতর দ্বারা প্রস্তাবিত 4 হাজার 100 কোটি টাকার প্রকল্প বুধবার রাজ্য মন্ত্রিসভা অনুমোদন করেছে ৷ 70:30 অনুপাতে বিশ্বব্যাংক এবং রাজ্য সরকার যৌথভাবে এই প্রকল্পের খরচ বহন করবে। এখানেই শেষ নয়, তিনি আরও জানিয়েছেন, 'এসএইচওআরই' নামের এই প্রকল্পটি শুরু হবে 2025-26 থেকে। চলবে 2029-30 পর্যন্ত। সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের মানুষের জীবনজীবিকা অনেকটাই নদী নির্ভর ৷ যেহেতু এই মুহূর্তে নদীভাঙন সুন্দরবনের একটা বড় চিন্তার কারণ ৷
ইউনেসকোর হেরিটেজ স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সুন্দরবনকে বাঁচাতে এই প্রকল্প অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেছেন রাজ্যের মন্ত্রী। তিনি এও জানিয়েছেন, এই প্রকল্প রূপায়ণের জন্য রাজ্যের খরচ হবে 1 হাজার 230 কোটি টাকা। ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের তরফ থেকে 39টি দ্বীপকে চিহ্নিত করা হয়েছে ৷ উল্লেখ্য, প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে সাম্প্রতিক নদীভাঙন সুন্দরবনের বৈচিত্র্য ধ্বংসের মুখে। নদীবাঁধ ভেঙে এই এলাকাগুলিতে প্লাবন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে ৷ এর ফলেই বহু কৃষি জমিতে নোনা জল ঢুকে পড়ছে। আর মানুষের জীবনধারণ কঠিন হয়ে পড়ছে।
শশী পাঁজা বলেন, "মূলত এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্য সরকারের লক্ষ্য হবে 50 শতাংশ বাঁধকে রক্ষা করা।" তিনি আরও বলেন, "আমরা কৃষি, উদ্যানপালন, মৎস্যপালন, প্রাণী সম্পদ উন্নয়ন এবং ইকো ট্যুরিজমের জন্য জলবায়ু সহনশীল প্রকল্প নিয়ে আসব। কৃষি বিপণন, পঞ্চায়েত, সেচ ও জলপথ, সুন্দরবন বিষয়ক রাজ্য সরকারের দফতরগুলিকে এই বিষয়গুলি নিয়ে তাদের ডিপিআর জমা করতে বলা হয়েছে।" এদিন সাংবাদিক সম্মেলন থেকে সুন্দরবনকে উপেক্ষা করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকেও এক হাত নিয়েছেন শশী পাঁজা।
তিনি বলেন, "একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ সুন্দরবনকে আঘাত করলেও কেন্দ্র প্রয়োজনীয় তহবিল দেয়নি। আর তার ফল এই মুহূর্তে ভোগ করতে হচ্ছে সুন্দরবনের মানুষকে।" প্রসঙ্গত, এই মুহূর্তে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকায় 50 লক্ষ মানুষের বসবাস রয়েছে। মূলত তাঁদের জীবনজীবিকার সুব্যবস্থা করতেই এই প্রকল্পের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন: