মুম্বই, 13 এপ্রিল: রবিবার সন্ধ্যায় আইপিএল 2024-এর 'এল-ক্লাসিকো' আরব সাগরের পাড়ে ৷ যেখানে প্রথমবার মহেন্দ্র সিং ধোনি চেন্নাই সুপার কিংসের জার্সিতে নামছেন নন-ক্যাপ্টেনের ভূমিকায় ৷ যা আইপিএলের আরও একটি ঐতিহাসিক মুহূর্তে হতে চলেছে ৷ যেখানে পাঁচটি ট্রফি জয়ী মুম্বই ইন্ডিয়ান্স এবং চেন্নাই সুপার কিংসের অধিনায়করা ময়দানে নামবেন ৷ কিন্তু, অধিনায়ক হিসেবে নন ৷ রোহিত শর্মা এবং এম এস ধোনির এই হাইভোল্টেজ দ্বৈরথে কোথায় দাঁড়িয়ে দুই দল ৷ দেখে নেওয়া যাক ৷
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স তাদের আইপিএলের রীতি বজায় রেখেছে ৷ নতুন অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়ার নেতৃত্বে প্রথম তিন ম্যাচে হার দিয়ে সিজন শুরু করেছিল মুম্বই ৷ কিন্তু, শেষ দুই ম্যাচে দিল্লি ক্যাপিটালস এবং রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে দাপুটে জয় পেয়েছে মুম্বই পলটনরা ৷ কিন্তু, যতটা স্বাভাবিক সবকিছু মনে হচ্ছে, মুম্বই শিবিরে সব ততটাও স্বাভাবিক নয় ৷ অধিনায়ক হার্দিক এবং হেড কোচ মার্ক বাউচারের চিন্তা দলের বোলিং ৷ একমাত্র জসপ্রীত বুমরাকে ছাড়া ৷
মুম্বই পলটনদের বোলিং পুরোটাই জসপ্রীত বুমরা কেন্দ্রীক হয়ে রয়েছে ৷ যেদিন বুমরা উইকেট পাবেন না, সেদিন ফের সানরাইজার্স ম্যাচের মতো আড়াই শোর উপর রান ওঠা সময়ের অপেক্ষা ৷ যার হাতেগরম উদাহরণ বৃহস্পতিবারের আরসিবি ম্যাচ ৷ যেখানে বিরাট কোহলি ব্যর্থতা ও বুমরার পাঁচ উইকেটের পরেও হতশ্রী রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু 196 রান তুলে দিয়েছিল ৷ আর বল হাতে জেরাল্ড কোয়েটজে, আকাশ মাধওয়াল, রোমারিও শেপার্ড এবং হার্দিক পান্ডিয়া গড়ে 12.17 রান প্রতি ওভার দিয়েছেন ৷ ফলে সিএসকের মতো শক্তিশালী ব্যাটিংয়ের সামনে বড় পরীক্ষা হতে চলেছে এমআই বোলিং লাইনআপের৷
তবে, মুম্বইয়ের সবচেয়ে বড় শক্তি তাদের 'হেভি-ব্যাটিং' ৷ ওপেনিংয়ে রোহিত শর্মা এবং ঈশান কিষাণ শুরুটা দূরন্ত করছেন ৷ সেই সঙ্গে কামব্যাকের পর তিননম্বরে সূর্যকুমার যাদবও রানে ফিরেছেন ৷ মিডল ও লোয়ার-মিডল অর্ডারে হার্দিক, তীলক বর্মা, টিম ডেভিড এবং রোমারিও শেপার্ড দ্রুত রান তুলছেন ৷ বিশেষত, ওয়াংখেড়ের ব্যাটিং উইকেটে ৷ ফলে এই ম্যাচে মুম্বইয়ের ভরসা তাদের ব্যাটিং ৷
তবে, চিন্তা সিএসকের জন্য কম নেই ৷ ঘরের মাঠে স্লো উইকেট বানিয়ে কেকেআরের পিঞ্চ-হিটারদের আটকে দিলেও, ওয়াংখেড়ের গতি ও বাউন্সে ভরা পিচে তা অসম্ভব ৷ ফলে তুষার দেশপান্ডে, মুস্তাফিজুর রহমান, শার্দূল ঠাকুরদের বাঁচার রাস্তা নেই ৷ বিশেষত, বাংলাদেশের তারকা পেসার মুস্তাফিজুরের ক্ষেত্রে ৷ তাঁর বোলিংয়ের প্রধান অস্ত্র স্লোয়ার লেগ-কাটার ৷ ওয়াংখেড়ের ছোট্ট মাঠে সেই কাটার বাউন্ডারির বাইরে পাঠাতে তৈরি থাকবেন ঈশান এবং স্কাই ৷ সঙ্গে স্লগ-ওভারে ওয়াইডের বন্যা ৷
সিএসকের একমাত্র অস্ত্র উইকেটের পিছনে থাকা ধোনির মগজাস্ত্র ৷ যা প্রতি ম্যাচেই ব্যবহার করতে হচ্ছে অধিনায়ক ঋতুরাজ গায়কোয়াড়কে ৷ কিন্তু, মাঠ ও পিচের চরিত্র যা সেখানে ধোনির মগজাস্ত্র কতটা কাজে দেবে, তা নিয়ে সংশয় অবশ্য়ই রয়েছে ৷ তবে, এমআইয়ের মতো চেন্নাইয়ের বড় আশা তাদের ব্যাটিং ৷ বিশেষত, গত তিন ম্যাচে ব্যর্থ কিউয়ি ওপেনার রাচিন রবীন্দ্র ৷ ওয়াংখেড়ের গতি ও বাউন্সকে ব্যবহার করে মুম্বইয়ের উইকেটে তাঁর রানে ফেরা খুবই জরুরি সিএসকের জন্য ৷ ঋতুরাজ নিজেও ফর্মে রয়েছেন ৷ মিডল-অর্ডারে ডারেল মিচেল এবং শিবম দুবেও রানের মধ্যে আছেন ৷
অজিঙ্ক রাহানে ঘরের মাঠে গতবার বিধ্বংসী হয়ে উঠেছিলেন মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে ৷ তাঁর ব্যাটেও রানের খোঁজে রয়েছে চেন্নাই ৷ সঙ্গে লোয়ার-অর্ডারে রবীন্দ্র জাদেজা এবং মহেন্দ্র সিং ধোনি তো রয়েছেনই ৷ বিশেষ করে গতবছর থেকে আইপিএলের নতুন সংযোজন ইম্প্যাক্ট-সাব সিএসকের ব্যাটিং-অর্ডারকে মজবুত করেছে ৷ মোটের উপর রবিবাসরীয় ওয়াংখেড়েতে ধোনি-রোহিত দ্বৈরথের মঞ্চে আরও একটি 'রান-ফেস্ট' অপেক্ষা করছে ক্রিকেট প্রেমীদের জন্য ৷
আরও পড়ুন: