তারকেশ্বর, 1 জুলাই: ফের চোর সন্দেহে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল হুগলির তারকেশ্বরে ৷ এর আগে পাণ্ডুয়াতে একই ঘটনার অভিযোগ উঠেছিল ৷ ওই যুবককে যে চোর সন্দেহে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয়েছে বলে দাবি পরিবার। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে তারকেশ্বর থানার নাইটা মালপাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের রানাবাঁধ এলাকায় ৷ যদিও হুগলির পাণ্ডুয়া, কলকাতা-সহ একাধিক জায়গায় পিটিয়ে খুনের অভিযোগে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন এলাকায় গণপিটুনির বিরুদ্ধে প্রচার অভিযান চলছে, তা সত্ত্বেও এই ধরনের ঘটনা ঘটেই চলেছে।
মৃত যুবকের নাম বিশ্বজিৎ মান্না (23)। পেশায় তিনি গাড়িচালক। রবিবার রাতে তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর করে প্রতিবেশী বিকাশ সামন্ত ও তার ছেলে দেবকান্ত সামন্ত। হুগলি গ্রামীণ পুলিশ সুপার কামনাসিস সেনকে ফোনে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, "চোর সন্দেহে মারধর করা হয়েছে। পুলিশ দু'জনকে গ্রেফতার করেছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তারকেশ্বর থানার নাইটা মালপাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের রানাবাঁধ এলাকার বাসিন্দা বিশ্বজিৎ মান্না। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে সপরিবারে এই গ্রামেই থাকত। পরিবারের অভিযোগ, প্রতিবেশী তথা আত্মীয় বিকাশ সামন্তের বাড়ি থেকে রবিবার সন্ধ্যায় 50 হাজার টাকা চুরি যায়। এরপরই রাত 11টা নাগাদ বাবা বিকাশ ছেলে দেবকান্ত সামন্ত বিশ্বজিৎকে বাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। চুরি যাওয়া টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য দাবি করে। চোর সন্দেহের বসে বেধড়ক মারধর করা হয় বিশ্বজিৎকে।
রাস্তায় ফেলে পিভিসি পাইপ ও লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। মারের চোটে জ্ঞান হারান বিশ্বজিৎ। মৃত বিশ্বজিতের মায়ের অভিযোগ, ছেলেকে মারধর করতে দেখায় আটকাতে গেলে তাঁকেও মারধর করে তারা। ছেলে চুরি করেনি বলে ছেড়ে দেওয়ার আর্জি জানালেও তাঁকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে বেধড়ক মারের চোটে জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়লে রাত দু'টো নাগাদ তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বিশ্বজিৎকে। কিন্তু চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনায় অভিযুক্ত বিকাশ সামন্ত ও তার ছেলে দেবকান্ত সামন্তকে গ্রেফতার করেছে তারকেশ্বর থানার পুলিশ ৷
মৃত বিশ্বজিতের মা রুমা মান্নার দাবি, ছেলে চুরি করেনি। মিথ্যা অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। ওদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি ৷ বিশ্বজিতের দাদা অভিজিৎ বলেন, "যারা মারধর করেছে তারা আমাদের আত্মীয়। আমরা শাস্তি চাই ৷"