বারাবনি, 3 এপ্রিল: লোকে তাকে ছোট বলে। তবে ছোট সে নয় ৷ বয়স মাত্র তিন বছর । আর এই বয়সেই অনেকের থেকে অনেক বেশি গুণের অধিকারী আসানসোলের বারাবনির বাসিন্দা অনুরাগ মণ্ডল ৷ মুখস্ত গায়ত্রী মন্ত্র থেকে শুরু করে গীতার শ্লোক ও মহা মৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র । আধো আধো স্বরে কঠিন সংস্কৃত উচ্চারণেও টানা বলে দিতে পারে এগুলি সে ৷ সঙ্গে পৃথিবীর সমস্ত দেশের রাজধানীর নাম, রাসায়নিক মৌল থেকে শুরু করে ফল, ফুল, পাখি, রঙের নামও ঠোঁটস্থ তাঁর ৷ ছোট বয়সেই এই প্রতিভার অধিকারী হওয়ায় অনুরাগকে স্বীকৃতি দিয়েছে ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস ।
আসানসোলের বারাবনি ব্লকের পানুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত দাসকেয়ারি গ্রামের বাসিন্দা অনুরাগ মণ্ডল । বাবা কাঞ্চন মণ্ডল পেশায় সিভিক ভলেন্টিয়ার। মা রীতা পঞ্চায়েতের সাধারণ কর্মী । অনুরাগের বয়স বর্তমানে তিন বছর । এক মাস হল সে গ্রামেরই একটি নার্সারি স্কুলে ভরতি হয়েছে । কিন্তু নার্সারি স্কুলে ভরতি হওয়ার অনেক আগে থেকেই তার বাবা মা লক্ষ্য করে অনুরাগ অদ্ভুত স্মৃতিশক্তির অধিকারী । একবার শুনে সমস্ত কিছু মনে রাখতে পারে । আর তাই তারপর থেকেই তার মা ও বাবা তাকে ধর্মীয় শ্লোক থেকে শুরু করে রাসায়নিক মৌল, দেশের রাজধানী-সহ আরও নানান কঠিন সমস্ত জিনিস পড়াতে শুরু করেন । আশ্চর্যভাবে অনুরাগও সবকিছু মুখস্ত বলে দিতে পারে অবলীলায় ।
শুধু তাই নয়, তার আধো আধো কথায় সংস্কৃত উচ্চারণও স্পষ্ট ধরা দিয়েছে । অনুরাগ গায়ত্রী মন্ত্র, মহা মৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র-সহ বেদের আরো নানান সংস্কৃত মন্ত্র মুখস্ত বলে দিতে পারে । এছাড়াও গীতার অনেক শ্লোক তার ঠোঁটস্থ । এর পাশাপাশি অনুরাগ বিভিন্ন মৌলের নাম বলতে পারে । পৃথিবীর সব দেশের রাজধানী তার ঠোঁটস্থ । এছাড়াও ছবি দেখে সে ফল,ফুল, পাখি সব বলে দিতে পারে ।
বিস্ময়কর শিশুদের ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস স্বীকৃতি দেয় এমন কথা শুনতে পেয়েছিলেন মা রিতা মণ্ডল । তারপরে তিনি অনলাইনে আবেদন করেছিলেন ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসের কাছে । ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস অনুরাগের বেশ কয়েকটি ভিডিয়ো চায় এবং তারপর তারা নিশ্চিত হয়ে স্বীকৃতি ও শংসাপত্র পাঠিয়েছে । অনুরাগের দাদু বলেন, "বাবা-মায়ের চেষ্টাতে অনুরাগ এই সব শিখেছে । তবে অনুরাগের স্মৃতিশক্তি দারুণ ৷ যা শোনে, যা দেখে তা একবার দেখেই মনে রাখতে পারে ।" অন্যদিকে, অনুরাগের এই সাফল্য থেকে খুশি প্রতিবেশী থেকে শুরু করে গ্রামের মানুষজন। অনুরাগের বাবা-মা জানিয়েছেন, আগামিদিনে বড় ও ভালো মানুষ করতে চান অনুরাগকে । অন্য কোনও আর স্বপ্ন নেই । অযথা পড়ার চাপ দিয়ে অনুরাগের পড়ার আনন্দকে নষ্ট করতে চান না বাবা-মা । তাই তাঁরা চাইছেন পাঠ্য পুস্তকের পড়ার বাইরেও অনুরাগ আরও নানান বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করুক ।
আরও পড়ুন: