মুর্শিদাবাদ, 8 মে: কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবেই কেটেছে রাজ্যের তৃতীয় দফার লোকসভা নির্বাচন । এমনকি, মুর্শিদাবাদ ও মালদার দীর্ঘদিনের ইতিহাসকে একেবারে নস্যাৎ করে রক্তপাতহীন নির্বাচন দেখল রাজ্যে । তবে তথ্য বলছে, গত 40 বছরের নিরিখে এই লোকসভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদ ও দুই মালদা মিলিয়ে ভোটদানের হার অনেকটাই কম ।
বিধানসভা নির্বাচন হোক বা লোকসভা নির্বাচন ৷ 2004 সালে ডি লিমিটেশন হওয়ার আগের মালদা এবং তারপরে দুই মালদা, মুর্শিদাবাদ ও জঙ্গিপুর মিলিয়ে ভোটদানের হার বরাবরই থেকেছে 80 থেকে 81 শতাংশের আশেপাশে । নির্বাচন কমিশন থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এইবার এই চার কেন্দ্র মিলিয়ে ভোটদানের হার 77 থেকে 78 শতাংশ । 2019 ও 2014 সালের লোকসভা নির্বাচনে এই চার কেন্দ্রে ভোটার 'টার্ন আউট' ছিল 81.66 ও 81.85 শতাংশ । অথচ বেশ গুরুত্বপূর্নভাবে এই লোকসভা নির্বাচনে এই সংখ্যা চার শতাংশ কমে গিয়ে দাঁড়িয়েছে 77.53 শতাংশে ।
ইতিহাসের পাতা উল্টালে দেখা যাবে, মুর্শিদাবাদ ও মালদায় প্রত্যেক নির্বাচনে অশান্তি হওয়া সত্ত্বেও ভোটদানের হারে থাকে অনেকটাই । তবে সংখ্যাতথ্যের নিরিখে মুর্শিদাবাদের এবারের ভোটার টার্ন আউট বিশ্লেষণ করলে দেখা যাচ্ছে, গত 1980 লোকসভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদের ভোটার টার্ন আউট ছিল 80.31 শতাংশ । অন্যদিকে, জঙ্গিপুরের এবারের ভোটার টার্ন আউট হয়েছে 75.72 শতাংশ । জঙ্গিপুরের ক্ষেত্রেও এবছরের ভোটার টার্ন আউট অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেকটাই কম ।
মালদা দক্ষিণে 76.69 শতাংশ এবং মালদা উত্তরে ভোট পড়েছে 76.03 শতাংশ । অথচ 1980 সালে অর্থাৎ আজ থেকে 40 বছর আগে ডিলিমিটেশনের পূর্বে মালদার ভোট শতাংশ ছিল 75.54 । যদিও এই বার নির্বাচনের অনেক আগে থেকেই মালদা এবং মুর্শিদাবাদকে নিয়ে বেশ কিছুটা বেকায়দায় পড়েছিল নির্বাচন কমিশন । তবে অবশেষে শান্তিপূর্ণ এবং নির্ঝঞ্ঝাটে নির্বাচন শেষ করাতে পেরে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কার্যালয় সমস্ত আধিকারিক ও নির্বাচনী আধিকারিকদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ জাতীয় নির্বাচন কমিশন ।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানানো হয়েছে, নির্বিঘ্নে এবং রক্তপাতহীন নির্বাচন করাতে একাধিক পদক্ষেপ নিয়ে ছিল নির্বাচন কমিশন ৷ সেজন্যেই শান্তিপূর্ণ হয়েছে তৃতীয় দফার ভোটাভুটি । অন্যদিকে, এবার ভোটার তালিকা তৈরি করার ক্ষেত্রেও বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছিল । ভোটার তালিকা থেকে ভুয়ো ভোটারদের নাম সরানো থেকে শুরু করে মৃত ব্যক্তিদের নাম বাদ দেওয়ার কাজের উপরে জোর দেওয়া হয় । এই ধরনের একাধিক অনিয়ম প্রথম থেকেই আটকানো গিয়েছে বলেই ভোটার সংখ্যা অনেকটা কমেছে ।
ওয়াকিবহল মহলের মতে, বহু মানুষ জন চাকরি সূত্রে অন্যত্র চলে গিয়েছেন ৷ তাই অনেকটা কমেছে ভোটারের সংখ্যা । আবার একাংশের মতে, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের তুলনা বিচার করে এবারের ভোট থেকে বিরত থেকেছেন অনেকেই । পাশাপাশি ওয়েট কাস্টিং এবং সিসিটিভি ইনস্টলেশন-এর মাধ্যমে ছাপ্পা ভোটের মতো অসাধু বিষয়গুলিকে আটকানো গিয়েছে ।
আরও পড়ুন: